সরকার ঘোষিত সাত দিনের কঠোর লকডাউনে নিত্যপণ্যের বাজার আওতামুক্ত। সড়ক মহাসড়কে লকডাউন নিশ্চিতে সেনাবাহিনী-পুলিশের পাশাপাশি প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করছেন। তবে কাঁচা বাজারের অবস্থা একেবারে বেহাল। এত প্রচারণা সত্ত্বেও কাঁচা বাজারগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতা কারো মুখে মাস্ক নেই। কেউ মাস্ক কানের একপাশে ঝুলিয়ে রেখেছেন, আবার কেউবা মাস্ক থুতনির নিচে নামিয়ে রেখেছেন। গতকাল নগরীর ২নং গেট কর্ণফুলী কমপ্লেক্স কাঁচা বাজার, কাজীর দেউড়ি কাঁচা বাজার, চকবাজার কাঁচা বাজার, বাকলিয়ার বউ বাজার এবং জামাই বাজার কাঁচা বাজার এবং মুদির দোকানে এই চিত্র দেখা যায়। মাস্ক নেই কেন জানতে চাইলে কাজীর দেউড়ি কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. সজিব হোসেন বলেন, মাস্ক সব সময় পরি। তবে আজকে (গতকাল) আনতে ভুলে গেছি। আনোয়ার হোসেন নামের অপর বিক্রেতা বলেন, বেশিক্ষণ মাস্ক মুখে রাখলে দম বন্ধ হয়ে আসে। তাই নিঃশ্বাস নেয়ার সুবিধার জন্য মাস্ক কিছুক্ষণ খুলে রাখি। এই বলে তিনি আবার মাস্ক পরে নেন।
জহির উদ্দিন নামের এক ক্রেতা জানান, মাস্ক পকেটে আছে। একটু খুলেছিলাম। বৃদ্ধ আনিসুর রহমান বলেন, আল্লাহর রহমতে করোনা আমাদের ধরবে না, এসব বড় লোকদের ধরে। আজকে পর্যন্ত দেখেন একজন রিক্সাওয়ালা করোনায় মারা যায়নি। বাকলিয়া বউ বাজার এলাকায় ভ্যানগাড়িতে সবজি বিক্রি করছিলেন সুরুজ মিয়া। তার ভ্যান ঘিরে ধরে ৫-৬ জন ক্রেতা। এদের মধ্যে একজন ছাড়া আর কারো মুখে মাস্ক নেই। জানতে চাইলে সুরুজ মিয়া বলেন, করোনা আসছে পর্যন্ত আমি কখনো মাস্ক পরিনি। কই আমার তো কোনো সমস্যা হয়নি। এসব করোনা আমাদের ধরবে না।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র মাস্ক পরেই ৫০ শতাংশ করোনা সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব। তাই সব জায়গায় মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। শুধু লকডাউন দিয়ে জনসাধারণের চলাচল সীমিত করলে হবে না, একই সাথে মাস্ক পরাটাও নিশ্চিত করতে হবে ।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হৃদরোগ বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার দাশ বলেন, করোনার সংক্রমণ যেহেতু বাড়ছে তাই সরকারকে অবশ্যই প্রত্যেক নাগরিক যেন মাস্ক পরে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা শুধু মুখে বললে হবে না, কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে হবে।