এবার লড়াই করতে হবে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের বিপক্ষে

গৌরী প্রভা দাশ | শনিবার , ১৭ অক্টোবর, ২০২০ at ৫:২৭ পূর্বাহ্ণ

ধর্ষণের শাস্তি ‘মৃত্যুদণ্ড’- এ খবর কানে আসার পর থেকে মনে স্বস্তি আসলেও শান্তি আসে নি। পত্রিকার পাতায় কিংবা মিডিয়ায় চোখ রাখলেই বোঝা যায় সমাজে এমনকি নিজ পরিবারেও নারীর প্রতি সহিংসতার কোনো কমতি নেই। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পুরুষের আগ্রাসী মনোভাবের কারণে নারীরা জন্মগতভাবেই নিজেকে অসহায় ভাবে। বিভিন্নভাবে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হয়- তুমি মেয়ে, সব কিছু তোমাকে মানায় না। এভাবেই এ সমাজে একটি মেয়ের নিজেকে প্রকাশের ক্ষেত্রে রয়েছে হাজারো বাধা। মেয়েটি তার কাজে মনোযোগ দিতে গিয়ে দেখে তার চারপাশে রয়েছে অসুন্দর পরিবেশ। একটি মেয়ে সুস্থ হয়ে তখনই বেড়ে উঠতে পারে যখন সে সুস্থ পারিপার্শ্বকতার মধ্যে বড় হয়। আমরা যদি চোখ বন্ধ করে কয়েক সেকেন্ড নিজের জীবনে ফেলে আসা সময়গুলোর কথা ভাবি, সংখ্যায় খুব বেশি হবার কথা না, যারা কখনো না কখনো কামাতুর, লোলুপ ব্যক্তির অনাকাঙ্খিত স্পর্শ ও চাহনি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছেন। বেশিরভাগ মেয়েই কখনো না কখনো মানসিকভাবে আবার কেউ বা চরম শারীরিকভাবে নিগ্রহের শিকার। বাইরে তো বটেই নিজ পরিবারেও তারা আক্রান্ত। তাই এখন থেকে আবার নতুন করে যে যার অবস্থান থেকে সমাজের বিকৃত, আগ্রাসী ও উগ্র মানসিকতার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। লড়াই করতে হবে অসত্য, অসুন্দরের বিরুদ্ধে। লড়াই করতে হবে ন্যায় ও সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে, বিপন্ন মানবতাকে জাগিয়ে তোলার লক্ষ্যে। প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে হবে সমাজের নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক ও অশোভন দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনের লক্ষ্যে। কোন পরিবারকেই যেন সন্তানের অশোভন আচরণের জন্য লজ্জা বয়ে বেড়াতে না হয়। আর প্রতিবাদ করতে হবে সমাজের সকল অবিচার, অনাচার, বিবেকহীনতার বিপক্ষে। আর লড়াই ও প্রতিবাদ যখন বিপ্লবে রূপ নেবে তখন তা সর্বজনীন হবে, জাতির কাছে গুরুত্ববহ হবে। এই বিপ্লবের ফলে আসা পরিবর্তন স্থায়ী ও দেশের জন্য মঙ্গলকর হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধধর্ষকসহ সকল অপরাধীর কঠিনতম শাস্তি হোক
পরবর্তী নিবন্ধঅধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন চৌধুরী