ক্রমান্বয়ে বাড়ছে দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য

আগের তুলনায় বেড়েছে কন্টেনার হ্যান্ডলিং

হাসান আকবর | বৃহস্পতিবার , ৬ এপ্রিল, ২০২৩ at ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

প্রত্যাশিত গতিতে না হলেও দেশের আমদানিরপ্তানি বাণিজ্য ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। বৈদেশিক বাণিজ্যে গতিশীলতা সৃষ্টির ফলে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামেও বাড়ছে কন্টেনার হ্যান্ডলিংসহ অন্যান্য কার্যক্রম। ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ, ডলার সংকটসহ বৈশ্বিক সংকটে এক বছরের ব্যবধানে বৈদেশিক বাণিজ্য প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছিল। ক্রমাগত কমতে থাকা আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম গত মাস থেকে বাড়তে শুরু করেছে। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে বৈদেশিক বাণিজ্যে কমে যাওয়া অংশীদারিত্ব বাংলাদেশ ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি অর্থনীতিতেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দরে গত বছর ৩১ লাখ টিইইউএস এর মতো কন্টেনার হ্যন্ডলিং করে। এর আগের বছর কন্টেনার হ্যান্ডলিং এর পরিমাণ ছিল ৩২ লাখ ১৪ হাজার টিইইউএস। ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধসহ বৈশ্বিক সংকটের কারণে ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে কন্টেনার হ্যান্ডলিং ১ লাখেরও বেশি কমে গেলেও চট্টগ্রাম বন্দর থ্রি মিলিয়ন’স ক্লাবের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু চলতি বছর পরিস্থিতি অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় ভয়াবহ আকার ধারণ করে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য কমে যাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেনার হ্যান্ডলিং এর বেশ কমে যায়।

চলতি বছরের শুরুতে পরিস্থিতি এত নাজুক হয়ে উঠেছিল যে চট্টগ্রাম বন্দর থ্রি মিলিয়নস ক্লাব থেকে ছিটকে পড়ার শংকা প্রকাশ করা হয়েছিল। আমদানি রপ্তানি কমে যাওয়ায় বাড়ছিল এমটি (খালি) কন্টেনারের সংখ্যা। অবশ্য মার্চ মাস থেকে পরিস্থিতি কিছুটা পাল্টাতে শুরু করেছে। স্বাভাবিক সময়ের মতো গতিশীল না হলে দেশে আমদানি রপ্তানি কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে।

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গতকাল প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে যে, সদ্য সমাপ্ত মার্চ মাসে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে ৯৮ হাজার ৭৩৬ টিইইউএস কন্টেনার পণ্য আমদানি হয়েছে। যা আগের মাস অর্থাৎ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৭৭ হাজার ৮৪১ টিইইউএস। তবে যা গত বছরের মার্চ মাসের তুলনায় অনেক কম। গত বছর মার্চ মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্য বোঝাই কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়েছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯ টিইইউএস। একইভাবে মার্চ মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৫৫ হাজার ১৬০ টিইইউএস। আগের মাসে যার পরিমান ছিল ৫৬ হাজার ২২৪ টিইইউএস। তবে ২০২২ সালের মার্চে পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ৭৬ হাজার ১৬৬ টিইইউএস। গত মার্চে আমদানি পণ্যের সাথে এমটি কন্টেনার আনা হয়েছে ৯ হাজার ৫৫৬টিইইউএস। গত ফেব্রুয়ারিতে যার পরিমান ছিল ১০ হাজার ১২৫ টিইইউএস। গত বছরের মার্চে যার পরিমান ছিল ২ হাজার ১শ’ টিইইউস। একইভাবে গত মাসে রপ্তানি পণ্যের সাথে খালি কন্টেনার পাঠানো হয়েছে ৩৮ হাজার ৫২৪ টিইইউএস। যা আগের মাসে ছিল ২৩ হাজার ৮৮৪ টিইইউএস। গত বছর যার পরিমান ছিল ৪৪ হাজার ৩৬২ টিইইউএস।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে হয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৪২ টিইইউএস কন্টেনার। ফেব্রুয়ারি মাসে তা কমে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭৪ টিইইউএস কন্টেনারে নেমে যায়। মার্চে এসে তা আবার বৃদ্ধি পেয়ে ২ লাখ ১ হাজার ৯৭৬ টিইইউএস এ উন্নীত হয়েছে। বৈশ্বিক সংকটে ধ্বসে পড়া আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য ক্রমান্বয়ে বাড়বে বলেও সূত্র আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দেশের আমদানি রপ্তানি দুটোই কমেছে। তবে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য ঘুরে দাঁড়ানোর যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তা অব্যাহত রাখা গেলে বন্দরসহ দেশের অর্থনীতি বড় সংকট থেকে রক্ষা পাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বিমানবন্দরে যাত্রীর কাছ থেকে ৩ কেজি স্বর্ণের চালান আটক
পরবর্তী নিবন্ধচমেক ছাত্রাবাসে আরো এক ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ