‘গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা/ কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা/ রাশি রাশি ভারা ভারা/ ধান কাটা হল সারা/ ভরা নদী ক্ষুরধারা/ খরপরশা/ কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা।’
এসেছে চির যৌবনা বর্ষা। ১৪২৮ বঙ্গাব্দের আষাঢ়ের প্রথম দিবস শুরু আজ। বছর ঘুরে আবারও এসেছে বর্ষণমুখর দিন। এরই মাঝে বদলাতে শুরু করেছে প্রকৃতি। এতদিনের রুক্ষ শুষ্ক প্রকৃতি বৃষ্টির জলে ধুয়ে সবুজ সতেজ হচ্ছে। উর্বর হচ্ছে ফসলের মাঠ।
‘বৃষ্ট বৃষ্টি জলেদের চাঁদনি/ দে সোনা এনে দে/ মন সুখ রোশনি।’ বর্ষাকে স্বাগত জানানো হচ্ছে ‘রিম্িঝম্ রিম্িঝম্ ঘন দেয়া বরষে।/ কাজরি নাচিয়া চল, পুর-নারী হরষে…। ভাটি বাংলার সাধক উকিল মুন্সি ঘাটে নতুন পানি দেখে উতলা হয়ে গেয়েছিলেন : যেদিন হইতে নয়া পানি আইলো বাড়ির ঘাটে সখি রে/ অভাগিনীর মনে কত শত কথা ওঠে রে…। বাঙালির হৃদয়ে জমে থাকা কথা বর্ষায় ভাষা পায়। মন জাগিয়ে দিতে, আবেগ ভালবাসায় ভরিয়ে দিতে আসে বর্ষা। এবারও এসেছে।
ষড়ঋতুর বাংলাদেশে অনেক কিছুই আর আগের মতো নেই। বর্ষাও দিন ক্ষণ অতো মানে না। ঝড়ো হাওয়া ভারি বর্ষণ মূলত আভাস দিচ্ছল- বর্ষা আসছে। আজও লঘুচাপ রয়েছে। ৩ নং সতর্কতা রয়েছে, হতে পারে ভারী বর্ষণ।
ঋতুর হিসেবে আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল। এ সময় জলীয় বাষ্পবাহী দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। নিয়মিত বর্ষণে বদলে যায় চারপাশের পরিবেশ। বর্ষার ভারী বর্ষণে শরীর ধুয়ে নেয় প্রকৃতি। বেলি, বকুল, জুঁই, দোলনচাঁপা, গন্ধরাজ, হাসনাহেনার ঘ্রাণে ভরে ওঠে চারপাশ। আর মিষ্টি হাসি হয়ে ফোটে ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল।’ ময়ূর পেখম মেলে নাচে। মহামারীতে এবারেও বর্ষার আয়োজন থাকবে অনলাইনে।