কোরবানিতে মসলার দাম না বাড়ার ইঙ্গিত ব্যবসায়ীদের

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে মজুদ পর্যাপ্ত

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৩ জুন, ২০২১ at ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ

কোরবানি ঈদের বাকি আছে আর এক মাস। সাধারণত সময় যতই ঘনিয়ে আসে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে মসলার বাজার। ভোক্তাদের অভিযোগ, কোরবানির সময় স্বাভাবিকভাবে মরিচ, হলুদ, ধনিয়া, দারচিনি, এলাচের মতো মসলার চাহিদা বেড়ে যায় বলে একশ্রেণির ব্যবসায়ী দাম বৃদ্ধি করে থাকেন। তবে এবার খাতুনগঞ্জের একাধিক ব্যবসায়ী আসছে কোরবানির ঈদে মসলার দাম বাড়বে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। গত বছরের এই সময়ের তুলনায় বর্তমানে মসলার দাম ৩০ শতাংশ কম রয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে মসলার বাজারে দরপতন হওয়ায় আমদানি হয়েছেও পর্যাপ্ত। এছাড়া করোনাকালীন লকডাউনের কারণে বিয়ে এবং বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পরিমাণ একেবারে কমে গেছে। ফলে মসলার চাহিদাও বর্তমানে খুব একটা নেই। তাই এখন যে পরিমাণ মসলার মজুদ আছে আগামী মাসের কোরবানির ঈদে দাম বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
গতকাল চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীল রয়েছে সাধারণ মসলা এবং গরম মসলার বাজার। বর্তমানে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৯০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকায়। গত বছরের এই সময়ের সেই এলাচের দাম ছিল ৩ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায়। গোল মরিচ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৪০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা। গত বছর ছিল ৫০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা। দারচিনি মানভেদে ২৭০ টাকা থেকে ২৭০ টাকা। গত বছর বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকা থেকে ৩১০ টাকায়। লবঙ্গ বর্তমানে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা, গত বছর বিক্রি হয়েছে এক হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়। অন্যদিকে সাধারণ মসলার মধ্যে প্রতি কেজি ধনিয়া বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ৯০ টাকা, দেশী হলুদ ৯০ টাকা থেকে ৯৫ টাকা, দেশী মরিচ ১০০ টাকা থেকে ১০৫ টাকা এবং ভারতীয় মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা।
খাতুনগঞ্জের কয়েকজন আড়তদার জানান, আমাদের দেশে প্রায় সব ধরণের মসলা আমদানি করতে হয়। স্বাভাবিকভাবে কোরবানির সময় মসলার চাহিদা বেড়ে যায়। তাই অনেক সময় বাজারে সংকট দেখা দেয়। তবে এ বছরের চিত্র ভিন্ন। করোনার প্রকোপ বাড়ার কারণে একে তো অনুষ্ঠান বন্ধ, তার ওপর আন্তর্জাতিক বাজারে মসলার দামও কমে গেছে। যে সকল সামাজিক অনুষ্ঠান হচ্ছে তা অত্যন্ত সীমিত পরিসরে। ফলে রান্নার অত্যাবশকীয় উপাদান মসলার ব্যবহারও কমে গেছে। ইতোমধ্যে আগামী কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে আমদানিকারকরা প্রচুর পরিমাণে মসলা আমদানি করেছেন। ফলে বর্তমানে পাইকারি বাজারে মসলার পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে।
জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের মসলা আমদানিকারক এবি ট্রেডার্সের অমর কান্তি দাশ দৈনিক আজাদীকে বলেন, করোনার কারণে মসলা ব্যবসায়ীরা খুব বেশি লোকসানে আছেন। দীর্ঘদিন ধরে বেচাবিক্রি এক প্রকার থমকে আছে। এখন মসলার দাম অনেক কম। আগামী কোরবানির ঈদের সময় দাম এরকমই থাকবে। বাড়ার সম্ভাবনা দেখছি না।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এহসান উল্লাহ জাহেদী বলেন, মসলার বাজার গত বছরের তুলনায় অনেক কম। এছাড়া আমদানিও পর্যাপ্ত হয়েছে। আগামী কোরবানি ঈদের আগে দাম বাড়বে মনে হচ্ছে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভারী বৃষ্টিতে কাপ্তাইয়ে পাহাড় ধসের শঙ্কা
পরবর্তী নিবন্ধরেল স্টেশনগুলোতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি স্থাপনের সুপারিশ