ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতকে সাবেক মার্কিন পারমাণবিক আলোচক রবার্ট ম্যালি ‘বিস্ফোরিত বারুদের স্তূপ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই উত্তেজনা সহজে থামবে না, বরং আরও বিপজ্জনক পথে এগোতে পারে।’ খবর বাংলানিউজের।
বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রবার্ট ম্যালি বলেন, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের (বিশেষত ট্রাম্প প্রশাসনের) মধ্যে যে পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা ছিল, সেটিও এখন অনিশ্চিত হয়ে গেছে।
ওমানে রোববার ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইসরায়েলের সামপ্রতিক হামলার পর ইরান আলোচনাকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মধ্যস্থতাকারী দেশ ওমান নিশ্চিত করেছে, এই বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। ম্যালি বলেন, ইরানিরা মনে করছে, এটি ছিল ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের একটি যৌথ কৌশল। তারা ইরানকে এই ধারণা দিতে চেয়েছিল যে হামলা হবে না, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হামলা করেই বসেছে।
গত দুদিনে ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে ইস্পাহানের ইউরেনিয়াম রূপান্তর কেন্দ্র ও জ্বালানি পাত তৈরির কারখানাসহ চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।
তবে রবার্ট ম্যালির মতে, এসব হামলার পরেও ইরান এখনো গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক জ্ঞান ও সক্ষমতা ধরে রেখেছে। তিনি বলেন, এই সক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস করা সম্ভব নয়, এবং ইরান ভবিষ্যতেও তা কাজে লাগাতে পারবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মুহূর্তে ইরান–ইসরায়েল সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যকে একটি অস্থিতিশীল ও বিপজ্জনক অবস্থানে এনে দাঁড় করিয়েছে। দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি হামলার হুমকি দিচ্ছে, এবং শান্তিপূর্ণ আলোচনার পথ ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তারা এখনো পারমাণবিক আলোচনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে বাস্তবতা বলছে, সেই আলোচনায় ফেরা এখন অনেক দূরের বিষয়।
ইরান ও ইসরায়েলের সংঘাতে বিভিন্ন দেশ দুই পক্ষে ভাগ হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলায় সহযোগিতা করার কথা অস্বীকার করলেও তারা ইসরায়েলকে রক্ষা করার কথা বলে আসছে। এদিকে যুক্তরাজ্য মধ্যপ্রাচ্যে আরও যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে।