কুমারেশ ঘোষ : বাংলা সাহিত্যে রসসাহিত্য স্রষ্টা

| শনিবার , ৩০ এপ্রিল, ২০২২ at ৮:০৪ পূর্বাহ্ণ

কুমারেশ ঘোষ। কবি, গল্পকার ও ঔপন্যাসিক। তাঁর সাহিত্যধারার প্রধান বৈশিষ্ট্য রঙ্গব্যঙ্গ। তাই বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে রসসাহিত্য স্রষ্টা হিসেবেই তাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি। তিনি ১৯১৩ সালের ২১ জানুয়ারি যশোরের মথুরাপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা যশোহরের চিরুনি ও ওরিয়েন্টাল মেশিনারি প্রা. লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মন্মথনাথ ঘোষ (১৮৮২১৯৪৪) এবং মাতা কুষ্টিয়ার প্রখ্যাত উকিল রাইচরণ দাসের একমাত্র কন্যা সরলাবালা দেবী। কুমারেশের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় রাচিতে তার দাদামশাই মতিলাল দত্তের কাছে। এরপর তিনি কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিটের মডার্ন স্কুলে ভর্তি হন। শেষে দমদম জংশনের বয়েজ হোম স্কুল থেকে ১৯৩১ সালে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ১৯৩৩ সালে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে আইএসসি পাস করেন। ১৯৩৬ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েট হন। তাঁর একক সম্পাদনায় দীর্ঘ তেতাল্লিশ বছর প্রায়নিয়মিত প্রকাশিত হয়েছিল রসসাহিত্য পত্রিকা ‘যষ্টিমধু’। এছাড়াও তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছে ‘ত্রিপর্ণা’, ‘উত্তরভারতী’ ও ‘সম্মার্জনী’ পত্রিকাত্রয়। কুমারেশ ঘোষ রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘নীল ঢেউ সাদা ফেনা’, ‘বিনোদিনী বোর্ডিং হাউস’, ‘অবনী সরকারের বউ এবং’, ‘পণ্যা’, ‘স্বামী পালন পদ্ধতি’, ‘এক বর অনেক কনে’, ‘সরস রুশ গল্প’, ‘যদি গদি পাই’, ‘হরেকরকম্বা’, ‘রঙ্গপ্রিয় শ্রীচৈতন্য’, ‘সবুজ রাশিয়ায়’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ‘চারণকবি মুকুন্দ দাস’ নামে একটি নাটক এবং ‘সেই আমি’ নামে একখানা আত্মজীবনী লিখেছেন তিনি। সংস্কৃত থেকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন মনুসংহিতা। সম্পাদনাও করেছেন একাধিক গ্রন্থ।

ব্যক্তিজীবনে ভ্রমণপ্রিয় কুমারেশ রাশিয়া, জাপান এবং মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের নানা দেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন। স্বনামের পাশাপাশি ‘কুশ’, ‘.ডি, কুমারস্বামী’, ‘শ্রী চোখাচোখ’, ‘অষ্টচক্র’ এমনই একাধিক ছদ্মনামে লিখতেন। ‘সরস রুশ গল্প’ বইটির জন্য ১৯৮৫ সালে কুমারেশ সোভিয়েত ল্যান্ড নেহরু পুরস্কার এবং শিশুতোষ গ্রন্থ ‘হরেকরকম্বা’র জন্যে ১৯৯০ সালে শিশুসাহিত্যে ভারতীয় জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৯৫ সালের ৩০ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধঈদের খুশী