বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসে বিস্তার বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার পর সব মিলিয়ে দেশে শতাধিক সংসদ সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে বর্তমান সংসদের চারজন আইন প্রণেতার। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক মাস লড়াই করে বুধবার না ফেরার চলে গেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কুমিল্লা-৫ আসনের আবদুল মতিন খসরু। মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় গত মাসে মারা যান সিলেট-৩ আসনের মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। এর আগে গত বছর সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং নওগাঁ-৬ আসনের ইসরাফিল আলম মারা যান। ওই সময় মারা যান টেকনোক্র্যাট কোটার প্রতিমন্ত্রী শেখ মুহম্মদ আবদুল্লাহ। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ; তা ৬ লাখ পেরিয়ে যায় গত ১ এপ্রিল। সে হিসেবে ১৬ দিনেই আক্রান্ত হল আরও ১ লাখ লোক। কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত দুই মাসে বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের অনেকেরই আক্রান্ত হয়েছেন প্রথম ডোজের টিকা গ্রহণ করার পর। কেউ কেউ দ্বিতীয় দফায় আক্রান্ত হয়েছেন।
সংসদ সচিবালয়ের মেডিকেল সেন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েকজন সংসদ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও কোনো উপসর্গ তাদের ছিল না। সদ্য সমাপ্ত সংসদ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার কারণে সংসদ সচিবালয়ের নির্দেশনা অনুসরণ করে কোভিড-১৯ এর পরীক্ষা করাতে গেলে অনেকের পজেটিভ হওয়ার খবর পাওয়া যায়। হুইপ ইকবালুর রহিম বলছেন, মহামারী শুরু হওয়ার পর জনপ্রতিনিধিদের মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়েছে বলে তারা বেশি আক্রান্ত হয়েছেন।
মেডিকেল সেন্টার এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য মতে, সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত দেশের প্রায় ১১১ জন সংসদ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। চলমান দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় আক্রান্ত হয়েছে অন্তত ৩৪ জন সংসদ সদস্য। অবশ্য আক্রান্তদের অনেকেই তাদের তথ্য প্রকাশ করতে আগ্রহী হন না। জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, কোন সংসদ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেলে স্পিকার, চিফ হুইপসহ আমরা হুইপরা নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখি। সংসদের মেডিকেল সেন্টার থেকেও তাদের চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়। ঢাকার বাইরে থেকে চিকিৎসার জন্য আনার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী সার্বিক সহযোগিতা ও খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।