এবার নগরের ওয়াসা মোড় থেকে তিন পুলের মাথা পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবে বিএনপি। বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামীকাল সোমবার এ কর্মসূচি পালন করার কথা রয়েছে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে গতকাল চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাছে অনুমতি চেয়ে পত্র দিয়েছে নগর বিএনপি। এতে মাইক ব্যবহারের বিষয়ও উল্লেখ করা হয়। এছাড়া গতকাল নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভাও করেছে দলটি।
বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, সরকারের পদত্যাগসহ বিএনপির ঘোষিত ১০ দফা আদায় এবং ‘রাষ্ট্র মেরামতে’ ২৭ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নে ধীরে ধীরে যুগপৎ আন্দোলন করা হবে। এতে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করতে চায় দলের হাই কমান্ড। এর অংশ হিসেবে ২৫ ডিসেম্বর সারা দেশে গণ-মিছিল এবং ১১ জানুয়ারি বিভাগীয় সমাবেশ করে। এর মধ্যে কয়েকদিন আগে সরকারের নির্বাহী আদেশে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ হারে বাড়ানো হয়। জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট হওয়ায় এ দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।
নগর বিএনপির আহ্বায়ক ড. শাহাদাত হোসেন আজাদীকে বলেন, গণশুনানি করে দাম বাড়ানোর নিয়ম হলেও তা মানা হয়নি। শুধু বিদ্যুৎ না, সব ক্ষেত্রেই খরচ বাড়ছে। চারদিকে যে লুটপাট হয়েছে তার ভারসাম্য করার জন্য সরকার প্রতিটি সেক্টরে খরচ বাড়িয়ে সাধারণ মানুষকে নিঃস্ব করে দিচ্ছে। জনগণের দল হিসেবে বিএনপি জনগণের সাথে হওয়া এ অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাবে। তাই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করব। আশা করি প্রশাসন এখানে কোনো বাধা দিবে না।
এদিকে গতকাল সিএমপির বিশেষ শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার বরাবর বিক্ষোভ মিছিলের বিষয়ে দেয়া পত্রে বলা হয়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার ৩টায় জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ সংলগ্ন ওয়াসা মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবে। এতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান প্রধান অতিথি থাকবেন। পত্র দেয়ার বিষয়টি আজাদীকে নিশ্চিত করেন নগর বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইদ্রিস আলী। তিনি বলেন, মিছিল-পূর্ব সমাবেশ হবে। সেখানে মাইক ব্যবহার করা হবে। বিষয়টিও পত্রে উল্লেখ করা হয়।
প্রস্তুতি সভা : নাসিমন ভবন কার্যালয়ের মাঠে গতকাল অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি সভায় সভাপতিত্ব করেন ডা. শাহাদাত হোসেন। আগামীকালের বিক্ষোভ মিছিলে সর্বস্তরের লোকজনকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের চোখ এখন মানুষের পকেটের দিকে। পকেটমাররা যেভাবে মানুষের পকেট থেকে টাকা মেরে দেয় সরকারও সেভাবে মানুষের পকেট মারছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে মানুষকে একদম নিঃস্ব করে দিয়েছে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারণে জিনিসপত্রের দাম আরো বেড়ে যাবে। এতে মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সভায় নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বিদ্যুতের এই দাম বৃদ্ধি নজিরবিহীন ও অস্বাভাবিক। গাড়ি ভাড়া, বাড়ি ভাড়াসহ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে লাগামহীনভাবে। জনগণের নির্বাচিত সরকার থাকলে এই ধরনের সীমাহীন দাম বৃদ্ধি পেত না। গরিব মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল।
নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. কামরুল ইসলামের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এস এম সাইফুল আলম, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, নগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান ও মহিলাদলের মনোয়ারা বেগম মনি।