কানাডায় রানি ভিক্টোরিয়া এলিজাবেথের মূর্তি ভাঙচুর

অ্যালবার্ডায় ১০টি গির্জায় হামলা

| শনিবার , ৩ জুলাই, ২০২১ at ৭:২৯ পূর্বাহ্ণ

কানাডায় ব্রিটিশ রানি ভিক্টোরিয়া ও দ্বিতীয় এলিজাবেথের মূর্তি টেনে নামিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। আবাসিক স্কুলগুলোতে আদিবাসী শিশুদের গণকবর উদ্ধারের ঘটনায় ক্ষোভের জেরে বিক্ষোভকারীরা মূর্তি ভেঙেছে। গত বৃহস্পতিবার ম্যানিটোবা প্রদেশের রাজধানী উইনিপেগে এ ভাঙচুর চালিয়ে উল্লাস করেছে বিক্ষোভকারীরা। একদল বিক্ষোভকারী এদিন কানাডার আদিবাসী শিশু মৃত্যুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ম্যানিটোবা আইনসভার দিকে অগ্রসর হয়। সেখানেই বিক্ষোভের সময় ভবন প্রাঙ্গণ থেকে রানি ভিক্টোরিয়ার মূর্তি টেনে ফেলে দেয় তারা। কাছেই থাকা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মূর্তিও তারা নামিয়ে ফেলে। স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, পুরো বিক্ষোভই মোটামোটি শান্তিপূর্ণ থাকলেও মূর্তি নামানোর সময় পুলিশ স্টান বন্দুক ব্যবহার করেছে এবং একজনকে আটক করেছে। খবর বিডিনিউজের।
ঔপনিবেশিক যুগে ১৮৭৬ সালে কানাডার জন্মলগ্নের ১৫৪তম বর্ষপূর্তি উদযাপনের দিন ১ জুলাই ‘কানাডা দিবস’-এ এই ভাঙচুর হল। শিশুদের গণকবর আবিষ্কারের পর অনেকেই সরকারকে এই দিবস উদযাপন বাতিলের আহ্বান জানিয়েছিলেন। কানাডার অ্যালবার্ডায় ১০টি গির্জায় ব্যাপক ভাঙচুর হয়েছে বলে জানিয়েছে সেখানকার পুলিশ। এসব ভাঙচুরের সঙ্গেও গণকবর আবিষ্কারের ঘটনার সম্পর্ক আছে বলে পুলিশ মনে করছে। বিবিসি জানায়, কানাডার প্রতিষ্ঠাকালে সিংহাসনে ছিলেন রানি ভিক্টোরিয়া। ব্রিটিশদের সঙ্গে কানাডা ফার্স্ট নেশন রানি ভিক্টোরিয়ার আমলেই আবাসিক স্কুলের এই প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। আবাসিক এইসব স্কুলের বেঁচে যাওয়া এক শিক্ষার্থী বেলিন্ডা ভ্যানডেনব্রোয়েক কানাডিয়ান সম্প্রচারক সিবিসি-কে জানান, যদিও মূর্তি টেনে নামানোর কাজে তিনি অংশ নেননি, তবুও রানির মূর্তি উপড়ে ফেলার ঘটনায় বিন্দুমাত্র অনুশোচনা বোধ করছেন না তিনি।
সম্প্রতি শত শত আদিবাসী গণকবর খুঁজে পাওয়ার শোকে এই বছর কানাডা দিবসের সব আয়োজন বন্ধ করা হয়। ওদিকে, রানিদের মূতি ভাঙার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। ‘রানির মূর্তি অসম্মান করাকে আমরা অবশ্যই নিন্দা জানাই’ বলেন ব্রিটিশ সরকারের একজন মুখপাত্র। সম্প্রতি আদিবাসী শিশুদের কবর খুঁজে পাওয়ার হৃদয়বিদারক ঘটনায় আমরা শোক প্রকাশ করি। আমরা এরকম ঘটনার খবরকে গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি এবং কানাডা সরকারের সঙ্গে আদিবাসীদের বিষয়ে যোগাযোগ রাখছি, বলেন ঐ মুখপাত্র।
সমাজের ‘মূলধারার অংশ হিসেবে প্রস্তুত করতে’ ১৯ ও ২০ শতকে অন্তত দেড় লাখ শিশুকে জোরপূর্বক নিজেদের বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে বাধ্যতামূলকভাবে আবাসিক স্কুলে পাঠানো হয়। ধারণা করা হয়, অন্তত ছয় হাজার শিক্ষার্থী এই স্কুলগুলোতে পড়ার সময় মারা যায়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এসব শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা করা হত। উইনিপেগে হাজারো মানুষ আবাসিক স্কুলের এই শিক্ষার্থীদের সম্মানে মিছিল করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক গাছে ১২১ প্রজাতির আম
পরবর্তী নিবন্ধআন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বললেন জার্মান তারকা ক্রুস