কোভিডের টিকা কেনা এবং মহামারীকালে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাজেট সহায়তায় ভর করে চলতি ২০২১–২২ অর্থবছরের প্রথমার্ধে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের অর্থছাড় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়েছে। দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে ৪১৭ কোটি ৫৯ লাখ ডলারের ঋণ ও অনুদান এসেছে। অর্থছাড়ের এ পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১১৭ কোটি ৪৭ লাখ ডলার বেশি। খবর বিডিনিউজের।
২০২০–২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে মোট বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান ছাড় হয়েছিল ৩০০ কোটি ১২ লাখ ডলার। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে ঋণ ও অনুদানের অর্থছাড়ের পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগী, দাতা সংস্থা ও দেশের প্রতিশ্রুতির তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে। এ সময়ে প্রতিশ্রুতিতেও উল্লম্ফন হয়েছে বলে প্রতিবেদনে দেখা গেছে। গেল ছয় মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে নতুন করে ৪৩০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। প্রতিশ্রুতির এ পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৯০ কোটি ডলার বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ২৪০ কোটি ডলারের ঋণ ও অনুদান সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিলেছিল।
এ বিষয়ে ইআরডির এক কর্মকর্তা জানান, ছয় মাসের হিসাবে বাংলাদেশের অনুকূলে সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক সহায়তা ছাড় হয়েছে এবার। গত ছয় মাসে বিশ্বব্যাংক ও এডিবিসহ বড় উন্নয়ন সহযোগী ও সংস্থাগুলো কোভিড– ১৯ মহামারীর টিকা কেনার জন্য প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড় করেছে। এছাড়া এ সময়ে দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাজেট সহায়তাসহ যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেই অর্থও ছাড় করেছে, যোগ করেন তিনি। মূলত এ দুই কারণেই চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্থ ছাড়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি
হয়েছে বলে জানান তিনি। চলতি অর্থবছরে সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ৮৮ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ের লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করেছে। গত ২০২০–২১ অর্থবছর ৭২১ কোটি ২০ লাখ ডলারের বৈদেশিক ঋণ সহায়তার অর্থ ছাড় হয়েছিল, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৯–২০ অর্থবছরে ৭৪০ কোটি ডলারের রেকর্ড ছাড় হয়েছিল।
এদিকে চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে পুঞ্জিভূত পাওনা থেকে সরকার উন্নয়ন সহযোগী ও সংস্থাগুলোকে মোট ১০৪ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে। এরমধ্যে আসল হিসাবে ৭৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং ২৫ কোটি ৯৩ লাখ ডলার পরিশোধ করা হয়েছে সুদ হিসেবে। গত অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিশোধ করা হয়েছিল ৯০ কোটি ডলার।