সাম্প্রতিক দু’টি আলোচিত ইস্যু নিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ঘটনা দু’টির ব্যাখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষমা প্রার্থনাও করেছেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
গত বৃহস্পতিবার ভারতে যাওয়ার পথে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে সাকিব এক ভক্তের মোবাইল ফোন ছুঁড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ উঠে। কোলকাতায় গিয়ে সাকিব কালীপূজা উদ্বোধন করেছেন বলে খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু মানুষের প্রবল সমালোচনার শিকার হন তিনি। বিডিনিউজ
ফোন ভাঙার ঘটনা নিয়ে বেনাপোলের বাসিন্দা মোহাম্মদ সেক্টর সেদিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “আমি সাকিব আল হাসানের একজন ভক্ত। সামনাসামনি কখনও দেখিনি। বেনাপোল চেকপোস্টে তাকে দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারিনি। তার সাথে একটি সেলফি চাওয়া কি আমার অপরাধ? তিনি আমার ফোনটি উগ্র মেজাজে কেড়ে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেন। এতে আমার ফোনটি ভেঙে নষ্ট হয়ে গেছে।”
সাকিব সোমবার সন্ধ্যায় ইউটিউব ভিডিওতে দাবি করেন, ইচ্ছে করে তিনি ফোন ভাঙেননি।
তিনি বলেন, “দু’টি বিষয় ক্লিয়ার করার জন্য আপনাদের উদ্দেশে এই ভিডিওটি করা। প্রথমটি, ফোন ভাঙা নিয়ে। যার ফোন ভাঙা নিয়ে কথা হচ্ছে, তার ফোন কখনোই আমি ইচ্ছাকৃতভাবে (ইন্টেনশনালি) ভাঙিনি। যেহেতু করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছিলাম আমি, নিজেকে কীভাবে নিরাপদ রেখে চলাফেরা করা যায়, সেটিই চেষ্টা করছিলাম। যেহেতু অনেক মানুষ ছিল সেখানে, সবাই চেষ্টা করছিল ছবি তুলতে। আমিও চেষ্টা করছিলাম কীভাবে তাদের কাছে না গিয়ে আমার কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারি, ইমিগ্রেশনের। একজন উৎসুক জনতা আমার শরীরের উপর এসে ছবি তুলতে যায়। আমি তাকে সরিয়ে দিতে গেলে তার হাতের সঙ্গে আমার হাত লাগে এবং তার ফোনটি পড়ে যায়। হয়তো পরে ভেঙেও গিয়েছে। তার ফোন ভাঙার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত কিন্তু আমার মনে হয়, তারও সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত ছিল।”
“দ্বিতীয় যে ঘটনাটি, অবশ্যই খুবই সেনসিটিভ। প্রথমেই আমি বলতে চাই, নিজেকে আমি একজন গর্বিত মুসলমান হিসেবে মনে করি এবং সেটাই পালন করার চেষ্টা করি। ভুল-ত্রুটি হবেই এবং ভুল-ত্রুটি নিয়েই আমরা জীবনে চলাচল করি। আমার কোনো ভুল হয়ে থাকলে অবশ্যই আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আপনাদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে সেজন্যও ক্ষমা প্রার্থনা করছি।”
ভিডিওতে সাকিব জানালেন, তিনি অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়ার আগেই পূজার উদ্বোধন হয়েছে। সেখানে তার উপস্থিতির সময়টুকুর বর্ণনা দিয়ে ক্ষমা চাইলেন বারংবার।
“এখানে নিউজ বা মিডিয়া বা সোশ্যাল মিডিয়ায় এসেছে আমি পুজার উদ্বোধন করতে গিয়েছি। যেটি আমি আসলে কখনো যাইওনি কিংবা করিওনি। এটির প্রমাণ আপনারা অবশ্যই পাবেন। অনেক সাংবাদিক ভাই-বোনেরাই ওখানে ছিলেন, আমন্ত্রিত হিসেবে। কিংবা কার্ড দেখলে, সেখানে লেখাও আছে কে উদ্বোধন করেছে।”
“পুজার উদ্বোধন আমি কখনোই করিনি এবং সচেতন মুসলমান হিসেবে আমি করব না। তারপরও হতো ওখানে যাওয়াটাই আমার ঠিক হয়নি। সেটা যদি আপনারা মনে করে থাকেন তাহলে আমি অবশ্যই আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। আমি মনে করি, আপনারা এটাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ভবিষ্যতে এরকম ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সেটির চেষ্টা করব।”
ভিডিওটি দেখার জন্য ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/189380067805645/videos/1875273922613261