কানাডা-আমিরাতের এয়ারপোর্ট ঘুরে মুরাদ ফিরেছেন দেশে

বিমানবন্দরে নামার পর জিজ্ঞাসাবাদের মুখে

| সোমবার , ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:৩২ পূর্বাহ্ণ

মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ হারিয়ে সমালোচনার মুখে কানাডায় পাড়ি জমাতে গেলেও ব্যর্থ হয়ে দেশে ফিরেছেন মুরাদ হাসান। দেশ ছাড়ার দুদিন পর গতকাল রোববার বিকালে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে নামেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার এমিরেটসের একটি ফ্লাইটেই তিনি রওনা হয়েছিলেন টরন্টোর পথে। কিন্তু কানাডায় ঢুকতে না পেরে তিনি দুবাইয়ে ফিরে সেখানেই ছিলেন। দুবাই থেকেই গতকাল রোববার বিকাল ৪টা ৫৫ মিনিটে এমিরেটসের যে ফ্লাইট আসে, তাতেই মুরাদ দেশে ফেরেন বলে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ইমিগ্রেশন) মো. আসাদুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন। খবর বিডিনিউজের।
মুরাদ কূটনৈতিক পাসপোর্ট নিয়ে রওনা হলেও দুবাইয়ে তার ভিসা ছিল না বলে তাকে ফিরে আসতে হচ্ছে বলে এর আগে মন্ত্রিসভার একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছিলেন। তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব এবং আওয়ামী লীগের পদ হারালেও মুরাদ হাসান এখনও সংসদ সদস্য রয়েছেন।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে মুরাদ বেশ কয়েকবার কানাডা সফর করে। গত সেপ্টেম্বরেই তিনি সপ্তাহখানেক ওই দেশে ছিলেন। এবার কানাডায় যাতে মুরাদকে ঢুকতে দেওয়া না হয়, সেজন্য প্রবাসীদের একটি অংশ সক্রিয় ছিল বলে জানান ‘লুটেরা বিরোধী মঞ্চ, কানাডা’র সংগঠক ও ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির পিএইচডির গবেষক মঞ্জুরে খোদা টরিক।
তিনি বলেন, কানাডায় খুব নিয়মতান্ত্রিকভাবে সব হয়। আমরা এখানে কানাডার বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সির ওয়েবসাইটে গিয়ে ইমেইল করেছি। মেইলে লিখেছি মুরাদ হাসানের অপকীর্তির কথা, আর সঙ্গে সংবাদ ও ভিডিও ক্লিপ জুড়ে দিয়েছি। ১৭১টি ইমেইল নাকি গিয়েছে, আমাদেরকে জানিয়েছেন এখানে কর্মরত দুই বাংলাদেশি সাংবাদিক।…তাকে কানাডায় ঢুকতে না দেওয়ার ব্যাপারে আমার বিশ্বাস এটি কাজে দিয়েছে।
এদিকে করোনার ডাবল ডোজ টিকার সনদ না থাকলেও কীভাবে বিমানবন্দর দিয়ে কানাডায় গেছেন এসব বিষয় নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লোকজন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে ট্রানজিটের যাত্রী হওয়ায় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের মুখোমুখি হতে হয়েছে সদ্য প্রতিমন্ত্রিত্ব হারানো ডা. মুরাদকে।
জানা গেছে, ডা. মুরাদ হাসানকে কানাডায় ঢুকতে না দেওয়ার জন্য করোনার ডাবল ডোজের টিকার সনদ না থাকাও একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ। যে কারণেই প্রশ্ন উঠেছে, ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট ও কোভিড প্রোটোকল না মেনে মুরাদ কীভাবে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে কানাডায় গেছেন?
গতকাল রোববার শাহজালাল বিমানবন্দরে এক সংবাদ সম্মেলন পেয়ে সেই প্রশ্ন করা হয়েছিল বেসামরিক বিমান চলাচল প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীকে। জবাবে তিনি বলেন, বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য বিভাগের পৃথক ডেস্ক রয়েছে। টিকার সনদের বিষয়টি তারা পরীক্ষা করে থাকে। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) তাদের বসার জায়গা করে দিয়েছে মাত্র। এ বিষয়ে জানতে হলে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন প্রতিমন্ত্রী। একই প্রশ্নের জবাবে বেবিচকের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদুল আহসান বলেন, এ বিষয়ে তিনি ‘খোঁজখবর’ করবেন।
এদিকে খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে গতকাল রোববারই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করেছেন বিএনপি সমর্থক এক আইনজীবী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুরাদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের আদালতেও মামলার আবেদন
পরবর্তী নিবন্ধযুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তৃতীয়বার ভেটো দেয় রাশিয়া