এক কিলোমিটারের রাস্তায় ১০ ফুটও ভালো নেই

মীরসরাইয়ের কয়েকটি গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা, দুর্ভোগ

মীরসরাই প্রতিনিধি | রবিবার , ৩ আগস্ট, ২০২৫ at ৮:৩১ পূর্বাহ্ণ

মীরসরাই উপজেলার কয়েকটি সড়কে চলাচলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই এসব সড়ক চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এতে দুর্ভোগের আর সীমা থাকে না। উপজেলার ঠাকুরদীঘিছত্তরভূঞার হাট সড়কের দুর্গাপুর বাজার পেরিয়ে গেলেই দেখা যায়রাস্তার মাঝখানে বড় বড় গর্ত, এক কিলোমিটারের রাস্তায় ১০ ফুটও ভালো রাস্তা নেই। কংক্রিট উঠে ছোটবড় গর্তে বৃষ্টি হলেই পানি জমে পুরো রাস্তা হেঁটে চলারও অযোগ্য হয়ে যায়। হেলেদুলে কোনরকমে ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন। রোগী বহনে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয়। এদিকে, উপজেলার সর্ব দক্ষিণের কমরআলীভূঞারহাট সড়কের দশা যেন এর চেয়েও খারাপ। জোরারগঞ্জমুহুরী প্রকল্প সড়কের বেহাল দশা তো শেষই হচ্ছে না। এই সড়কটি সংস্কার করলেই ৬ মাসও টিকে না কারণ রাতভর চলে মাছের ড্রামভর্তি পানিসহ ট্রাক। সারা বছর ভারী গাড়ির পানিতে ভেজা থাকার কারণেই এই রোডটির স্থায়ীত্ব বেশিদিন থাকে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

ছত্তরভূঞার হাট সড়কে সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগী মাস্টার মিনহাজ উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ সবাইকে এই রাস্তা পাকা হওয়া স্বত্ত্বেও জুতা হাতে নিয়ে যেতে হয়। এই দুর্ভোগ কবে শেষ হবে জানি না। জোরারগঞ্জমুহুরী প্রজেক্ট সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ১২ কিলোমিটার। এর মধ্যে জোরারগঞ্জ বাজার থেকে ইছামতি মন্দির পর্যন্ত এক কিলোমিটার অংশ খানিকটা ভালো থাকলেও, বাকি ৭ কিলোমিটার একেবারেই চলাচলের অযোগ্য। সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থা বিষুমিয়ার হাট থেকে আজমপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটারে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে গিয়ে ছোটবড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষায় এই গর্তগুলোতে পানি জমে কাদা হয়, তখন দেখা যায় গাড়ি হঠাৎ ব্রেক করে, নিয়ন্ত্রণ হারায়। অনেক সময় গাড়ি বিকল হয়ে গর্তেই থেমে যায়। এছাড়াও সড়কের দুরাবস্থার প্রভাব পড়েছে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের ওপরও। অনেকেই সময়মতো স্কুলে পৌঁছাতে পারছে না। সকাল বেলা সিএনজি বা স্কুলবাসে উঠলেও সড়কের কাদা আর গর্তের কারণে নির্ধারিত সময়ে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব। স্থানীয় সিএনজি চালক দুঃখু মিয়া বলেন, সড়কের অধিকাংশ স্থানে গর্ত। প্রায়ই গাড়ি উল্টে যায়। রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বের হলে মনে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রা করছি। নিয়মিত যাত্রী কৃষ্ণ কর্মকার বলেন, সংস্কার হলেও নিম্নমানের কাজে এক মাসের মধ্যেই সব আবার আগের মতো হয়ে যায়। সময়, ভাড়া দুইই বেড়ে যাচ্ছে। ট্রাক চালক আবুল হাশেম বলেন, লোড গাড়ি গর্তে পড়ে আটকে যায়, সময় নষ্ট হয়, যন্ত্রপাতিও নষ্ট হয়। ঠিকঠাক রাস্তা থাকলে সময়মতো মালামাল পৌঁছানো যেত। মো. ইউছুপ নামে এক অভিভাবক বলেন, আমার ছেলে স্কুলে পৌঁছাতে দেরি করে। প্রায় দিনই বাস সময়মতো যেতে পারে না। শিক্ষকও রাগ করেন, অথচ দোষ তো ছাত্রের না।

ছত্তরভূঞার হাট সড়ক বিষয়ে মীরসরাইয়ের উপজেলা প্রকৌশলী রনি সাহা বলেন, এই সড়কটি টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন আশা করছি খুব শীঘ্রই কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। কমরআলী সড়ক নিয়ে তিনি বলেন, সেটি এলজিইডির সীতাকুণ্ডের অধীনে তবে সেখানেও টেন্ডার সম্পন্ন হয়ে কাজ শুরু হবার অপেক্ষায় আছে বলে জানান তিনি।

মুহুরী প্রজেক্ট সড়ক নিয়ে চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোসলেহ উদ্দিন বলেন, জোরারগঞ্জমুহুরী প্রজেক্ট সড়কসহ মোট ১৮ কিলোমিটারের জন্য দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে। জোরারগঞ্জমুহুরী প্রজেক্টের ৭ কিলোমিটার অংশটি ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুট প্রশস্ত করে কার্পেটিংয়ের কাজ হবে। এছাড়াও মুহুরী প্রজেক্ট থেকে বেড়িবাঁধ হয়ে শিল্পজোনের বেজার গেট পর্যন্ত সড়কের বাজেটও অনুমোদন হয়েছে বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাতারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে রাঙ্গুনিয়া প্রবাসীর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধপেকুয়ায় অস্ত্রসহ আটক ১