এভারেস্ট ছোঁয়ার স্বপ্ন ডা. বাবর আলীর

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৩ নভেম্বর, ২০২২ at ৭:৫৪ পূর্বাহ্ণ

ডা. বাবর আলী। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৫১তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী। ডাক্তারি পেশায় যুক্ত থেকেও জয় করেছেন হিমালয়ের বিশাল পর্বত। সম্প্রতি ডা. বাবর আলী আরোহণ করেছেন হিমালয়ের অন্যতম দুর্গম পর্বত ‘আমা দাবালাম’ এ।

২০১০ সালে বিশ বছর বয়সে ডা. বাবর প্রথম আরোহণ করেন দেশের সর্বোচ্চ পাহাড়ি চূড়া কেওক্রাডং। এরপর একে একে জয় করেন তাজিংডন, সাকা হাফং ও জো ত্লাং। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআরবি’র মেডিকেল অফিসার হিসেবে সিলেটে কর্মরত অবস্থায় ঠিক করেন নেপালে যাওয়ার পরিকল্পনা। স্বপ্ন দেখেন আকাশ ছোঁয়ার। পরিকল্পনা করে বের হয়ে পড়েন স্বপ্নকে সত্যিকারে রুপ দিতে।

বাবর আজাদীকে জানান, সর্বশেষ ২৫ অক্টোবর নেপালের পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট আমা দাবলাম। যার উচ্চতা প্রায় ৬৯০০ মিটার বা ২২ হাজার ৫০০ ফুট। আমা দাবলাম অর্থ মায়ের গলার হার। দূর থেকে দেখতে যতো সুন্দরই হোক, এটিতে ওঠার জন্য পাড়ি দিতে হয় পৃথিবীর ভয়ঙ্কর পথগুলোর মধ্যে একটি। তবে সাহসিকতা দিয়ে এই পাহাড়কে হার মানিয়েছেন তরুণ চিকিৎসক ডা. বাবর আলী। এই পর্বত জয় করার জন্য তিনি প্রস্তুতি নিয়েছেন অন্তত এক বছর ধরে। তারই সূত্র ধরে তিনি জয় করেছেন মাউন্ট আমা দাবলাম। মিশন শেষ করে কিছুদিন আগেই দেশে ফিরেছেন এই তরুণ চিকিৎসক। গতকাল শনিবার দৈনিক আজাদী অফিসে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, দেখতে সুন্দর লাগলেও এর পাথর আর বরফের ফরমেশন পাহাড়টিকে ভয়ঙ্কর করে তুলেছে। অনেক ক্ষেত্রে এটি অনেক ৮ হাজার মিটার পর্বতের চেয়েও ভয়ঙ্কর। এর জন্য পাহাড়ে চড়ার খুব ভালো দক্ষতা প্রয়োজন। সেই সাথে লাগবে বরফে চলার যথেষ্ট সক্ষমতা। আমি নিজেকে প্রস্তুত করেছি অনেক দিন ধরেই। বাবর বলেন, মিশন আমা দাবালাম সফল হয় ২৫ অক্টোবর। তার আগেরদিন রাতভর পাথুরে দেয়াল ও পাহাড়ের রিজলাইন ধরে হেঁটেছি। অবশেষে পাহাড়ের চূড়ায় দেশের পতাকা নিয়ে দাঁড়ানোর অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। সেই আবেগেই আপ্লুত তিনি। নিয়মিত ১০ কিলোমিটার দৌঁড়েছি আমি।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে বাবর জানান, এবার স্বপ্ন পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট জয় করা। কিন্তু আর্থিক প্রতিকূলতা এই স্বপ্নপূরণে বাধা হয়ে আছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এভারেস্টের চেয়ে উঁচু কোনো জায়গা এ পৃথিবীতে নেই। তাই মানুষ তার জীবদ্দশায় এভারেস্ট জয় করতে চায়। তবে এভারেস্ট আরোহণ করা খুবই খরচের ব্যাপার, বিশাল বিনিয়োগের ব্যাপার।

পাহাড়ে ট্রেকিং ও ক্লাইম্বিং করাও তার বাবর আলীর নেশা। পর্বতারোহণ শুরুর আগে প্লাস্টিকের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরিতে ৬৪ দিনে দেশের ৬৪ জেলা পায়ে হেঁটে বেড়িয়েছেন বাবর। তরুণ-কিশোরদের ট্রেকিং, ক্লাইম্বিংয়ে উৎসাহ দিতে চট্টগ্রামে বন্ধুরা মিলে গড়ে তুলেছেন ভার্টিকাল ড্রিমার্স নামের একটি সংগঠন। যেখানে ৬০ জন সদস্যকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর গর্বে এখন গর্বিত বাংলাদেশও। তাঁর সাথে উঁচুতে আরোহণ করছে যেন প্রিয় স্বদেশ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্কুলের শ্রেণি কক্ষে দেশীয় অস্ত্রের মজুদ
পরবর্তী নিবন্ধপুলিশ ভেরিফিকেশনে এসএমএস পদ্ধতি কতটা কাজ দিচ্ছে