কুমিল্লা কারাগারে ২ জনের ফাঁসি আজ

চট্টগ্রামের রেলওয়ে কর্মচারী শফিউদ্দিন হত্যা

| মঙ্গলবার , ৮ মার্চ, ২০২২ at ৭:১৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে রেলওয়ে কর্মচারী শফিউদ্দিন হত্যা মামলায় দণ্ডিত দুই জনের ফাঁসি কার্যকর হবে আজ মঙ্গলবার কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে। গতকাল সোমবার কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ জানান, মঙ্গলবার রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হবে। এরা হলেন শিপন হাওলাদার ও নাইমুল ইসলাম ইমন। তারা কুমিল্লা কারাগারে রয়েছেন। খবর বিডিনিউজের। শাহজাহান আহমেদ জানান, এরই মধ্যে উভয় আসামির পরিবারের লোকজন তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং মঙ্গলবার সকালে আবার শেষ দেখা করবেন। রাতে উভয়ের ফাঁসি কার্যকর হবে। এরপর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
নিহত শফিউদ্দিন বাংলাদেশ রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী-১ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০০৩ সালের ১৪ জুন চট্টগ্রাম নগরীর খুলশীর উত্তর আমবাগান রেলওয়ে কোয়ার্টারের ৩৬/এ বাসায় বাসায় ঢুকে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

দণ্ডিত শিপন হাওলাদার নগরীর খুলশীর দক্ষিণ আমবাগানের প্রয়াত ইউনুছ হাওলাদারের ছেলে। তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার নন্দনসার গ্রামে। নাইমুল ইসলাম ইমন নগরীর লালখানবাজার ডেবারপাড় এলাকার ঈদুন মিয়া সরকারের ছেলে। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার রতনপুর পূর্বপাড়ায়।
মামলার নথি ও কুমিল্লা কারাগারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী-১ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী ছিলেন শফিউদ্দিন। এ ছাড়া তিনি স্থানীয় রেলওয়ে আমবাগান এলাকার আইনশৃংখলা রক্ষা কমিটির আহ্বায়কও ছিলেন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধাদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মদ, জুয়া ও রেলওয়ের অবৈধ সম্পদ দখলের প্রতিবাদে সোচ্চার থাকার কারণে রেলওয়ের জায়গা থেকে চার দফায় অবৈধ বস্তি ও কলোনি উচ্ছেদ করতে বাধ্য হয় প্রশাসন। এসব ঘটনার জের ধরে একদল লোক তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ২০০৩ সালের ১৪ জুন একদল লোক তার সরকারি বাসায় ঢুকে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে শফিউদ্দিনকে।এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মাহমুদা বেগম বাদী হয়ে খুলশী থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০০৪ সালের ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২৩ জনের সাক্ষ্য নিয়ে এ হত্যা মামলায় শিপন ও ইমনকে ফাঁসি, সাত আসামিকে যাবজ্জীবন এবং চারজনকে খালাস দেয়।

গতকাল সন্ধ্যায় কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. আসাদুর রহমান বলেন, ২০০৪ সাল থেকেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই আসামি কারাগারে রয়েছেন। প্রায় তিন বছর আগে তাদের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি বলেন, সাজার বিরুদ্ধে আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করেছিলেন। পরে পুনর্বিবেচনাও খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। সর্বশেষ চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করা হয়; সেটিও খারিজ হয়ে যায়।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ আরও বলেন, উচ্চ আদালতে ফাঁসির সাজা বহাল রাখা এবং রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে কারাবিধি অনুসারে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হয়। এছাড়া কারাবিধি অনুসারে অন্যান্য আরও কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফাঁসি কার্যকর করা হচ্ছে। ফাঁসি কার্যকর করার জন্য আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটেকসই আগামীর জন্য চাই জেন্ডার সমতা
পরবর্তী নিবন্ধরেলের প্রকৌশলীসহ আহত ৮