কার্নেট সুবিধার ১১২ গাড়ির নিলাম কাল ও পরশু

চট্টগ্রাম কাস্টমস

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২ নভেম্বর, ২০২১ at ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ

কার্নেট সুবিধার ১১২ গাড়ির নিলাম কাল ও পরশু
চট্টগ্রাম বন্দরে কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা কোটি কোটি টাকা মূল্যের বিলাসবহুল ১১২ টি গাড়ির নিলাম অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল বুধবার ও বৃহস্পতিবার। ম্যানুয়াল ও অলনাইনে (ই-অকশন) দুই প্রক্রিয়াতে বিডাররা (নিলামে অংশগ্রহণকারী) দরপত্র জমা দিতে পারবেন।
নিলামের তালিকায় থাকা ১১২ গাড়ির মধ্যে রয়েছে জার্মানি, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের তৈরি বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ বেঞ্জ, ল্যান্ড ক্রুইজার, ল্যান্ড রোভার, জাগুয়ার, মিতসুবিশি, টয়োটা এবং লেক্সাস জিপের মতো বিলাসবহুল গাড়ি। এর আগে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত টানা চার বার নিলামে তুলেও প্রত্যাশিত দর না পাওয়ায় প্রতিবারই নিলাম বাতিল করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামের বিডাররা সরকারি নিলাম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কেএম কর্পোরেশন থেকে আগামকীল পর্যন্ত ক্যাটালগ ও দরপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। এছাড়া গত ২৭ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে গাড়ির পরিদর্শন। আজ ২ নভেম্বর পর্যন্ত বিডাররা বন্দরের শেডে রাখা গাড়িগুলো পরিদর্শন করার সুযোগ পাচ্ছেন। অন্যদিকে ই-অকশনে আগ্রহীরা আগামীকাল সকাল ৯টা থেকে পরদিন দুপুর ১টা পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অথবা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ওয়েবসাইটের ই-অকশন লিংকে প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সাথে দরপত্র দাখিল করতে পারবেন। ই অকশন ছাড়া যারা ম্যানুয়ালি অংশ নিবেন তারা কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা (প্রশাসন), চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে, সহকারী/ডেপুটি কমিশনার (সদর) ঢাকা দক্ষিণ কার্যালয়ে, সহকারী/ডেপুটি কমিশনার (সদর) কাস্টমস এঙাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেট কার্যালয়ে এবং মংলা কাস্টম হাউসের নিলাম শাখায় স্থাপিত দরপত্রের বঙে ই-অকশনের উল্লেখিত সময়ে দরপত্র জমা দিতে পারবেন।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, কার্নেট সুবিধার আওতায় এখন পর্যন্ত ২৪৩টি গাড়ি আমদানি হয়। এর মধ্যে ১২১টি গাড়ি আমদানিকারকরা খালাস করে নিয়ে যায়। এছাড়া বাকি ১২২টি গাড়ির মধ্যে একটি গাড়ি কাস্টমসের নথিতে উল্লেখ থাকলেও কন্টেনার নাম্বার না থাকায় গাড়ির অবস্থান নিশ্চিত করতে পারেনি কাস্টমস। কার্নেট সুবিধার গাড়িগুলো গত ২০১০-২০১১ সাল থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আটকা পড়ে আছে। ইনভেন্ট্রি করে প্রথম দফায় গত ২০১৬ সালের আগস্টে ৮৫টি, দ্বিতীয়বার ২০১৭ সালের মে মাসে ১১৩টি, তৃতীয়বার ২০১৮ সালের মে মাসে ১১১টি গাড়ি এবং সর্বশেষ গত ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল চতুর্থবারের মতো ২২টি গাড়ি তোলা হয়। কিন্তু প্রতিবারই দামে অসামঞ্জস্য থাকায় দরদাতাদের কাছে গাড়ি বিক্রি করা সম্ভব হয়নি।
নিলাম শাখার এক কর্মকর্তা জানান, সর্বশেষ গত ২০১৯ সালের নিলামে মার্সিডিস বেঞ্জ ব্র্যান্ডের মতো হাইপ্রোফাইল গাড়ির দাম উঠে মাত্র সাড়ে ৪৭ লাখ টাকা এবং লেঙাস জিপের দর উঠেছিল ২ লাখ ৮ হাজার টাকা। অন্যদিকে দীর্ঘ সময় গাড়িগুলো পড়ে থাকার কারণে ইঞ্জিনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের সেলফ টাইমও ফুরিয়ে আসছিল।
নিলামের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার আলী রেজা হায়দার বলেন, নিলামে অনলাইন ও ম্যানুয়াল দুই প্রক্রিয়া রাখা হয়েছে মূলত বিডারদের কথা চিন্তা করেই। বিডাররা যে যার সুবিধামতো দুটির যেকোনো একটি ফ্ল্যাট ফর্মে অংশ নিতে পারবেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কার্নেট সুবিধায় গাড়ি আমদানির সুবিধা দেয়া হয়ে থাকে। তবে নির্দিষ্ট সময় পর আবার সেগুলো ফিরিয়ে নিতে হয়। বাংলাদেশে যারা শুল্কমুক্ত এই সুবিধা ব্যবহার করে এসব গাড়ি এনেছেন তাদের বেশির ভাগই প্রবাসী বাংলাদেশী, যাদের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাদের অনেকেই এসব গাড়ি কার্নেট সুবিধায় এনে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই এসব গাড়ি আমদানির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হলে এক সময় আমদানিকারকরা গাড়িগুলো খালাস করে নেননি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে শনাক্ত ২ আরও দুই মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধজহুরুল আলমের সদস্য পদ স্থগিত করল বিএনপি