কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ ও ফটিকছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল মঙ্গলবার ভোট গ্রহণের সকল আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে বহিরাগতদের নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে; আনসার, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব সমন্বয়ে নেয়া হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা। সকাল ৮টা থেকে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ শুরু হবে, যা বিরতিহীনভাবে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
পটিয়া প্রতিনিধি জানান, গতকাল সকাল থেকে উপজেলার এ জে চৌধুরী হাই স্কুল থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সদস্যদের সহায়তায় পাঁচ ইউনিয়নের ৪৫টি কেন্দ্রে বিভিন্ন নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছানো হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় ৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষ থেকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে বহিরাগতদের নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, কর্ণফুলী উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ১৬ হাজার ৫৭২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫৩ হাজার ৫৯৯ জন ও মহিলা ভোটার ৫৪ হাজার ২০০ জন। উপজেলা গঠনের পর দ্বিতীয় বারের মত আজ বুধবার নির্বাচনে ৪৫টি কেন্দ্রের ৩২০টি বুথে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবারই প্রথম ৪৫টি কেন্দ্রের সবকটিতে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। নবসৃষ্ট এ উপজেলায় ২০১৭ সালে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এবার নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২ জন ছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন ৬ প্রার্থী।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল শুক্কুর বলেন, এবার ভোটে জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। নির্বাচনে ৪৫ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৩২০ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং ৬২০ জন পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন।
নির্বাচনে নিযুক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) পিযুষ কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে ৬০৮ সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। ৩০টি মোবাইল টিম, ডিবি পুলিশের মোবাইল টিম থাকবে ৫টি, ৫ প্লাটুন বিজিবি, ৪০টি র্যাবের টিম, ৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের মাঠে থাকছেন। যেখানে প্রয়োজন হবে সেখানেই বসানো হবে চেকপোস্ট।
ফটিকছড়ি প্রতিনিধি জানান, গতকাল মঙ্গলবার ফটিকছড়ি পৌরসভার ১৯টি ভোটকেন্দ্রে ভোটের সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে সব কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে বলে জানিয়েছেন ফটিকছড়ি পৌরসভার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. কামরুল আলম। তিনি জানান, ভোটার, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, ভোট কেন্দ্রে প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামরা দ্বারা নির্বাচন কমিশন (ইসি) পর্যবেক্ষণ করবে। এজন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১৯টি কেন্দ্র ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ২ প্লাটুন বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, আনসারসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসংখ্য সদস্য মোতায়েন করেছে ইসি। এদের মধ্যে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ ও আনসার নিয়োজিত থাকছে এবং বিজিবি ও র্যাব নির্বাচনী এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। জানা গেছে, তিন মেয়র পদপ্রার্থীসহ ফটিকছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর মিলিয়ে এবার মোট ৪০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।