ওষুধ কোম্পানিগুলোকে সেবার মান উন্নয়ন করা প্রয়োজন

মীর খালেদ মাহমুদ বাবর | শনিবার , ৩ জুন, ২০২৩ at ৫:২৯ পূর্বাহ্ণ

আমাদের চারপাশে হাসপাতালগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায় প্রতিটি হাসপাতালের সামনে কিছু ভদ্রলোক অবস্থান করেন। তারা মূলত বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির অনুকূলে কাজ করেন। তাদের কাজ হলো, এলাকাভিত্তিক হাসপাতালগুলোর চারপাশে অবস্থান করা এবং তথ্য সংগ্রহ করা। তাদের কোম্পানির ওষুধগুলো বাজারে কেমন চলছে এবং ডাক্তাররা তাদের কোম্পানির ওষুধগুলো সেবন তালিকায় লিখছেন কি না তা জানার জন্য তারা প্রতিনিয়ত রোগীদের বিরক্ত করেন। ওষুধ তালিকার ছবি সংগ্রহ করেন উর্ধ্বতনকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য। এর পেছনে অবশ্য আরও একটি কারণ রয়েছে। অনেক ডাক্তার ওষুধ কোম্পানির এসব লোকদের কাছে নিজেদের সততাকে বিক্রি করে থাকেন। এমনকি সরকারি হাসপাতালে রোগী দেখার সময়টাতে ওষুধ কোম্পানির লোকদের সময় দেন। তাদের জন্য আলাদা একটা সময় নির্ধারণ করা থাকে যা বাস্তবিক অর্থে অনৈতিক। কোম্পানির লোভনীয় প্রস্তাব গ্রহণ করতে গিয়ে রোগীদের সেবার কথা মাথায় রাখেন না অনেক ডাক্তার। কোম্পানির দামী ওষুধগুলো সেবন তালিকায় সংযোজন করছেন। ভিটামিন এর কথা বলে, দামীদামী সব ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। সমাজের উঁচু স্তরের এবং শিক্ষিত এই ডাক্তারদের কারণে ওষুধের দাম যেভাবে বাড়ছে তেমনি রোগীরাও চরম দুর্ভোগে পড়ছেন। এর চেয়ে বড় সমস্যা হলো ওষুধ কোম্পানিগুলো উৎপাদন খরচ, কর্মচারী খরচ, বিজ্ঞাপন খরচের পাশাপাশি ডাক্তারদের ব্যয়বহুল চাহিদা মেটানোর খরচগুলো ওষুধের মূল্যের সাথে যুক্ত করছেন। এটি অবশ্যই ঘৃণিত একটি কাজ। আমরা প্রতিনিয়ত বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি কিন্তু আমাদের সচেতন হওয়ার চেয়ে বেশি কিছু করার নেই। ওষুধ কোম্পানিগুলো যদি ব্যবসায়িক চিন্তাচেতনা বাদ দিয়ে সেবার কথা ভেবে মাঠে কাজ করতেন তবে আজ আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের এতো ভোগান্তিতে পড়তে হতো না। তাই ডাক্তারদের উচিত, কোম্পানিগুলোর লোভনীয় প্রস্তাবে রাজি না হয়ে সততার সঙ্গে সেবা প্রদান করা। সেই সাথে ওষুধ কোম্পানিগুলোর উচিত ডাক্তারদের পেছনে না ঘুরে সেবার মান উন্নয়ন করা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅনলাইন জুয়া বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি
পরবর্তী নিবন্ধমানুষ!