চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ১৫ থানার সাংগঠনিক সমন্বয় কমিটির আহ্বায়কদের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে অসমাপ্ত ইউনিট–ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলনের সিদ্ধান্ত হয়েছে নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে। বৈঠকে আগামী এক–দুই দিনের মধ্যে ১৫ থানার সাংগঠনিক কমিটির আহ্বায়কদের সাথে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বসে প্রথমে কোন ওয়ার্ড ও থানায় সম্মেলন শুরু হবে তার তারিখ নির্ধারণেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। মহানগর আওয়ামী লীগের ১৩২টি ইউনিটের মধ্যে ২৭টি ইউনিট কমিটির সম্মেলন হয়নি; প্রথমে এই ২৭টি ইউনিটের সম্মেলনের ব্যাপারে জোর দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান সভায় উপস্থিত নগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনসহ অসমাপ্ত ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলনের রূপরেখা নির্ধারণে নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের গতকালের সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে গত বুধবারের সভা স্থগিত করা হয়েছিল।
গতকাল রাত ৮টায় যথারীতি মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জহিরুল আলম দোভাষের ফিরিঙ্গী বাজারস্থ বাসভবনে শুরু হয়। সভার শুরুতেই অনেক তর্কবিতর্ক শেষে কেন্দ্রীয় রোডম্যাপ অনুযায়ী ঐক্যবদ্ধ ভাবে অসমাপ্ত ইউনিট–ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন শেষে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সিদ্ধান্ত হয়। গতকালের সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী, নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম এমপি ও নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব বদিউল আলমও উপস্থিত ছিলেন। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় নগরীর যে সব ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন বাকি রয়েছে সেগুলোতে সম্মেলন করার প্রস্তুতির সার্বিক দিক উপস্থাপন করে বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন।
গতকালের সভায় কেন্দ্রীয় রোডম্যাপ অনুযায়ী নগরীর ১৫ থানার সমন্বয় কমিটির আহ্বায়কদের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে অসমাপ্ত ইউনিট–ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলনের সার্বিক দিক নিয়ে বক্তব্য রাখেন, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী, সহ সভাপতি এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব বদিউল আলম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী।
সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান আজাদীকে বলেন, আজকের সভায় কেন্দ্রীয় রোডম্যাপ অনুযায়ী ঐক্যবদ্ধ ভাবে সম্মেলনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সাথে নগর আওয়ামী লীগের ইউনিট–ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলনের জন্য আগে কেন্দ্র থেকে নগরীর প্রতিটি থানায় সমন্বয় কমিটির ১জন আহ্বায়ক করা হয়েছিল; ওই সমন্বয় কমিটির আহ্বায়কগণ বহাল থাকবেন। যে ইউনিটে–ওয়ার্ডে সমস্যা নেই–সেগুলোর সমস্যা আমরা সমাধান করে ফেলব। যেগুলোর ব্যাপারে আপত্তি আছে সেগুলোর ব্যাপারে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত দেবে। যেমন একটি ওয়ার্ডে ৩টি ইউনিট থাকে। যেসব ওয়ার্ডের ৩টি ইউনিট সম্মেলন শেষ হয়েছে–সেসব ওয়ার্ডের সম্মেলন আমরা করে ফেলবো–এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আগামী ১–২ দিনের মধ্যে ১৫ থানার সমন্বয় কমিটির আহ্বায়কদের সাথে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বসে যে সব ইউনিট–ওয়ার্র্ড ও থানায় সমস্যা নেই সেগুলোর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
তিনি বলেন, চকবাজার থানাধীন ২টি ওয়ার্ডের সম্মেলন শেষ হয়েছে; সুতরাং এখন চকবাজার থানার সম্মেলন করতে কোনো অসুবিধা নেই।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম উদ্দিন চৌধুরী, সহ সভাপতি ও সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ নোমান আল মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান ও চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর।
এই ব্যাপারে নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন আজাদীকে বলেন, যে সব ওয়ার্ড ও থানা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই সেগুলোর সম্মেলন আগে শুরু হবে। যেসব ওয়ার্ডের আওতাধীন ইউনিট গুলোর সম্মেলন শেষ হয়েছে–সেসব ওয়ার্ডের সম্মেলন করতে কোনো অসুবিধা নেই। সে ওয়ার্ডগুলোর সম্মেলন শুরু হবে। আর যে সব থানার আওতাধীন ওয়ার্ডে সম্মেলন শেষ হয়েছে–সে সব থানার সম্মেলন করতেও কোনো অসুবিধা নেই; সেসব থানার সম্মেলন শুরু হবে। থানা সম্মেলন শেষে সেপ্টেম্বরে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের প্রস্তুতি শুরু হবে। অক্টোবরে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ১৩২টি ইউনিটের মধ্যে এখনো ২৭টি ইউনিটে সম্মেলন হয়নি। ৪৪ ওয়ার্ডের মধ্যে ২৯টি ওয়ার্ডে সম্মেলন এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়নি। ১৫টি সাংগঠনিক থানার মধ্যে মাত্র একটি থানায় সম্মেলন হয়েছে।
গতকালও নগর আওয়ামী লীগের র্শীষ নেতাদের জন্য কাবাব, পরটা, নানরুটি, সাদা ভাত, গরু ও খাসির মাংস, নানান পদের মাছ, ডিম, একাধিক পদের ভর্তার আয়োজন করেছেন নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ।