১৯৭১ সালের এই সময়ে অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়, পাকিস্তানের পরাজয় সময়ের ব্যাপার মাত্র। বেসামাল হয়ে পড়েন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। পরাজয় এড়াতে কৌশল হিসেবে জাতিসংঘকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারে তৎপর হয়ে উঠে সামরিক জান্তা। এদিকে, বিভিন্নস্থানে মুক্তাঞ্চল প্রতিষ্ঠার পর ঢাকা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে এগুতে থাকেন মুক্তিযোদ্ধারা। ১৯৭১ সালের এই সময়ে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসতে থাকে বিজয়ের খবর। মুক্তাঞ্চলে উড়তে থাকে শহীদদের রক্তস্নাত লাল সবুজের পতাকা। মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় মিত্রবাহিনী এগোতে থাকে ঢাকার দিকে। জামালপুরে ২১ বেলুচ রেজিমেন্টের পাকসেনাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছিল ৬ দিন মুক্তিবাহিনী, ১১ ডিসেম্বর প্রায় সাড়ে পাঁচশো পাকসেনার আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে মুক্ত জামালপুর। যদিও হিলি সীমান্তসহ কিছু জায়াগায় বিচ্ছিন্নভাবে মিত্রবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করছিল পাকবাহিনী। কঙবাজার থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম চলে এসেছে মুক্তিবাহিনীর দখলে, মৌলভীবাজার মুক্ত হয়েছে, ঢাকামুখী মিত্রবাহিনীর হাতে দখল চলে এসেছে নরসিংদি পর্যন্ত।
বঙ্গোপসাগরের অভিমুখে তখনো ছুটে আসছে আমেরিকার সপ্তম নৌবহর। এই দিনে তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ভারতকে যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়ার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অন্যথা যুক্তরাষ্ট্র সামরিক ব্যবস্থা নেবে। শক্তিধর রাষ্ট্রের এমন হুঁশিয়ারিও মনোবল ভাঙতে পারেনি মুক্তিযোদ্ধাদের।