করোনাকালে স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে সবকিছুই বন্ধ। বাতিল করা হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষা। কারণ বলা হচ্ছে আগে জীবন পরে পড়ালেখা। কিন্তু সরকারের এই নীতি মানছে না চট্টগ্রামের ক্রিকেট এবং ফুটবল একাডেমিগুলো। তাদের কাছে আগে জীবন নয়, খেলা শেখানোর নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া। না হয় এই করোনাকালে কেনইবা বাচ্চাদের ধুলার মধ্যে অনুশীলন করাবে।
শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বাসনা মুহুরী বলেন, করোনায় সবচাইতে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু এবং বয়স্করা। বিশেষ করে শিশুরা যদি ধুলা বালির মধ্যে খেলাধুলা করে তাহলে তাদের ঝুঁকিটা আরো বেশি। কারণ শিশুদের শ্বাস নালী অত্যন্ত কোমল। তাই তাদের যদি করোনায় আক্রমণ করে আর সেখানে যদি ধুলা বালির সংস্পর্শ আসে তাহলে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। এমনিতেই করোনাকালে বাচ্চাদের বাইরে যেতে দেওয়াটা উচিত নয়। যেখানে বেশি মানুষের সমাগম সেখানেতো প্রশ্নই আসে না। এরকম অবস্থায় স্টেডিয়ামের মত ধুলা বালির জায়গায় বাচ্চাদের খেলা শেখানো চরম অন্যায়। কিন্তু কে শোনে কার কথা। আর কেইবা এদের নিবৃত্ত করবে। কেউ যেন নেই এরকম ঝুঁকি থেকে বাচ্চাদের রক্ষা করার জন্য। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনের অনুশীলন মাঠে প্রতিদিনই শত শত শিশু কিশোর ঘন্টার পর ঘন্টা অনুশীলন করছে। কোন রকমের সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই। সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখার কোন সুযোগও নেই সেখানে। ফলে খালি মুখে ধুলা বালিতে একেবারে আপন মনে চলছে এই অনুীশলন। যা শিশুদের ঠেলে দিচ্ছে ঝুঁকির মুখে। এমনিতেই এই সময়টাতে সর্দি, কাঁশি কিংবা জ্বরে ভুগছে শিশুরা। আর সেখানে যদি করোনা যোগ হয় তাহলে কি ভয়াবহ অবস্থা দাঁড়াতে পারে তা অনুমান করা কঠিন হওয়ার কথা নয়।
চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী জানান, আমরা বড়দের টুর্নামেন্ট করতে গিয়ে নানা সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। যাতে কোন ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়তে নাহয়। সে জায়গায় বাচ্চাদের এভাবে ধুলাবালির মাঠে অনুশীলন করানোটা সত্যিই ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া। তিনি বলেন, যে সব একাডেমি গুলো জেলা ক্রীড়া সংস্থার স্থাপনা ব্যবহার করে তাদের বিষয়ে সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নানা সময় কথা বলেছেন। তিনি একাডেমি গুলোকে একটি নীতিমালার অধীনে নিয়ে আসার জন্য একাধিকবার আলোচনাও করেছেন। তবে আমরা সহসা এই বিষয়ে হয়তো একটা নীতিমালা তৈরির কাজ হাতে নেব। আর যেহেতু এখন করোনাকাল আর এই করোনাকালে বাচ্চাদের অনুশীলন যেহেতু ঝুকিপূর্ণ সেহেতু আমরা যারা অনুীশলন করাচ্ছে তাদেরকে চিঠি দেব। যাতে তারা অনুশীলন বন্ধ করে। তাছাড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভায় এ বিষয়টি আলোচনা করা হবে। কারণ শিশুদের ঝুঁকির মুখে ফেলে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই ।
একদিকে ফুটবল ক্রিকেট মিলে তিন, চারশ ছেলে অনুশীলন করছে। আবার তাদের অভিভাবক আর উৎসুক দর্শক মিলে আরো বেশি। এমন একটি ঝুকিপূর্ণ পরিবেশে বাচ্চারা কি শিখবে সেটা বোধহয় বলার অপেক্ষা রাখেনা। এরই মধ্যে বেশ কিছু অভিভাক অনুশীলনের পরিবেশ দেখে তাদের বাচ্চাদের সরিয়ে নিয়ে গেছে।