ক্যাবল কারে বিনামূল্যে ভ্রমণে শিশু-কিশোরদের ভিড়

রাঙ্গুনিয়ার শেখ রাসেল এভিয়ারি অ্যান্ড ইকোপার্ক

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ২৪ অক্টোবর, ২০২৩ at ৭:০৯ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়ায় শেখ রাসেল এভিয়ারী অ্যান্ড ইকোপার্কে রয়েছে দেশের দীর্ঘতম ক্যাবল কার। আকর্ষণীয় এই ক্যাবল কারে এবার বিনামূল্যে ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছেন শিশুকিশোররা। এমনকি দুস্থঅসহায় থেকে বিভিন্ন স্তরের দর্শনার্থীরাও ক্যাবল কারে ভ্রমণ করতে দেখা গেছে। শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে পার্ক কর্তৃপক্ষ শুক্র ও শনিবার বিনামূল্যে ক্যাবল কারে ভ্রমণের ঘোষণা দেয়। মূলত এই ঘোষণার পর থেকেই শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পার্কে দর্শনার্থীরা ভিড় করে। এতে দীর্ঘদিন পর প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ এই এভিয়ারি পার্কে। এক দশক আগে চালু হওয়া এই পার্কটির ক্যাবল কার রাইড দীর্ঘ দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর নতুনভাবে চালু হয়, যেটির উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।

রাঙ্গুনিয়ার নোয়াগাও এলাকা থেকে শিশুদের নিয়ে বেড়াতে এসেছিলেন মো. জাফর নামে এক প্রবাসী। তিনি শিশুকিশোরদের এই সুযোগ করে দেয়ায় তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। রাউজানের নোয়াপাড়া থেকে স্ত্রীসন্তান নিয়ে বেড়াতে এসেছিলেন চাকরিজীবী হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ক্যাবল কারে চড়ার জন্য ইতিপূর্বে এসে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে। সম্প্রতি এটি চালুর পর আসার জন্য পরিকল্পনা করছিলাম। এর মধ্যে পার্ক কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দেয়ার পর পরিবারের সবাইকে নিয়ে চলে এলাম। খুব ভালো লাগছে।

জানা যায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের কোদালা বিটের চন্দ্রঘোনা ও দক্ষিণ নিশ্চিন্তাপুরের প্রায় ২১০ হেক্টর অর্থাৎ ৫২০ একর বনভূমি নিয়ে শেখ রাসেল এভিয়ারি অ্যান্ড ইকো পার্ক স্থাপিত হয়েছিল। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কাপ্তাই সড়ক সংলগ্ন এই পার্কটি ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন, যার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় ২০১০ সালের ৭ আগস্ট। পার্কের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ বাংলাদেশের প্রথম রোপওয়ে ক্যাবলকার যা ২ দশমিক ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ। উঁচুনিচু পাহাড়ের মাঝপথ দিয়ে বয়ে গেছে এ ক্যাবল কার। আরও দুই কিলোমিটার কেবল কার স্থাপন করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এটি বাস্তবায়ন হলে ক্যাবল কারে চড়ে পার্কের একদিক থেকে উঠে পুরো পার্ক প্রদক্ষিণ করে অন্যদিকে এসে নামা যাবে।

পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. নাহিদ হাসান বলেন, শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে দুইদিনব্যাপী এই আয়োজন শুক্রবার (২০ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়েছে, চলবে শনিবার বিকাল পর্যন্ত। সকাল থেকেই এতিম শিশুকিশোর, স্কুলমাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ পার্কে এসে ভিড় করেন। একদিনেই অন্তত ৫০০ পর্যটক বিনামূল্যে এই ক্যাবল কারে ভ্রমণ করেছেন। পার্কটিকে বিশ্বমানের পর্যটন স্পটে রূপ দিতে আরও বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বজন কুমার তালুকদার বলেন, দেশে এতো দীর্ঘ ক্যাবল কার আর নেই। এতো বড় এভিয়ারীও আর কোথাও নেই। এই পার্কে শিশুদের জন্য এমন আয়োজন করায় আমার ব্যক্তিগতভাবে খুব ভালো লাগছে। বিশ্বমানে এই পর্যটন কেন্দ্রে দেশিবিদেশি পর্যটকরা আসবেন এবং উপভোগ করার জন্য আমি আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় পুকুরে ডুবে দশ দিনে ৩ শিশুর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম লেখিকা সংঘের শরৎকালীন সাহিত্যাসর