কাপ্তাই রাঙ্গামাটি সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ আকারে ধস দেখা দিয়েছে। ধসের কারণে সড়কের বিশাল অংশ মাটির নিচে দেবে গেছে। অনেক স্থানে সড়কের উপর বড় আকারে ফাটলও দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় ভারী যানবাহন মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে সড়কের উপর দিয়ে চলাচল করছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে কাপ্তাই রাঙ্গামাটি সড়কের কলাতলি, শিমুল তলিসহ বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ফলে রাস্তার পাশেও বড় আকারের ধস দেখা দিয়েছে। সড়কের কলাতলী এলাকায় সব চেয়ে বড় আকারের ধস দেখা দিয়েছে। ধসের কারণে প্রায় তিনশ ফুট সড়ক গভীর খাদে তলিয়ে গেছে। আরো ধস হবারও আশঙ্কা রয়েছে। যানবাহন চালকদের সতর্ক করতে সড়ক ও জনপথের পক্ষ থেকে রাস্তার বিভিন্ন ভাঙ্গন কবলিত অংশে লাল পতাকা পুঁতে রাখা হয়েছে। ধস ঠেকাতে সড়কের উপর প্লাস্টিক ও ত্রিপল বিছিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু এরপরও ধস ঠেকানো যাচ্ছে না।
কলাতলির স্থানীয় বাসিন্দা মকবুল হোসেন বলেন, গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণের ফলে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ধস ও ফাটল দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করায় আমরা প্রথমে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানাই। চেয়ারম্যান বিষয়টি রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসককে অবহিত করলে জেলা প্রশাসক দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগকে জানান। খবর পাবার সাথে সাথে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শক দলের সদস্য কামাল হোসেন বলেন, মূলত ভারী বৃষ্টির কারণে রাস্তার পাশের পাহাড়ে ধস দেখা দিয়েছে। তাছাড়া বৃষ্টির পানি সরার জন্য উপযুক্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে সড়কে ধস দেখা দিয়েছে। আপাতত বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা করার প্রাথমিক উপায় হিসেবে ভাঙ্গন কবলিত অংশে প্রথমে মোটা কালো প্লাস্টিক বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে এর উপর ত্রিপল বিছিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এতকিছু করার পরও ধস ঠেকানো যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, যেসব স্থানে ধসের কারণে সড়ক ভেঙ্গে পড়েছে সেখানে আমরা প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে প্লাস্টিক ও ত্রিপল বিছিয়ে দিয়েছি। এরপর ধস ঠেকানোর প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ভাঙ্গন কবলিত অংশে বল্লি পুঁতে দিচ্ছি। তবে এতেও ধস ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়ছে। বৃষ্টি বন্ধ হলে ধস ঠেকানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
রাঙ্গামাটি সড়কে প্রতিদিন বিভিন্ন রকমের যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়। মালবোঝাই একটি কাভার্ডভ্যান ভাঙ্গন কবলিত অংশের উপর দিয়ে অত্যন্ত ধীর গতিতে পার হচ্ছিল। ঐ কাভার্ডভ্যান চালক সৈয়দ হোসেন বলেন, পাহাড়ি রাস্তা এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ। তার উপর জায়গায় জায়গায় ফাটল ও ধস দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় সময় ভারী বৃষ্টিও হচ্ছে। এই অবস্থায় চরম ঝুঁকি নিয়ে আমরা যানবাহন নিয়ে চলাচল করছি। তিনি ভাঙ্গন প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানান।