কনসালটেন্ট নিয়োগে বিলম্ব, ২৪১ কোটি টাকার প্রকল্পে ধীরগতি

কর্ণফুলী গ্যাসের প্রিপেইড মিটার

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:৩৭ পূর্বাহ্ণ

কনসালটেন্ট নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জটিলতার কারণে পিছিয়ে যাচ্ছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) ২৪১ কোটি টাকার এক লাখ প্রিপেইড মিটার প্রকল্পের কাজ। যে কারণে চলতি মাসে (ডিসেম্বর) গ্রাহকদের কাছ থেকে আবেদন গ্রহণের কথা বলা হলেও কার্যত তা হচ্ছে না। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথম পর্যায়ে কনসালটেন্ট নিয়োগের টেন্ডার বাতিল হওয়ায় শুরু করা যাচ্ছে না প্রকল্পের কাজ।
কেজিডিসিএল সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে আবাসিক গ্রাহকদের ব্যবহৃত গ্যাসের অপচয় রোধের লক্ষ্যে ‘ন্যাচারাল গ্যাস ইফিসিয়েন্সি প্রজেক্ট (ইন্সটলেশন অফ প্রি-পেইড গ্যাস মিটার ফর কেজিডিসিএল পার্ট-৩)’ নামের তৃতীয় প্রকল্প হাতে নেয় কেজিডিসিএল। ৬০ হাজার মিটার সংযোজনে প্রথম প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রামে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় প্রিপেইড মিটার। যে কারণে আরও এক লাখ গ্রাহককে প্রিপেইড মিটার সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রায় দুই বছর আগে ২৫৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকায় প্রকল্পটি হাতে নেয় কর্ণফুলী গ্যাস। পরবর্তীতে পরিবর্ধন, পরিমার্জন হয়ে ২৪১ কোটি টাকায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতির পর প্র্রকল্পটি বাস্তবায়নে অনুমোদন দেয় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়। তিন বছর মেয়াদী প্রকল্পটি ২০২৪ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করার কথা রয়েছে।
প্রকল্পটির আওতায় নগরীর বায়েজিদ, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, চকবাজার, পাহাড়তলী, খুলশী, বাকলিয়া, সদরঘাট, কোতোয়ালী, হালিশহর, ডবলমুরিং, বন্দর, ইপিজেড, পতেঙ্গা, আকবরশাহ ও জেলার কর্ণফুলী, হাটহাজারি, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, পটিয়া, বোয়ালখালী, চন্দনাইশ, আনোয়ারা উপজেলা এলাকার গ্রাহকদের পুরোনো মিটারের স্থলে এসব প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হবে।
জাইকার অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রথম প্রকল্পের ৬০ হাজার প্রিপেইড মিটার গ্রাহকরা পিওএস (পয়েন্ট অব সেলস) স্টেশন ক্রেডিট কিনে প্রিপেইট মিটার রিচার্জ করে গ্যাস ব্যবহার করে থাকেন। ১ লাখ প্রিপেইড মিটার প্রকল্পে গ্রাহকরা ঘরে বসে মোবাইল ব্যাংকিং ও অনলাইনের মাধ্যমেও প্রিপেইড বিল পরিশোধ করার সুযোগ রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের এক কর্মকর্তা।
কর্ণফুলী গ্যাসের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পোস্টপেইড গ্রাহকরা প্রতি দুই চুলার মিটারে মাসে গড়ে ৭৭ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন। কিন্তু প্রথম প্রকল্পে সংযোজিত প্রিপেইড মিটার গ্রাহকরা মাসে গড়ে ৪০-৪৮ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করছেন। এতে একটি মিটারেই মাসে ২৭-২৮ ঘনমিটার গ্যাস সাশ্রয় হচ্ছে।
কেজিডিসিএলের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্রথমে ৬০ হাজার প্রিপেইড মিটার প্রকল্প চট্টগ্রামে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। গ্রাহকের চাহিদার কথা বিবেচনা করেই নিজস্ব অর্থায়নে এক লাখ প্রিপেইড মিটার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ২৪১ কোটি টাকার প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়েরও সম্মতি পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ কর্মকর্তা বলেন, ইতোমধ্যে কনসালটেন্ট নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে প্রথম পর্যায়ে কনসালটেন্ট নিয়োগের টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করায় প্রকল্পের কাজ কিছুটা পিছিয়েছে। এখন রি-টেন্ডার হচ্ছে। তবে প্রকল্পে আনুষাঙ্গিক অন্যান্য কাজগুলো এগিয়ে রাখা হচ্ছে। কনসালটেন্ট নিয়োগ হয়ে গেলেই গ্রাহকদের কাছ থেকে আবেদন নেওয়ার কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ও কর্ণফুলী গ্যাসের উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. নাহিদ আলম প্রকল্পের কাজে চলমান এবং অগ্রগতি হয়েছে জানিয়ে আর কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅভিযান-১০ লঞ্চের মালিক হামজালাল গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধট্রায়াল দেওয়ার কথা বলে বাইক নিয়ে উধাও