কমে যেতে পারে মৎস্য আহরণ

জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে আশঙ্কা ফিশিং বোট মালিকদের

কক্সবাজার প্রতিনিধি | রবিবার , ৭ আগস্ট, ২০২২ at ৭:৪২ পূর্বাহ্ণ

দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সাগর থেকে মাছ আহরণ কমে যেতে পারে এবং বাজারে ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের দাম ব্যাপকহারে বেড়ে যেতে পারে। এ আশঙ্কা ফিশিং বোটের মালিকদের।
কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ জানান, প্রতিবছর চৈত্র মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে গেলে এবং এ সময় কয়েকদিন টানা বৃষ্টি হলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের ঝাঁক দ্রুত উপকূলমুখী হয়। আর সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে বঙ্গোপসাগরে যখন পানির উচ্চতা কমতে থাকে, তখন মাছের ঝাঁকও ক্রমশ নীচের দিকে নামতে থাকে। মাছের ঝাঁক বেশি গভীর এলাকায় নেমে গেলে তখন সাগর থেকে মাছ ধরে এনে ঘাটে বিক্রি করে আয়-ব্যয়ের খরচ পোষানো যায় না। ফলে এক পর্যায়ে মাছ ধরা বন্ধ রাখতে হয়। কিন্তু এখন নতুন করে জ্বালানি তেলের ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি ট্রলার মালিকদের জন্য নতুন সংকট নিয়ে আসবে বলে তারা মনে করছেন।
ট্রলার মালিক সমিতির মতে, কক্সবাজারে ছোটবড় প্রায় ৭ হাজার মাছধরা বোট রয়েছে। সাগরে মাছধরা বড় নৌকায় ৩০ থেকে ৪০ জন এবং ছোট নৌকায় ৫ থেকে ১৭ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র ২ জন জেলে। ট্রলারগুলোর মধ্যে ইলিশ জালের বোটগুলো গভীর বঙ্গোপসাগরে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো উপকূলের কাছাকাছি মাছ ধরে। ইলিশ জালের বোটগুলো পক্ষকালের রসদ নিয়ে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো মাত্র একদিনের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। এসব জেলে বোটগুলো সাগর উপকূলে ছোট প্রজাতির মাছ ধরে, যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘পাঁচকাড়া’ (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়। এসব বোটে লক্ষাধিক জেলে ও শ্রমিক মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। তারা সাগরে অনুকুল আবহাওয়া থাকা সাপেক্ষে বছরে ৮/ ৯ মাস মাছ ধরে। নিষেধাজ্ঞার কারণে বছরে দুই দফায় প্রায় ৩ মাস সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকে।
ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির খবরে বোট মালিকদের মাঝে উদ্বেগ ও হতাশার তৈরি হয়েছে। এরফলে সাগর থেকে মাছ আহরণ ব্যয় ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে।
একই আশংকা প্রকাশ করে কক্সবাজার শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাটস্থ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে বাজারে সামুদ্রিক মাছের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যেতে পারে। এরফলে জাতীয় অর্থনীতিতে সামুদ্রিক মাছের অবদান সংকুচিত হয়ে আসতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশের অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য
পরবর্তী নিবন্ধস্পেনে পটিয়ার যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু