‘কারখানা মালিকের, উৎসব সকলের’-এমন একটি আবহ তৈরি হয়েছিল গতকাল বুধবার নাসিরাবাদ শিল্প এলাকাস্থ ইন্ডিপেন্ডেন্ট অ্যাপারেলস নামের পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে। কারখানার শত শত শ্রমিক নেচে গেয়ে সামিল হয়েছিলেন উৎসবে। গার্মেন্টস কন্যারা করেছেন ফ্যাশন শো। কারখানার মালিকের পরিবারের সদস্য-সদস্যাদের সরব উপস্থিতি। উপস্থাপনা থেকে শুরু করে গানের তালে তালে নৃত্যসহ যাবতীয় পারফরমেন্স করেছেন গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা। মালিক-কন্যার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করে ভাইরাল হওয়া ইন্ডিপেন্ডেন্ট অ্যাপারেলসের শ্রমিকেরা গতকাল সকলে চাঁদা তুলে সেই কন্যা এবং জামাতাকে সোনার আংটি উপহার দিয়ে কারখানায় স্বাগত জানিয়েছেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ‘আনন্দ উৎসবে’র প্রতিটি আয়োজনে ছিল দেশ, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুকেও বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিকদের গানে, নৃত্যে। নগরীর নাসিরাবাদ শিল্প এলাকাস্থ ইন্ডিপেডেন্ট অ্যাপারেলস নামের গার্মেন্টসের মালিক, বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহসভাপতি এবং চিটাগাং ক্লাবের সাবেক চেয়ারম্যান লায়ন এস এম আবু তৈয়বের কারখানার সেই শ্রমিকরা দিনভর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আনন্দ উৎসবের আয়োজন করেন। করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানার অভ্যন্তরে আয়োজন করা হয় আনন্দ-উৎসবের। এ উপলক্ষে কারখানার ছাদে তৈরি করা হয় মঞ্চ, র্যাম্প। পতাকার রঙের লাল সবুজ কাপড়ের সামিয়ানা টাঙিয়ে বানানো হয় প্যান্ডেল। উৎসবে কারখানার মালিক এস এম আবু তৈয়ব সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন। বিদেশ থেকে এসে উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন মালিক-কন্যা সাইকা এবং তার স্বামী নিলয়ও।
কারখানার শ্রমিকেরা বিখ্যাত ‘নয়া দামাম’ গানটির সাথে নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে সাইকা ও নিলয়কে স্বর্ণের আংটি পরিয়ে দেন। কারখানার দুই হাজারেরও বেশি শ্রমিক যোগ দেন অনুষ্ঠানে। দেশের গান, মুক্তিযুদ্ধের গান এবং স্বাধীনতার গানসহ নানা আয়োজনে করা হয় আনন্দ উৎসব। আকর্ষণীয় ছিল ফ্যাশন শো। একদল গার্মেন্টস কন্যা একেবারে প্রফেশনাল মডেলদের মতো নিখুঁতভাবে র্যাম্পে হাঁটেন, ক্যাটওয়াক করেন। লাল সবুজ শাড়ি পরে দারুণ ফ্যাশন শো উপহার দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেন গার্মেন্টস কন্যারা। কারখানার মালিক এস এম আবু তৈয়ব জানালেন এই অনুষ্ঠানের জন্য গত পনের দিনেরও বেশি সময় ধরে তারা মহড়া করেছে। তারা কাজ করেছে, আবার কাজের ফাঁকে ফাঁকে আজকের এই দিনটিকে বর্ণিল করতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিয়েছে। কারখানা ছিল ছুটি। আয়োজন ছিল খাওয়া দাওয়ারও। শ্রমিকেরা কারখানা অঙ্গনে উৎসবের মেজাজে খাবার খেয়েছেন, আর তাদের পরিবার পরিজনের জন্য প্যাকেটে ভরে বাসায় পাঠানো হয়েছে খাবার।