এক মাস আগে প্রতি কেজি চিনির দাম ১২০ টাকা থেকে ১২৫ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও তা মানেননি ব্যবসায়ীরা; দাম আরও বাড়াতে এখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন তারা। বর্তমানে প্রতি কেজি খোলা চিনি ১৩৫ টাকা এবং প্যাকেটের চিনি ১৪০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এবার সরকারিভাবে খোলা চিনির দাম ১৪০ টাকা এবং প্যাকেটের চিনির দাম ১৫০ টাকা নির্ধারণের জন্য ট্যারিফ কমিশনে প্রস্তাব পাঠিয়েছে বাংলাদেশ শুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক টাস্কফোর্সের সভা হয়, পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ। সরকার দাম নির্ধারণ করে দিলেও ব্যবসায়ীরা যে তা মানেননি, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মূলত ব্যবসায়ীদের পক্ষেই কথা বলেন সচিব।
এ বিষয়ে তপন ঘোষ বলেন, চিনির প্রধান উৎস ব্রাজিল ও ভারত। তবে এই মুহূর্তে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির ফলে টিসিবির আন্তর্জাতিক টেন্ডারের চিনিও দেশে আনা সম্ভব হয়নি। আন্তর্জাতিকভাবে চিনির একটা সংকট যাচ্ছে। চিনির দাম প্রতি টন ৪৫০ ডলার থেকে বেড়ে গিয়ে প্রায় ৭০০ ডলারে ঠেকেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম যখন বেশি অস্থিতিশীল থাকে তখন দেশের বাজারে দাম স্থিতিশীল করাটা খুবই টাফ।
বাণিজ্যসচিব বলেন, মাসখানেক আগে আমরা যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম সেটাও রক্ষা করা যায়নি। তখন আন্তর্জাতিক বাজারে দাম আরও বেড়ে যাচ্ছিল। সে কারণে আমাদের মিলাররাও দাম বাস্তবায়ন করতে পারেন নাই। সবার মধ্যে একটা আশঙ্কা ছিল যে, আন্তর্জাতিক বাজারে দামটা আরও বেড়ে যায় কিনা।
ব্যবসায়ীদের নতুন প্রস্তাব নিয়ে তিনি বলেন, এখন আমরা বিভিন্ন ধরনের প্যারামিটার বিশ্লেষণ করে দেখব যে আসলে পরিস্থিতি কী? আন্তর্জাতিক বাজারে দাম যদি কমতির দিকে থাকে, আমি আশা করি দাম হয়ত আর বাড়বে না।
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির পেছনে কোনো ‘সিন্ডিকেট’ কাজ করেছে কিনা জানতে চাওয়া হয় বাণিজ্যসচিবের কাছে; উত্তরে তিনি বলেন, সিন্ডিকেটের বিষয়টি আমি জানি না। তবে যখন আমদানি বন্ধ থাকে, তখন হয়ত ব্যবসায়ীরা মনে করতে পারেন যে, ‘চাহিদা বেশি, আমরা দাম বাড়িয়ে দেব।’ ব্যবসায়ীরা সেই সুযোগটা নেওয়ার চেষ্টা করে।
দাম বৃদ্ধির ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তা কার্যকর করা হলেও ‘কমার ঘোষণা’ খুব ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন হয়; বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির খবরেই দেশের বাজারে দাম বেড়ে যায়। আবার দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার পরও দেশের বাজারে দা প্রভাব পড়ে খুব ধীর গতিতে। ব্যবসায়ীদের এমন প্রবণতা প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিবের ব্যাখ্যা, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেই সঙ্গে সঙ্গে দেশে সেই পণ্যের দাম কমানো সম্ভব হয় না, কারণ আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে ডলারের দাম একটা বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। এছাড়া, শুল্ক হার, অভ্যন্তরীণ পরিবহন ব্যয় মূল্য নির্ধারণে প্রতিফলন ঘটে।











