কলম্বো বন্দরে বিশেষ সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

জয়া টার্মিনালে ফিডার ভ্যাসেলকে প্রায়োরিটি বার্থিং দেয়ার সিদ্ধান্ত

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৩ জুলাই, ২০২২ at ৪:৪১ পূর্বাহ্ণ

কলম্বো বন্দরের জটসহ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে যাতে বাংলাদেশের কন্টেনার হ্যান্ডলিং ব্যাহত না হয় সেজন্য বাংলাদেশের ফিডার ভ্যাসেলকে প্রায়োরিটি বার্থিং দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কলম্বোর সরকারি বন্দর জয়া টার্মিনালে এই বিশেষ সুবিধা পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কলম্বোর বাংলাদেশ হাইকমিশনের বিশেষ তৎপরতায় এই সুবিধা মিলতে যাচ্ছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার শ্রীলঙ্কা। চট্টগ্রাম বন্দরে সরাসরি কোনো মাদার ভ্যাসেল আসে না। সিঙ্গাপুর, কলম্বো ও মালয়েশিয়ার পেনাং ও পোর্ট কেলাং বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য পরিচালিত হয়। উপরোক্ত ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্টগুলোতে বিশ্বের নানা দেশের আমদানি পণ্য নিয়ে আসা জাহাজগুলো নোঙর করে। বাংলাদেশের আমদানি পণ্য বোঝাই কন্টেনারগুলো ওখানে নামানো হয়। তুলে দেয়া হয় চট্টগ্রাম কিংবা মোংলা বন্দরমুখী ফিডার ভ্যাসেলে। একইভাবে চট্টগ্রাম কিংবা মোংলা থেকে ফিডার ভ্যাসেলে যাওয়া রপ্তানি পণ্য বোঝাই কন্টেনারগুলো উপরোক্ত ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্টে নামানো হয়। ওখান থেকে ইউরোপ, আমেরিকা, চীন, জাপানসহ বিশ্বের নানা দেশের বন্দরগামী মাদার ভ্যাসেলে তুলে দেয়া হয়।
কয়েক মাস আগে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইউরোপের কয়েকটি বন্দরে সরাসরি জাহাজ চলাচলের উদ্যোগ নেয়া হলেও তার পরিমাণ কম। দেশের লাখ লাখ টিইইউএস কন্টেনার ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্টের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়ে আসছে অনেক বছর ধরে।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট হিসেবে কলম্বো বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শ্রীলঙ্কার সাম্প্রতিক সংকট ও বন্দরের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সংকটে পড়তে হয়। কলম্বো বন্দরের জাহাজ ও কন্টেনার জটের ধকল পড়ে চট্টগ্রাম বন্দরে। দিনের পর দিন আটকা থাকে আমদানি পণ্য বোঝাই কন্টেনার। আবার চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া রপ্তানি পণ্য বোঝাই কন্টেনারও মাদার ভ্যাসেল মিস করার ঘটনা ঘটে। কলম্বো বন্দরে জটের কারণে সংকটে পড়া দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন হন এদেশের আমদানি-রপ্তানিকারকেরা।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কলম্বো বন্দরে প্রায়োরিটি বার্থিং চেয়ে আসছিল বাংলাদেশ। দেশের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো কলম্বোর বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে এই ব্যাপারে চেষ্টা চালাচ্ছিল। গত ২৯ জুন অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে কলম্বো বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রশান্থা জায়ামান্না বাংলাদেশের কন্টেনার জাহাজগুলোকে প্রায়োরিটি বার্থিং দেয়ার কথা বলেন। কলম্বোস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম অর্থনৈতিক কূটনৈতিক সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি উপরোক্ত ঘোষণা দেন। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বন্দর কর্তৃপক্ষ, টার্মিনাল অপারেটর, মেইন লাইন অপারেটর, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার্সসহ স্টেকহোল্ডার সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দায় পড়া শ্রীলঙ্কা তাদের বন্দরের উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কলম্বো বন্দর বছরে দেড় কোটি টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা অর্জন করবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটিকেট বিক্রিকালে কালোবাজারি আটক
পরবর্তী নিবন্ধউদভ্রান্তের মতো কথা বলা এখন বিএনপির মজ্জাগত স্বভাব : তথ্যমন্ত্রী