এমন বৃহস্পতি আগে দেখেনি মানুষ

| বুধবার , ২৪ আগস্ট, ২০২২ at ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ

সৌর জগতের সবথেকে বড় গ্রহ বৃহস্পতির এক অবিশ্বাস্য ছবি তুলেছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ, যেমনটা এর আগে কখনও দেখা যায়নি। বিশ্বের সবথেকে বড় ও শক্তিশালী এ টেলিস্কোপে ধরা পড়া এই ছবি গত সোমবার প্রকাশ করেছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। খবর বিডিনিউজের।
গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বৃহস্পতির উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর অভূতপূর্ব বর্ণিল আলোকচ্ছটা এবং ঘূর্ণায়মান মেরু কুয়াশার এই ছবি গত জুলাইয়ে তুলেছে জেমস ওয়েব।
সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে বৃহস্পতির বুকে ক্ষতের মতে জ্বলজ্বলে বিশালকার সেই লাল দাগ, যা আসলে একটি ঝড় এবং তার আকার এতটাই বড় যে পুরো পৃথিবীকেও গ্রাস করে ফেলতে পারে। ছবিতে সেই গ্রেট রেড স্পটের আশপাশে দেখা যাচ্ছে অসংখ্য ছোট ঝড়ের চিহ্ন। নাসার প্রকাশ করা ছবিগুলোর মধ্যে একটি ওয়াইড ফিল্ড ছবিতে বৃহস্পতিকে ঘিরে থাকা উজ্জ্বল বলয়ের নাটকীয় রূপ ফুট উঠেছে। ছায়াপথগুলোর চকচকে পটভূমিতে ছোট্ট দুটি চাঁদকেও উজ্জ্বল দেখা যাচ্ছে।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার জ্যোতির্বিদ ইমকে ডি প্যাটার এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা বৃহস্পতিকে এভাবে কখনও দেখিনি। এটা অবিশ্বাস্য। আমরা সত্যিই আশা করিনি যে এই ছবি এত ভালো হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের গবেষক দল বলছেন, ছবিতে উঠে আসা গ্রহের বৈশিষ্টগুলো বুঝতে ইনফ্রারেড ছবিগুলোতে কৃত্রিমভাবে সাদা, নীল, সবুজ, হলুদ আর কমলা রঙ দেওয়া হয়েছিল।
নাসা এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির ১ হাজার কোটি ডলারের জেমস ওয়েব টেলিস্কোপকে গত বছরের শেষ দিকে মহাকাশে পাঠানো হয় হাবল স্পেস টেলিস্কোপের উত্তরসূরি হিসাবে। বিজ্ঞানীদের আশা, মহাবিশ্বের জন্মের ১০ কোটি থেকে ২৫ কোটি বছর পর কেমন ছিল মহাবিশ্ব, সেই প্রশ্নের উত্তর দেবে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ।
বিগ ব্যাং থিওরি অনুসারে, মহাজগতের সূচনা হয়েছিল ১৩৮০ কোটি বছর আগে। নাসা গত ১২ জুলাই জেমস ওয়েবের তোলা এসএমএসিএস ০৭২৩ নীহারিকাপুঞ্জের যে ছবি প্রকাশ করেছে, সেখান থেকে আলো পৌঁছাতে সময় লেগেছে ১৩০০ কোটি বছর। অর্থাৎ, পৃথিবীর জন্মের আগে ওই নীহারিকাপুঞ্জ কেমন ছিল, সেই দৃশ্য দেখিয়েছে জেমস ওয়েব। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ এই মুহূর্তে বিশ্বের সর্বাধুনিক স্পেস অবজারভেটরি, যা বানাতে দুই দশকের মত সময় লেগেছে। প্রত্যাশা ছিল, এই টেলিস্কোপ মহাবিশ্বকে দেখার ধারণাকে আমূল পাল্টে দেবে; হয়েছেও তাই। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ দিয়ে মিলছে মহাজগতের অসংখ্য ছবি, যেখানে মহাকাশ ধরা দিয়েছে আদি চেহারায়। এই দূরবীক্ষণ যন্ত্র জোতির্বিদদের লাখ লাখ বছর আগের মহাবিশ্ব নিয়ে গবেষণায় কাজটি আরও সহজ করে দেবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজ্বালানি তেলসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে গণমিছিল ও সমাবেশ
পরবর্তী নিবন্ধফের বাড়ল সয়াবিন তেলের দাম