কক্সবাজারে পাহাড় কেটে প্লট বাণিজ্য এবং স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগে চার সরকারি কর্মচারিসহ আট জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। গতকাল সোমবার পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম মামলাটি দায়ের করেন বলে কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীর–উল–গীয়াস জানান।
মামলার আসামিরা হলেন জেলা কালেক্টরেট চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী সমিতির সভাপতি ও কক্সবাজার পৌরসভার কানাইয়া বাজারের নুরুল হুদার ছেলে সুলতান মোহাম্মদ বাবুল (৪৫), পৌরসভার টেকপাড়ার মৃত আবুল আহামদের ছেলে জয়নাল আবেদীন ওরফে জয়নাল সওদাগর (৬২), সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের জানারঘোনার মৃত মোহাম্মদ ইলিয়াসের ছেলে ও সদর ইউএনও কার্যালয়ের জারিকারক জুলফিকার আলী ভুট্টো (৫২), জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক ও পেকুয়া উপজেলা সদরের হরিণাফাঁড়ির আনোয়ার হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ ইয়াছিন (৪০), কক্সবাজার পৌরসভার কলাতলী সৈকতপাড়ার মৃত লাল মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ হোসাইন ফকির ওরফে মাছন ফকির (৫৫), টেকনাফ উপজেলার হ্নীলার মো. শাহজাহান (৪৩), কক্সবাজার পৌরসভার কলাতলী ৫১ একর এলাকার মো. ইয়াকুব ওরফে ইয়াকুব মাঝির ছেলে দিল মোহাম্মদ (৩৫) এবং একই এলাকার মৃত আবুল হোসেন প্রকাশ ভান্ডারির ছেলে মো. ছিদ্দিক ওরফে ছিদ্দিক মাঝি (৪৫)। খবর বিডিনিউজের।
মামলার এজাহারের বরাতে মুনীর–উল–গীয়াস বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে কঙবাজার শহরের কলাতলীতে সরকারি পাহাড় কেটে পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগ আনা হয়। পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করেছে। পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী এনভায়রনমেন্ট পিপলস–এর সভাপতি রাশেদুল মজিদ বলেন, দেড় মাস আগে কঙবাজার শহরের কলাতলীর ৫১ একর এলাকার পূর্ব পাশে জয়নাল সওদাগরের ঘোনায় ৩০/৪০ জন শ্রমিক দিয়ে ৫ একরের একটি বিশাল পাহাড়ের অর্ধেক কেটে ফেলেন জেলা কালেক্টরেট অফিসের এক কর্মচারীর নেতৃত্বে একদল লোক।
এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নিতে এবং পাহাড় কাটা বন্ধ করে বনায়নের মাধ্যমে পাহাড় সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপলস দুই সচিবসহ ১২ সরকারি কর্মকর্তাকে চিঠি দেয় বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, সরকারি কর্মচারীরা প্রকাশ্যে পাহাড় কাটায় জড়িত হওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাদের বিরুদ্ধে শুধু মামলা করলেই হবে না, বনায়নের মাধ্যমে পাহাড় সংরক্ষণের উদ্যোগও নিতে হবে।
অন্যদিকে পাহাড় কাটার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠায় সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ৩০ মে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান কঙবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আমিন আল পারভেজ। তিনি বলেন, সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগের ব্যাপারে তদন্তের পাশাপাশি বিভাগীয় কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এতে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।