‘ওরে ভোঁদড় ফিরে চা/ খুকুর নাচন দেখে যা’

মাহিয়া আলম মেঘলা | বুধবার , ১ জুন, ২০২২ at ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ

ভোঁদড়’ বর্তমানে এদের খুব কমই চোখে পড়ে। বাংলাদেশে ওরিয়নটাল ইন্ডিয়ান স্মল কোল্ড ওটার, ইউরেসিয়ান ওটার এবং ইন্ডিয়ান স্মোথ কোটেড ওটারএই তিন প্রজাতির ভোঁদড়ের সন্ধান পাওয়া যায়। ভোঁদড় নদী ও সমুদ্র উভয় স্থানেই বাস করে। তবে প্রজননকালে স্থলে অবস্থান করে। ভোঁদড়কে বলা হয় ‘সমুদ্রের নায়ক’। এরা সমুদ্রের বড় বড় ঢেউয়ে খেলতে পছন্দ করে এবং ঢেউগুলোকে নিজেদের মধ্যে নিয়ে নেয় ফলে দুর্যোগ মোকাবেলায় তারাও ভূমিকা পালন করে এছাড়া ধ্বংসকারী বিভিন্ন মাছকে তারা খেয়ে ফেলে। বন্ধুসুলভ এই উপকারী প্রাণীটি মাত্র ১৬ বছর বেঁচে থাকে। সমাজবদ্ধ প্রাণী হওয়ায় বাংলাদেশের কিছু এলাকায় মাছ শিকার করার জন্য জেলেরা এদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। কিন্তু মানুষের বিভিন্ন অসচেতনতা ও কুসংস্কারের ফলে ভোঁদড়ের সংখ্যা যেমন দিন দিন কমে যাচ্ছে, ঠিক তেমনি এই পেশাটিও বিলুপ্তির পথে। তবে নড়াইল এখনো কিছু জেলে ভোঁদড়দের পালন করে আসছে তাদের সন্তানের মতো। কিন্তু নদী ভরাট করা, খরা ইত্যাদির কারণে যে সময়ে মাছ কম পাওয়া যায় সে সময় তাদের খাদ্যের যোগান দেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। অনেক মনে করেন ভোঁদড় পুকুরের সব মাছ খেয়ে ফেলে, এ কারণে এসব ভ্রান্ত ধারণার মানুষ নির্বিচারে তাদের মেরে ফেলছে। ভোঁদড়ের চামড়ার অনেক দাম মনে করে অবৈধভাবে অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের শিকার করছে। মানুষের এসব অপকর্মের কারণে ধীরে ধীরে প্রাণীজগতের এই বৈচিত্র্যময় প্রাণী পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মনে রাখা উচিত এভাবে সকল প্রাণী বিলুপ্ত হতে থাকলে মানুষের অস্তিত্ব সংকটের মুখে পরে যাবে। প্রাণীজগতের প্রতিটি প্রাণীই পরিবেশের ভারসাম্য টিকিয়ে রাখার জন্য জরুরি। তাই মানবসত্তার অস্তিত্বের কথা চিন্তা করে হলেও আমাদের উচিত এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরি ও বৃদ্ধি করা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহালদা ভাঙ্গে; হালদা বদলায়; বিশ্বজিৎ গড়ে-এগিয়ে যায়
পরবর্তী নিবন্ধবাঙালির মনোজগত গঠন