কি ছু জা না কি ছু অ জা না

প্রবীর বড়ুয়া | বুধবার , ১৬ নভেম্বর, ২০২২ at ৮:৩৭ পূর্বাহ্ণ

  • বিশ্বকাপ ফুটবলের ২২তম আসর কাতার বিশ্বকাপ শুরু হবে ২০ নভেম্বর আর চলবে ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত।
  • এবারের কাতার বিশ্বকাপে প্রতি গ্রুপে ৪টি করে ৮টি গ্রুপে অংশ নিচ্ছে মোট ৩২টি দল তবে আগামী ২০২৬ সাল থেকে এ সংখ্যা হয়ে যাবে ৪৮। এবারে ম্যাচ হবে ৬৪টি।
  • কাতার বিশ্বকাপের বলের নাম ‘আল রিহলা’। এটি তৈরি করেছে ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস। আরবী শব্দ আল রিহলা-র অর্থ দ্য জার্নি অর্থাৎ যাত্রা।
  • এই বিশ্বকাপ ফুটবলের ম্যাসকটের নাম রাখা হয়েছে ‘লায়িব’। আরবী এই শব্দের অর্থ হলো দারুণ দক্ষ খেলোয়াড়। সাদা রঙের কাতারি পোশাক পরা কিশোরের আদলে তৈরি লায়িবের সামনে রয়েছে একটি বল।
  • এই বিশ্বকাপ মধ্যপ্রাচ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রথমবারের মতো আর শীতকালেও প্রথম কারণ বিশ্বকাপ ফুটবল সচরাচর অনুষ্ঠিত হয় বছরের মাঝামাঝি সময় কিন্তু কাতারের প্রচণ্ড গরমের কারণে এবার সময়টা পাল্টাতে হয়েছে।
  • কাতার বিশ্বকাপ হবে সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিশ্বকাপ কারণ বিশ্বকাপ উপলক্ষে কাতার খরচ করছে ২০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ।
  • সাম্প্রতিক বিশ্বকাপগুলোর তুলনায় সবচেয়ে কম ৮টি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচগুলো যে স্টেডিয়ামগুলোর মধ্যে শুধু একটিকে সম্পূর্ণ সংস্কার করে প্রস্তুত করা হয়েছে আর নতুন করে তৈরি করা হয়েছে বাকি ৭টি। সবগুলো স্টেডিয়ামই সম্পূর্ণ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসে যা সর্বপ্রথম। ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনা মাত্র ৬টি স্টেডিয়াম নিয়ে ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল।
  • অন্য যেকোনো বিশ্বকাপের চেয়ে এবারের বিশ্বকাপের টিকেট হবে অনেক দামি। কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালের সবচেয়ে দামি টিকেটটির মূল্য ৫,৮৫০ কাতারি রিয়াল যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের চেয়ে এটি শতকরা ৪৬ ভাগ বেশি। আর সবচেয়ে কম দামি টিকেটটি হবে ৬২ হাজার টাকার মতো। উদ্বোধনী খেলার টিকেটের দাম শুরু হবে সাড়ে ৩৬ হাজার টাকায়। গ্রুপ ম্যাচগুলোর সবচেয়ে কম দামি টিকেটটি কিনতে বিদেশীদের গুনতে হবে ৭ হাজার টাকা আর কাতারের নাগরিকরা ডিসকাউন্ট মূল্যে এটি পাবেন মাত্র সাড়ে ৯ শত টাকায়।
  • বিশ্বকাপ আয়োজক দেশগুলোর মধ্যে কাতার সবচেয়ে ছোট দেশ। কাতারের সবগুলো স্টেডিয়াম ৫৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে অবস্থিত। একটি স্টেডিয়াম থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী আরেকটি স্টেডিয়ামের দূরত্ব মাত্র ৯০ মাইল আর এই স্টেডিয়াম দু’টি হলো আল বেইত এবং আল ওয়াকরাহ। দর্শকরা এবারের বিশ্বকাপে একইদিনে একটির বেশি খেলা দেখারও সুযোগ পাবেন কারণ এক স্টেডিয়াম থেকে আরেক স্টেডিয়ামে যেতে গাড়িতে সময় লাগবে সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টা।
  • প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর বসেছিল ১৯৩০ সালে উরুগুয়েতে। সেই বছর চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল উরুগুয়ে।
  • প্রতি ৪ বছর পর পর অনুষ্ঠিত হলেও ১৯৪২ এবং ১৯৪৬ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হয়নি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে।
  • কাতার বিশ্বকাপের আগে বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর বসেছে ২১ বার। সেগুলোতে সবচেয়ে বেশি ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ব্রাজিল- ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০, ১৯৯৪, ২০০২ সালে। চারবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এর পরের অবস্থানে আছে জার্মানি- ১৯৫৪, ১৯৭৪, ১৯৯০, ২০১৪ সালে এবং ইতালি- ১৯৩৪, ১৯৩৮, ১৯৮২, ২০০৬ সালে। দুইবার করে জিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আর্জেন্টিনা- ১৯৭৮, ১৯৮৬ সালে, ফ্রান্স- ১৯৯৮, ২০১৮ সালে এবং উরুগুয়ে- ১৯৩০, ১৯৫০ সালে।
  • বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ৪ বার রানার্স-আপ হয়েছে জার্মানি- ১৯৬৬, ১৯৮২, ১৯৮৬, ২০০২ সালে। তিনবার করে রানার্স-আপ হয়ে পরের অবস্থানে আছে আর্জেন্টিনা- ১৯৩০, ১৯৯০, ২০১৪ সালে এবং নেদারল্যান্ডস- ১৯৭৪, ১৯৭৮, ২০১০ সালে। দুইবার করে রানার্স-আপ হয়েছে ব্রাজিল- ১৯৫০, ১৯৯৮ সালে, ইতালি- ১৯৭০, ১৯৯৪ সালে, হাঙ্গেরি- ১৯৩৮, ১৯৫৪ সালে এবং চেক প্রজাতন্ত্র- ১৯৩৪, ১৯৬২ সালে।
  • ১৯৩০ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বিজয়ী দেশকে যে ট্রফিটি দেয়া হয় সেটির নাম বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রস্তাবক ফরাসী সেই ব্যক্তিটির নামে ছিল ‘জুলে রিমে ট্রফি’। ১৯৫৮, ১৯৬২ এবং ১৯৭০ সালে তিনবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ট্রফিটি ব্রাজিলকে স্থায়ীভাবে দিয়ে দেয়া হলে ‘ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ’ নামে নতুন ট্রফিটি চালু করা হয়।
  • ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগে ‘জুলে রিমে ট্রফি’ ৭ দিনের জন্য চুরি হয়ে গিয়েছিল। পরে এটি খুঁজে পায় পিকলস নামে একটি কুকুর। সেই বছর ট্রফিটি জিতে নেয় আয়োজক দেশ ইংল্যান্ড।
  • এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ১২টি গোল হয়েছিল ১৯৫৪ সালের সুইজারল্যান্ড বিশ্বকাপে। ২৬ জুনের সেই খেলায় অস্ট্রিয়া সুইজারল্যান্ডকে ৭-৫ গোলে পরাজিত করেছিল।
  • বিশ্বকাপে সবচেয়ে বয়স্ক গোলদাতা হলেন ক্যামেরুনের রজার মিল্লা। ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপে তিনি যখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে গোল করেন তখন তার বয়স ছিল ৪২ বছর।
  • বিশ্বকাপে অংশ নেয়া সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হলেন মিশরের গোলরক্ষক এল-হাদারি। ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে তিনি যখন সৌদি আরবের বিরুদ্ধে খেলায় অংশ নেন তখন তার বয়স ছিল ৪৫ বছর ১৬১ দিন।
  • বিশ্বকাপে অংশ নেয়া সবচেয়ে কম বয়স্ক খেলোয়াড় হলেন উত্তর আয়ারল্যান্ডের নরমান হোয়াইটসাইড। ১৯৮২ সালের স্পেন বিশ্বকাপে তিনি যখন সাবেক যুগোশ্লাভিয়ার বিরুদ্ধে প্রথমবার মাঠে নামেন তখন তার বয়স হয়েছিল মাত্র ১৭ বছর ৪০ দিন।
  • সবচেয়ে বেশি ১৬ গোল দেয়ার রেকর্ডের অধিকারী হলেন জার্মানির মিরোস্লাভ কোসা। এজন্য তাঁকে খেলতে হয়েছিল ২০০২, ২০০৬, ২০১০ ও ২০১৪ বিশ্বকাপের ২৪টি ম্যাচ। তিনি ২০০২ ও ২০০৬ টুর্নামেন্টে ৫টি করে গোল করেন, ৪টি করেন ২০১০ সালে এবং ২০১৪ সালে করেন ২টি গোল।
  • এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ৫ গোল করেছিলেন রাশিয়ার ওলেগ সালেঙ্কো। ১৯৯৪ সালের ২৮ জুন ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে ৫ গোল করে তিনি রেকর্ডটি গড়েছিলেন।
  • এক বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ১৩ গোল করে ১৯৫৮ সালের সুইডেন বিশ্বকাপে রেকর্ড গড়েছিলেন ফ্রান্সের জাঁ ফঁতে। এই ১৩ গোল করার জন্য তাঁকে খেলতে হয়েছিল ৬ ম্যাচ।
  • চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড় হিসেবে সবচেয়ে বেশিবার খেলার রেকর্ডের অধিকারী হলেন ব্রাজিলের কিংবদন্তী ফুটবলার এডসন আরান্তেস দো নাসিমেন্তো যিনি সবার কাছে ‘পেলে’ নামেই বেশি সুপরিচিত। তাঁকে নিয়ে ব্রাজিল জিতে নিয়েছিল ১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপ।
  • গত ২১টি আসরের প্রত্যেকটিতে অংশগ্রহণ করে সবচেয়ে বেশিবার অংশ নেয়ার রেকর্ডটি আছে ব্রাজিলের। তার পরের অবস্থানগুলোতে আছে জার্মানি-১৯টি, ইতালি-১৮টি, আর্জেন্টিনা-১৭টি এবং মেক্সিকো-১৬টি। এবারের বিশ্বকাপে ইতালি ছাড়া অন্য দেশগুলো-ব্রাজিল, জার্মানি, আর্জেন্টিনা ও মেক্সিকো অংশ নেয়ায় তাদের অংশগ্রহণের সংখ্যা ১টি করে বাড়বে।
  • বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুই দেশে খেলা হয়েছিল ২০০২ সালের আসরে-দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে।
  • গত ২১টি বিশ্বকাপ আয়োজক দেশের সংখ্যা হলো ১৭। এগুলোর মধ্যে দুইবার করে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে ব্রাজিল, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি ও মেক্সিকো। আর একবার করে আয়োজন করেছে উরুগুয়ে, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, চিলি, ইংল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, স্পেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান (যৌথভাবে), দক্ষিণ আফ্রিকা এবং রাশিয়া। এবারের ২২তম আসরটি আয়োজন করছে কাতার। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ যৌথভাবে আয়োজন করবে কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো। মেক্সিকো আগেই দুইবার বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল। তাই ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ আয়োজন করলে দেশটি হয়ে যাবে সর্বোচ্চ তিনবার বিশ্বকাপ আয়োজনকারী দেশ।
পূর্ববর্তী নিবন্ধচতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী করে শিক্ষার্থীদের তৈরি করতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধবান্দরবানে মাইনে উড়ে গেল তরুণের পা