কন্টেনার জাহাজ চলাচলে যুক্ত হচ্ছে তুরস্ক ও লিবিয়া

চট্টগ্রাম-ইতালি রুট আমদানি-রপ্তানিতে সাশ্রয় হবে সময়, কমবে খরচ

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২ জুন, ২০২২ at ৪:০২ পূর্বাহ্ণ

এবার চট্টগ্রামের সাথে সরাসরি কন্টেনার জাহাজ চলাচলে যুক্ত হচ্ছে তুরস্ক এবং লিবিয়া। চট্টগ্রামইতালি রুটের জাহাজে উপরোক্ত দুটি দেশের পণ্যও আনা নেয়া করবে। এতে দেশের আমদানিরপ্তানি বাণিজ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মন্তব্য করে সূত্র বলেছে, লিবিয়ার সাথে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য ব্যবসাবাণিজ্য না থাকলেও তুরস্কের সাথে যথেষ্ট ব্যবসা রয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে ইউরোপের প্রথম রুট হিসেবে চট্টগ্রামইতালি জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে এই সার্ভিসটি সবার নজর কেড়েছে। বিশেষ করে ইতালি থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের কেনা ২২ কোটি টাকা দামের হাইস্পীড বোট এই জাহাজে সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায়। এই রুটে জাহাজ চলাচল না থাকলে উক্ত বোটটিকে প্রথমে সিঙ্গাপুর, কলম্বো কিংবা মালয়েশিয়ার কোনো বন্দরে এনে নামাতে হতো। পরবর্তীতে ওখান থেকে আবারো চট্টগ্রামমুখী জাহাজে বোঝাই করে আনতে হতো। এতে সর্বাধুনিক এই বোটটিকে দেশে আনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট বেগ পেতে হতো। অথচ ইতালি থেকে সরাসরি চট্টগ্রামে জাহাজ থাকায় ওই বোটটিকে একেবারে জাহাজে বোঝাই করে শক্ত করে বেঁধে নেয়া হয়েছিল। চারদিকে কন্টেনারের ঘের তৈরি করে সুন্দর করে বোটটিকে মাঝখানে বসানো হয়েছিল। এতে স্পিডবোটটি পুরোপুরি ঠিকঠাক এবং ঝুঁকিমুক্তভাবে দেশে পৌঁছায়।

চট্টগ্রামইতালির সম্ভাবনাময় নতুন এই রুটটিকে তুরস্ক এবং লিভিয়ার সাথে যুক্ত করা হচ্ছে। চট্টগ্রামইতালি রুটে জাহাজ পরিচালনাকারী ইতালিয়ান শিপিং কোম্পানির ‘ক্যালিপসো কোম্পানি ডি নেভিগেশন’ নিজস্ব জাহাজ ‘এমভি কেপ ফ্লোরেস’ আগামী ৮ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাচ্ছে। ফিরতি পথে এই জাহাজটিতে ইউরোপের পাশাপাশি তুরস্ক এবং লিবিয়ার কন্টেনারও বোঝাই করা হবে।

চট্টগ্রামইতালি রুটে জাহাজ পরিচালনাকারী কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে চট্টগ্রামে অবস্থিত রিলায়েন্স শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিকস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাশেদ গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা চট্টগ্রামইতালি রুটকে আরো জনপ্রিয় করতে তুরস্ক এবং লিবিয়াকেও এই রুটে যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি। ফলে চট্টগ্রামের একজন ব্যবসায়ী অতি সহজে তুরস্ক ও লিবিয়ায় থেকেও পণ্য আমাদের জাহাজে আনা এবং পাঠানোর সুযোগ পাবেন। এতে খরচ কমবে। সময়ও সাশ্রয় হবে। যা দেশের আমদানিরপ্তানি বাণিজ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

মোহাম্মদ রাশেদ জানান, ইতালি থেকে পণ্য বোঝাই জাহাজ এমভি ‘এমভি কেপ ফ্লোরেস’ আগামী ৮ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে। এটি যদি সরাসরি বার্থিং পায় তাহলে একদিন পরই ইতালির পথ ধরতে পারবে। জাহাজটি ইতালির জন্য ৫০০ টিইইউএস রপ্তানিপণ্য বোঝাই কন্টেনার নিয়ে যাত্রা করবে। এতে কোনো ব্যবসায়ী ইচ্ছে করলে তুরস্ক এবং লিবিয়ার জন্য পণ্য পাঠাতে পারবেন। চট্টগ্রাম থেকে ইতালির সালেরনো বন্দরে পণ্য পৌঁছাতে ১৯ থেকে ২০ দিন সময় লাগে। ওখান থেকে ওই কোম্পানির নিয়ন্ত্রনেই নিজস্ব ফিডার জাহাজ এমভি কে ওশান সালেরনো থেকে তিনদিনে পৌঁছাবে লিবিয়ার মিসুরাতা বন্দরে। এরপর দক্ষিণ তুরস্কের মারজিন বন্দরে পৌঁছতে জাহাজটির সময় লাগবে সাতদিন। এই বন্দর থেকে তুরস্কের অপর বন্দর ইজমির পৌঁছতে লাগবে আরো দুদিন। ইতালি থেকে ১০ দিনে জাহাজটি তুরস্কের ইস্তান্বুল বন্দরে পৌঁছাবে। ফিরতে পথে জাহাজটি আবারো বন্দরগুলো ঘুরে ইতালির সালেরনো বন্দরে পৌঁছাবে। যেখান থেকে সরাসরি পৌঁছাবে চট্টগ্রামে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএকাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা
পরবর্তী নিবন্ধবলাকা গ্রুপের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ