কখনো কর্নেল, কখনো এসপি

চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে হাতিয়েছেন টাকা, প্রতারক আটক

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৫ অক্টোবর, ২০২০ at ৫:২৫ পূর্বাহ্ণ

কখনো গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের কর্নেল, কখনো ডিবির এসপি। এসব পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া তার পেশা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ‘চোরের দশ দিন, গৃহস্থের একদিন’ প্রবাদ বাক্যকে সত্যি করে অবশেষে ধরা পড়লেন তিনি। চম্পক বড়ুয়া নামে ওই ব্যক্তিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ক্যাম্পাসের পার্কিং এলাকা থেকে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় আটক করা হয়েছে। হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাঙ্গুনিয়ার ইছামতি এলাকার অলোকেন্দু বড়ুয়ার ছেলে চম্পক বড়ুয়ার বর্তমান ঠিকানা নগরীর চান্দগাঁও এলাকার ফরিদের পাড়া বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চম্পক দীর্ঘদিন ধরে গোয়েন্দা সংস্থার কর্নেল ও এসপি পরিচয় দিয়ে চমেক হাসপাতাল এলাকায় বিভিন্ন জনের সাথে প্রতারণা করে আসছেন। এর বাইরে নিজেকে আলোচিত মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবেও পরিচয় দিতেন তিনি। এসব পরিচয় ব্যবহার করে ভালো চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে একাধিক জনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রতারণার মাধ্যমে হাসপাতাল এলাকার সেকুল মিয়া নামে এক অ্যাম্বুলেন্স চালকের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা হাতিয়ে নেন চম্পক। বাদ যাননি আনসার সদস্যও।
পরিচয়ের পর ছোট ভাইয়ের জন্য ভালো চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রলোভনে চম্পক ৩৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ চমেক হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসার সদস্য যমুনা বেগমের। আর অ্যাম্বুলেন্স চালক সেকুল মিয়ার অভিযোগ, তার স্ত্রীর সাথে পরিচয়ের সূত্র ধরে চম্পকের সাথে পরিচয়। তিন মাস আগে হঠাৎ একদিন চার হাজার টাকা চায় চম্পক। চম্পক নিজেকে সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বলে তার বেতনের কার্ডটি হারিয়ে গেছে। জরুরি ভিত্তিতে মামলার তদন্ত কাজে কঙবাজার যেতে হচ্ছে। কিন্তু পকেটে টাকা নেই। তাই চার হাজার টাকা ধার হিসেবে চায়। প্রথমে বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও পরবর্তীতে বিশ্বাস করে ২ হাজার টাকা ম্যানেজ করে চম্পকের হাতে তুলে দেন তিনি। তিন দিন পর টাকাটা ফেরত দিতে অনুরোধ করেন।
এরপর থেকে ড্রাইভারের ভালো একটি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তিন লাখ টাকা দাবি করেন চম্পক। সেকুল মিয়া এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয় জানালে ধাপে ধাপে টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন চম্পক। নিজের দুই হাজার টাকা চাইলে এভাবে বিভিন্ন প্রলোভনের কথা শোনাতে থাকেন। প্রায় দুই মাস পর গতকাল সন্ধ্যায় হাসপাতালের পার্কিং এলাকায় চম্পককে দেখতে পেয়ে হাসপাতালের আনসার কমান্ডারকে খবর দেন সেকুল মিয়া। পরে পুলিশকেও খবর দেওয়া হলে হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে চম্পককে আটক করে রাখা হয়।
এই তথ্য নিশ্চিত করে হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া আজাদীকে বলেন, ওই প্রতারককে আটকের পর গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন। প্রতারককে পাঁচলাইশ থানায় হস্তান্তরের পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবন্ধ কারখানায় সিবিএ নির্বাচনের ডামাঢোল
পরবর্তী নিবন্ধপ্রফেসর হওয়ার আগেই চলে গেলেন ক্যান্সার চিকিৎসক তাপস