কাছের মানুষটির সহযোগিতা

শিউলী নাথ | বুধবার , ১৯ অক্টোবর, ২০২২ at ৬:৩৫ পূর্বাহ্ণ

একটা প্রাসাদোপম বাড়িতেই মানসিক প্রশান্তি নাকি ব্যাংকে গচ্ছিত কোটি টাকায় মানসিক প্রশান্তি? বিলাসবহুল মার্সিডিজ নিয়ে বেড়ানোয় মানসিক প্রশান্তি নাকি ভারী গহনায় সেজে থাকা মানসিক প্রশান্তি? পৃথিবীর বড় বড় দেশগুলোতে থাকা বা ঘুরে বেড়ানোই মানসিক প্রশান্তি নাকি সন্তানের কৃতিত্বেই মানসিক প্রশান্তি? সন্তানের বড় অফিসের চাকরিতেই মানসিক প্রশান্তি নাকি লৌকিকতার মাঝেই মানসিক প্রশান্তি? এরকম হাজারো প্রশ্ন মাঝে মাঝে উঁকি দেয়। তবে যার যার মানসিক ব্যাপ্তির উপর তার তার প্রশান্তি নির্ভর করে। এ নিয়ে লক্ষ মতবিরোধ থাকতেই পারে, কিন্তু বেলাশেষে মানসিক প্রশান্তি শুধু এক জায়গায় এসেই নোঙ্গর ফেলে। তা হোলো খুব কাছের মানুষটার কাছে প্রাণ খুলে জীবনের সুখ, দুঃখ, কষ্টগুলো একনিমিষেই ভাগ করে নেয়ার মধ্যে।

হয়তো অজানা কোনো ভয়ে বা আতংকে না বলা কথাগুলো কখনোই কাউকে বলা হয়নি এমনকি কাছের মানুষটিকেও নয়, হাজারো কষ্ট ব্যথা লুকিয়ে নিজেকে তিলে তিলে শেষ করার যে চেষ্টা, পুরো পৃথিবীকে স্বার্থপর মনে করার যে আক্ষেপ-এসব সমাধানের একটাই পথ, তা হলো- খুব কাছের মানুষটিকে সঠিকভাবে চিনে নিয়ে নিঃসংকোচে, উজাড় করে সব বলতে পারা। যেখানে বরং মানসিক অশান্তি ভয় নয় মানসিক প্রশান্তি লুকিয়ে আছে।

কাছের মানুষটির ক্ষমা, উদারতা, অভিভাবকত্ব, স্নেহ, ভালোবাসা, রাগ-অনুরাগ সব যখন একাকার হয়ে যায় তখনই মনে হবে এর চেয়ে বড় সুখ কোথাও নেই, এর চেয়ে বড় প্রশান্তি কোথাও নেই। অভাব অনটন, দুঃখ, ব্যথা সবই যেন এর কাছে হার মানতে বাধ্য। সবচেয়ে কাছের মানুষটির সাপোর্ট বা সহযোগিতা পাওয়ার মধ্যে প্রকৃত মানসিক প্রশান্তি লাভ করা যায়। জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি অর্জন করা যায়। দুঃখগুলো বাতাসে মিলিয়ে মেঘের দেশে পাড়ি জমায় আর সমস্ত মনকে হালকা করে দিয়ে যায়। মানুষকে চিনতে শেখায় আর নতুনভাবে বাঁচতে শেখায়। সন্তান, ভাই, বোন, বন্ধু, আত্মীয় স্বজন সবাই যখন ছেড়ে যায় তখন শুধু কাছের ও প্রিয় মানুষটি ছাড়তে পারে না। তাই হাজারো কষ্টে নিজে নিঃশ্বেসিত না হয়ে বরং একমাত্র শক্তি ও অবলম্বন হিসেবে কাছের মানুষটি ছাড়া আর বিকল্প নেই। সেখানেই সকল মানসিক প্রশান্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই নশ্বর পৃথিবী হোক ভালোবাসাময়
পরবর্তী নিবন্ধঅ-মানুষ