সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় অভিযুক্ত টেকনাফ থানার সাবেক কন্সটেবল রুবেল শর্মাকে ৭ দিনের রিমান্ড শেষে ফের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে র্যাব সদস্যরা রিমান্ড শেষে আদালতে সোপর্দ করলে আদালতের নির্দেশে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
রুবেল শর্মা টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপের নানা অপকর্মের সহযোগী হিসাবে পরিচিত।
তাকে সিনহা হত্যা মামলার সন্দেহজনক আসামী হিসাবে গত ১৪ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করে র্যাব।
পরে গত ৩০ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হলে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
গত ২ অক্টোবর তাকে র্যাব হেফাজতে নিয়ে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়।
রিমান্ডে সিনহা হত্যা মামলা সম্পর্কে তার কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব ১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ খায়রুল ইসলাম। তবে সিনহা হত্যা সম্পর্কে এখনও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেননি রুবেল শর্মা।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ খায়রুল ইসলাম বলেন, “১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নয়; রিমান্ড শেষ হওয়ায় রুবেল শর্মাকে আদালতে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায় এপিবিএন’র চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান।
এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহত মেজর (অব.) সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেন।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলামকে।
মামলায় ওসি প্রদীপসহ ৭ আসামী আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বাকি ২ জন পুলিশ সদস্য নয় বলে জানায় জেলা পুলিশ।
পরে মামলায় আরো ৭ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৮ জন পুলিশ সদস্য, ৩ জন এপিবিএন সদস্য ও ৩ জন স্থানীয় বাসিন্দা।
ইতোমধ্যে গ্রেফতারকৃতদের বিভিন্ন দফায় রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের পর ওসি প্রদীপ ও রুবেল শর্মা ছাড়া বাকি ১২ আসামী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।
এদিকে মেজর সিনহা হত্যার ঘটনায় নজিরবিহীনভাবে কক্সবাজার জেলার সকল পুলিশ সদস্যকে অন্যত্র বদলি করে দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের নবাগত পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান গত ২৩ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব নিয়েছেন।
এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনকে কক্সবাজার থেকে রাজশাহীতে বদলি করা হয়।
এরপর ২১ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সহকারী পুলিশ সুপার মর্যাদার ৭ কর্মকর্তাকে, ২৩ সেপ্টেম্বর জেলার ৮ থানার ওসিসহ ৩৪ পরিদর্শক এবং এসআই ও এএসআইসহ ২৬৪ পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়। এরপর সর্বশেষ ২৪ সেপ্টেম্বর একযোগে বদলি করা হয় কক্সবাজার পুলিশের ১০৭৫ কনস্টেবলকে।