করের লক্ষ্য পূরণ কঠিন হবে : এফবিসিসিআই

| শুক্রবার , ২ জুন, ২০২৩ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

মোট খরচের ৫৬.৪৪ শতাংশ এনবিআরের মাধ্যমে কর হিসেবে সংগ্রহ করার লক্ষ্য ধরে নতুন অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব অর্থমন্ত্রী দিয়েছেন, সেই লক্ষ্য পূরণ কঠিন হবে এবং কম আয়ের মানুষের ওপর করের বোঝা বাড়বে বলে মনে করছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।

বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতির (এফবিসিসিআই) সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেছেন, আমার কাছে মনে হয়েছে, ২০৪১ সাল এবং এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশের থেকে উত্তরণ) গ্র্যাজুয়েশনকে মাথায় রেখে বাজেট ঘোষণা করেছেন। সেখানে চ্যালেঞ্জ অবশ্যই আছে, কালেকশনটা চ্যালেঞ্জ হতে পারে। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল জাতীয় সংসদে ২০২৩২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর মধ্যে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা তিনি রাজস্ব খাত থেকে যোগান দেওয়ার পরিকল্পনা সাজিয়েছেন। এর ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে কর হিসেবে আদায় করার আশা করছেন তিনি। ফলে এনবিআরের কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে ১৬ শতাংশের বেশি। টাকার ওই অংক মোট বাজেটের ৫৬.৪৪ শতাংশের মত।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, আমাদের ফরেন কারেন্সি যেহেতু এঙপোর্ট ও রেমিটেন্সের ওপর নির্ভরশীল, সেখানে আমাদের ফরেন কারেন্সির প্রাইসটা কোথায় পর্যন্ত যাবে আমরা জানি না। এগুলোকে যদি আমরা ঠিক রাখতে পারিবাজেটে কালেকশন যদি না হয় তাহলে এঙপেনডেচার তো ডিফিকাল্ট। তিনি বলেন, টার্গেট অ্যাচিভ করতে হলে এঙপেনডেচারে যেতেই হবে। সেক্ষেত্রে আমাদের কালেকশন বাড়াতেই হবে। বাড়ানোর জন্য আমরা সব সময় যেটি বলি, এক জায়গায় সীমাবদ্ধ না থেকে জাল বিস্তৃত করা। সহজে যেসব জায়গা থেকে ট্যাঙ কালেকশন করা যায়ভ্যাট সোর্স, অগ্রিম আয়কর (এআইটি), অ্যাডভান্স ভ্যাট; এগুলো কম করে বরং নতুনদের কারের আওতায় নিয়ে আসা।

বাজেট প্রস্তাব অনুযায়ী ২৩৪ আমদানি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ও ১৯১ আমদানি পণ্যের নিয়ন্ত্রক শুল্ক (আরডি) প্রত্যাহারের প্রস্তাবে স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছে এফবিসিসিআই। করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা করায় ব্যবসায়ী নেতারা সন্তোষ প্রকাশ করলেও আয়কর বিবরণী দাখিলে দুই হাজার টাকা করে ন্যূনতম কর আদায়ের প্রস্তাব নিয়ে তারা আপত্তি জানিয়েছেন।

বাজেটে ২৩৪ আমদানি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক (এসডি) এবং ১৯১ আমদানি পণ্যের নিয়ন্ত্রক শুল্ক (আরডি) প্রত্যাহারের প্রস্তাবে স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান ভোগান্তিতে পড়বে মনে করছে এফবিসিসিআই। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে এসে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, এই জায়গাটা দেখা দরকার। কারণ এটা হলে তো লোকাল ইন্ডাস্ট্রি সাফার করতে পারে। এগুলো করা হয়েছে হয়ত এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের রোডম্যাপের কারণে। এই মুহূর্তে আমাদের ডলারের যে সংকট, এই সংকটের সময় আমরা বিদেশি পণ্য আনতে চাই কি চাই না, সেটা লোকাল ইন্ড্রাস্ট্রিকে প্রাধান্য দিয়েই কিন্তু আমাদের এগোতো হবে।

ডলার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা যে অনেক পণ্য আনতে পারছেন না, সে কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা বলেছিলাম, ইম্পোর্ট সাবস্টিটিউট আইটেমকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য। ইম্পোর্ট সাবস্টিটিউট আইটেম বাংলাদেশে আমরা যত বেশি উৎপাদন করতে পারি, ততবেশি আমাদের ইম্পোর্টের উপর চাপ কমবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পুরো বাজেটের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আগামীকাল শনিবারের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া জানাবে এফবিসিসিআই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকেএনএফের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প দখল বিস্ফোরণে সেনাসদস্য নিহত
পরবর্তী নিবন্ধসংকটের প্রতিফলন নেই বাজেটে : সিপিডি