কৃষি জমির মাটি কাটার মহোৎসব

হুমকিতে পরিবেশ

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ৬ এপ্রিল, ২০২১ at ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুণ্ড কৃষি জমির মাটি কেটে বিক্রি করতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে পরিবেশ বিধ্বংসী একটি মহল। উপজেলার সৈয়দপুর, বাড়বকুণ্ড, মুরাদপুর, কুমিরা পৌরসভাসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে আবাদি কৃষি জমি, খাল, সরকারি খাস জমি ও পাহাড়ের মাটি কেটে বিক্রির মহোৎসব চলছে। মৌসুমি ব্যবসার মতোই প্রতিযোগিতা দিয়ে স্কেভেটর লাগিয়ে দিন রাত কাটা হচ্ছে কৃষি জমির মাটি। আর এসব মাটি ড্রাম ট্রাক যোগে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ইট ভাটা ও ফ্যাক্টরিতে। পুকুর ভরাট, ভিটা নির্মাণ, নিচু জায়গা ভরাট, সরকারি খাস জায়গা দখলেও ব্যবহৃত হচ্ছে এসব কৃষি জমির মাটি। প্রতিদিন শতশত ট্রাক মাটি কাটার ফলে ঐসব এলাকার কৃষি জমিগুলো এখন বিশাল বিশাল দীঘিতে রূপ নিয়েছে। মাটি কাটার ফলে একদিকে যেমন কৃষি জমি কমছে অন্যদিকে মাটির ট্রাক চলাচলের ফলে দীর্ঘ পথের কৃষি জমি নষ্ট হচ্ছে। তবে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রি করা হলেও মাটি খেকোরা ধরা ছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে। এভাবে একটানা একই এলাকাজুড়ে মাটি কাটায় এলাকার সাধারণ মানুষের মনে ব্যাপক ক্ষোভ জমেছে। তবে মাটি খেকোরা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি।
দেখা গেছে, সীতাকুণ্ড উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের ব্রিক ফিল্ড এলাকার দক্ষিণ পাশের কৃষি জমিতে বড় বড় স্কেভেটর দিয়ে দিনরাত কাটা হচ্ছে মাটি। প্রতিদিন শতশত ট্রাক মাটি এই এলাকা থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অন্যত্র। এসব মাটি ট্রাক প্রতি ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে। মাটি কেটে বিশাল দীঘি করা হলেও নেওয়া হয়নি উপজেলা প্রশাসন বা পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন অনুমতি। আইনের তোয়াক্কা না করে চব্বিশ ঘণ্টা চলছে মাটি কাটার মহোৎসব। পরিবেশ ধ্বংস ও কৃষি জমিকে পুকুরে পরিণত করে নিয়মিত নিজেদের পকেট ভারি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে এসব চক্র। একই অবস্থা উপজেলার বাড়বকুণ্ডের নতুনপাড়া, মান্দারিটোলা, মুরাদপুর ইউনিয়নের ভাটেরখীল, কুমিরা ইউনিয়নের কাজি পাড়া ও পৌরসভার পন্থিছিলা কসাই খানা সংলগ্ন বিল, টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ সংলগ্ন বিল এবং ৬নং ওয়ার্ডস্থ মহাদেবপুর পাহাড়ের পাদদেশ। এলাকাবাসী জানান, মাটি কেটে কৃষি জমিতে পুকুর কাটার হিড়িক লেগেছে। মাটির ট্রাকগুলো আমাদের আবাদি জমি নষ্ট করছে। এভাবে ট্রাক চলাচলের ফলে জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয়রা আরো জানান, শুধু কৃষি জমি নয় খাল থেকে, সড়কের পাশ, সরকারি খাস জমি কিছুই রেহাই পাচ্ছেনা মাটি খেকোদের দৃষ্টি থেকে। এভাবে অবৈধভাবে মাটি কাটায় যারা তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, মাটি কাটার বিষয়টি আমি শুনেছি, এভাবে মাটি কাটার কোন বৈধতা নেই। এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগুলবাগ আবাসিক এলাকা সমাজ কল্যাণ সমিতির আলোচনা সভা
পরবর্তী নিবন্ধরাউজানে জনসচেতনা সৃষ্টিতে মাঠে প্রশাসনের সাথে জনপ্রতিনিধিরা