কে এই আখতারুজ্জামান, যার ভাড়া করা ফ্ল্যাটে খুন হন এমপি আনার

| বৃহস্পতিবার , ২৩ মে, ২০২৪ at ৭:৩৭ পূর্বাহ্ণ

কলকাতার নিউ টাউনে যে ফ্ল্যাটে ঝিনাইদহের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার খুন হয়েছেন বলে পুলিশের ধারণা, সেটি ভাড়া নিয়েছিলেন আখতারুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। বাংলাদেশে এ বিষয়ে তদন্তে থাকা একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, এই আখতারুজ্জামানের বাড়ি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে, এলাকায় তিনি শাহীন মিয়া নামে পরিচিত। তার ভাই কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র সহিদুজ্জামান। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল বুধবার বিকেলে ফ্ল্যাটটি পরিদর্শন শেষে কলকাতার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির আইজি অখিলেশ চতুর্বেদী। এসময় তিনি বলেন, যে ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্য আনারকে খুন করা হয়েছে, সেই ফ্ল্যাটের মালিক সন্দ্বীপ রায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মচারী। ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন আখতারুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তবে আখতারুজ্জামান এখনো ধরা পড়েননি। ভারত থেকে নেপাল হয়ে এরইমধ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন বলে খবর পেয়েছে ঢাকার পুলিশ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর থানার ওসি সৈয়দ আল মামুন বলেন, আপনার মত আমিও শুনেছি যে মেয়র সাহেবের ভাই শাহীন মিয়ার পুরো নাম আখতারুজ্জামান। তবে আমাদের কাছে তার বিরুদ্ধে আগের কোনো অভিযোগ নেই বা কোনো ডকুমেন্ট নেই।

কোটচাঁদপুরের মেয়র সহিদুজ্জামানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ওর পুরো নাম আখতারুজ্জামান। ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। ওর পরিবার সেখানে থাকে। ও নিজেও সেখানে থাকে। এক সপ্তাহ আগে ও বাড়ি এসেছিল। বাড়ি থেকে আক্তারুজ্জামান কোথায় গেছেন জানতে চাইলে মেয়র বলেন, সেটা আমি জানি না। তিনি ভারতে গেছেন কী না জানতে চাইলে মেয়র বলেন, যেতে পারে।

কলকাতায় আখতারুজ্জামানের কোনো ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়া আছে কি না প্রশ্ন করলে তার ভাই সহিদুজ্জামান বলেন, ঠিক ভাড়া না, পরিচিত একজনের ফ্ল্যাট ও মাঝে মাঝে গিয়ে থাকত। কলকাতার পুলিশ বলছে, যে ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্য আনার খুন হয়েছেন, সেটি আখতারুজ্জামান ভাড়া নিয়েছিলেন; সে বিষয়ে কিছু জানেন কি নাএই প্রশ্নে মেয়র বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই।

এদিকে আনোয়ারুল আজীম আনার খুন হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়ার কথা বললেও মৃতদেহের কোনো হদিস এখনও মেলেনি। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাননি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। লাশ উদ্ধার না করে কীভাবে এমপি আনারকে হত্যার বিষয়ে নিশ্চিত হচ্ছেন এমন প্রশ্ন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা অখিলেশ চতুর্বেদীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন সেদেশের সাংবাদিকরা। তখন তিনি বলেন, আমাদের কাছে ইনপুট আছে।

কলকাতার পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সংবাদ প্রতিদিন লিখেছে, ১৩ মে নিউ টাউনের ওই বাসায় শ্বাসরোধে খুন করা হয় আনারকে। পরে টুকরো টুকরো করে কাটা হয় দেহ। ১৬ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত তিন দিন ধরে দেহের অংশগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। তবে সেগুলো কোথায় ফেলা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

লাশ টুকরো টুকরো করে সরিয়ে ফেলার ওই তথ্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সে রকমই কথা আছে, সেটা আমরাও শুনছি। সব জানি না, এখনো কলকাতা পুলিশ কাজ করছে।

যার ভাড়া করা বাসায় আনার খুন হয়েছেন বলা হচ্ছে, সেই আখতারুজ্জামানের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে সব কিছু বলা হবে। আমি সব বলে দিয়েছি, এখন আমরা ফারদার আর কিছু বলব না। আমাদের কাছে সব নিউজ আছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফেরার পথে তুষার ঝড়ের কবলে পড়েছিলাম
পরবর্তী নিবন্ধএমপি আনারের লাশ কেটে লাগেজে ভরে বাইরে নেন তিনজন