খাতুনগঞ্জে পচা পেঁয়াজের স্তূপ

শুল্ক প্রত্যাহারের জেরে পাইকারিতে দামও নিম্নমুখী

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৮ অক্টোবর, ২০২১ at ৭:৩৬ পূর্বাহ্ণ

পেঁয়াজে সয়লাব খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজার। তবে অধিকাংশ দোকান ও গুদামের সামনে এখন দেখা মিলছে পচা পেঁয়াজের স্তূপ। এসব পেঁয়াজের গন্ধে পথচারীরা নাক চেপে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতীয় পেঁয়াজের পাশাপাশি বাজারে এসেছে মিয়ানমারের পেঁয়াজ। তবে মিয়ানমারের পেঁয়াজ কাঠের ট্রলারে করে আসার পথে অর্ধেকের বেশি পচে যায়। বর্তমানে মিয়ানমারের পেঁয়াজ প্রতি কেজিতে ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত লোকসান দিতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এদিকে পচে যাওয়া পেঁয়াজ ভ্রাম্যমাণ অনেক ফেরিওয়ালা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তারা এসব রোদে শুকিয়ে ভ্যানগাড়িতে করে বিক্রি করছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পচা পেঁয়াজের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায়। তাই এসব পেঁয়াজ খেলে খাদ্যে বিষক্রিয়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে পেঁয়াজের সরবরাহে ঘাটতি নেই। চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত পেঁয়াজ এসেছে বলে দামও নিম্নমুখী। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভারতীয় ও মিয়ানমারের পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ৫ টাকা। বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজ মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা থেকে শুরু করে ৫২ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ২০ টাকা থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। তবে মিয়ানমারের যেসব পেঁয়াজ এসেছে এরমধ্যে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশই নিম্নমানের।
গতকাল খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দোকান ও গুদামের সামনে পচা পেঁয়াজের বস্তা স্তূপ করে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। কিছু পেঁয়াজ আবার নালায়ও পড়ছে। এসব পেঁয়াজ কিনতে ভ্যানগাড়ি নিয়ে এসেছেন ফেরিওয়ালারা। তারা এসব পেঁয়াজ রাস্তার ধারে রোদে শুকিয়ে মোটামুটি মানের পেঁয়াজগুলো আলাদা করে বস্তায় ভরছেন। কয়েকজন আড়তদারকেও একই কাজ করতে দেখা গেছে।
খাতুনগঞ্জে মোবারক হোসেন নামের একজন ফেরিওয়ালা জানান, পচা পেঁয়াজের বস্তায় অনেক ভালো পেঁয়াজও পাওয়া যায়। তাই আমরা ১০ টাকা কেজিতে এসব পেঁয়াজ কিনে বিভিন্ন অলিগলির হোটেলে বিক্রি করছি। ৫০ কেজি পেঁয়াজের মধ্যে বাছাই করে ২০ কেজির মতো পাচ্ছি।
হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস দৈনিক আজাদীকে বলেন, বর্তমানে পেঁয়াজের বাজার নিম্নমুখী। বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে। এরমধ্যে মিয়ানমার থেকে নিম্নমানের পেঁয়াজ আসায় ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে আমদানিমূল্যের অর্ধেক দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং বিক্রি কমে যাওয়ায় দোকান ও গুদামে পচে গেছে। পচা পেঁয়াজের সংস্পর্শে ভালো পেঁয়াজটিও নষ্ট হয়ে যায়। পেঁয়াজ পচনশীল চাইলেই গুদামে বেশিদিন রাখা যায় না। এখন যে পরিমাণ গরম পড়ছে আলো বাতাস প্রবেশ করতে না পারায় বস্তার স্তূপের মধ্যে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টোবর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে, আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পেঁয়াজের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। আগে পেঁয়াজ আমদানিতে ব্যবসায়ীদের ৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হতো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআরেক দফা ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব
পরবর্তী নিবন্ধদিনে মনোনয়ন জমা, রাতে নিজ বাড়িতে খুন