কমছে নিত্যপণ্যের দাম

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে পাইকারি ক্রেতাদের ভিড়, তীব্র যানজট

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৭ এপ্রিল, ২০২১ at ৬:৫৯ পূর্বাহ্ণ

সকাল থেকে পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের দীর্ঘ সারি। সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এসব যানবাহন থেকে শ্রমিকরা পণ্য আনলোড করছেন। এরপর ঠেলা কিংবা ভ্যানগাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ব্যবসায়ীদের দোকান-গুদামে। অনেক শ্রমিক পণ্যের বস্তা মাথায় নিয়ে ক্রেতাদের যানবাহনে তুলে দিচ্ছেন। তীব্র যানজটে সামনে এগুনো যেন দায়। গতকাল দিনভর ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে সারাদিনের চিত্র ছিল এটি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভোগ্যপণ্যের বাজার লকডাউনের আওতামুক্ত। এছাড়া সাধারণ ব্যবসায়ীরাও সামনে দাম বেড়ে যায় কিনা সেটি নিয়ে আতঙ্কিত। তাই নগরী এবং আশপাশের ব্যবসায়ীরা পণ্য কিনতে ছুটে এসেছেন। তবে আশার কথা হলো, এবার ভোগ্যপণ্যের আমদানি পর্যাপ্ত থাকায় দাম নিম্নমুখী। বিশেষ করে রমজানের অত্যাবশকীয় পণ্য ছোলার বাজার কমছে। অন্যদিকে লকডাউনের কারণে সরকার ব্যাংকের সময়সীমারও পরিবর্তন এনেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকের লেনদেনের সময়সূচি সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টার করার কারণে লেনদেনের ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়েছেন দাবি ব্যবসায়ীদের। গতকাল চাক্তাই খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পইকারি পর্যায়ে প্রায় সব ভোগ্যপণ্যের বাজার নিম্নমুখী। রমজানের আবশ্যিক পণ্য অস্ট্রেলিয়ান ছোলা কেজিতে ৩ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। এছাড়া মিয়ানমারের ছোলা কেজিতে ৭ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬৮ টাকায়। মশুর ডাল ২ টাকা কমে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৩ টাকা এবং মটর ডাল কেজিতে ৩ টাকা কমে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৭ টাকায়। অন্যদিকে চিড়ার মণ ১৫০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩৫০ টাকা এবং সেমাই প্রতি মণ ৫০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪৫০ টাকায়। সাদা মটরের কেজি ২ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা, চিনি (৫০ কেজি) ৫০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ১১০ টাকা, পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা এবং আদা ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। অপরদিকে ভোজ্যতেলের মধ্যে বেড়েছে পাম তেলের দাম। এছাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে সয়াবিনের দাম। বর্তমানে পাম তেলে দাম মণপ্রতি ১৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৯০০ টাকায়। এছাড়া সয়াবিন তেল প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ২০০ টাকায়।
জানতে চাইলে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, পাইকারিতে প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমেছে। বাজারে লকডাউনের এখন তেমন কোনো প্রভাব নেই। তবে ব্যাংকিং লেনদেনের সময়সীমা কম হওয়ায় অনেক পার্টির থেকে টাকা পেতে সমস্যা হচ্ছে। মাত্র আড়াই ঘণ্টা লেনদেনের সময় আসলে কিছুই না। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল হোসেন বলেন, লকডাউন শুরুর পর থেকে চাক্তাই খাতুনগঞ্জে বেচাবিক্রি বেড়ে গেছে। প্রান্তিক এলাকা এবং নগরীর আশপাশে বিভিন্ন উপজেলার ব্যবসায়ীরা পণ্য কিনতে ছুটে আসছেন। ফলে চাক্তাই খাতুনগঞ্জে দিনভর যানজট ছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবৃহস্পতিবারের মধ্যে দোকান খোলার সিদ্ধান্ত না এলে কর্মসূচি
পরবর্তী নিবন্ধনানা অজুহাতে বাইরে বের হচ্ছে মানুষ, বাড়ছে শঙ্কা