আবদুর রহমান মিয়া। বয়স ৪৬ বছর। একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। কাজের পাশাপাশি এ বয়সেও চালিয়ে যাচ্ছেন পড়াশোনা। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৫টি মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন আবদুর রহমান। চলমান আছে আরও একটা। এখানেই থেমে থাকেননি। লিখেছেন বইও। খবর বাংলানিউজের। এক পড়ন্ত বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আড্ডা হয় আবদুর রহমানের সঙ্গে। গল্পের ছলে কথা হয় বিভিন্ন বিষয়ে। এ সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয় কেন একের পর এক মাস্টার্স করছেন তিনি? উত্তরে আবদুর রহমান বলেন, মানুষ যতদিন বাঁচে ততদিনই শেখে। শেখার কোনো শেষ নেই। মূলত শেখার জন্যই আমি একটার পর একটা মাস্টার্স করছি। আমাদের ধর্মেও জ্ঞান অর্জনের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি যদি জ্ঞান অর্জন করি তাহলে আমার মানসিকতা বড় হবে বলে বিশ্বাস করি। মানুষকে সহযোগিতা করা সহজ হবে তখন।
তিনি বলেন, ডিজিটাল এ যুগে মানুষ মোবাইল, ট্যাব, কম্পিউটার, স্যোশাল মিডিয়ায় ব্যস্ত থাকে। বই পড়ার আগ্রহ কমে গেছে। হয়তো আমার দেখে আরও অনেকে উৎসাহিত হবে। পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ জন্মাবে। তিনি আরও বলেন, আগের দিনে দেখা গেছে আমাদের এলাকাগুলোতে লাইব্রেরি থাকতো। সেখানে নানা প্রতিযোগিতা হতো। বিশেষ করে শিশু একাডেমি, বাংলা একাডেমি ও বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রগুলো এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করত। এখন আর এ বিষয়গুলো চোখে পড়ে না।
আবদুর রহমান বলেন, আসলে আমি যদি না পড়ি, না জানি তাহলে এগিয়ে যেতে পারবো না। কারণ বর্তমান যুগ প্রতিযোগিতার যুগ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছুই পরিবর্তন হচ্ছে। আমি ম্যাথমেটিঙে মাস্টার্স করেছি অনেক আগে। কিন্তু এখন অনেক বিষয়ই নতুন নতুন আসছে। তো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আমাকে এ বিষয়গুলোও জানতে হবে। আর এজন্য আমাকে পড়াশোনার সঙ্গে থাকতে হবে। কতদিন চালিয়ে যাবেন পড়াশোনা? উত্তরে তিনি বলেন, ইচ্ছে তো আছে যতদিন বাঁচি ততদিনই চালিয়ে যাওয়ার।
শুনেছি আপনি বই লিখেছেন, তা কি কি বই লিখেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমি পাঁচটি বই লিখেছি। সেগুলো হলো– ‘শ্রম অর্থনীতি ও ইপিজেড আইন’, ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লব : প্রস্তুতির এখনই সময়’, ‘শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশ ও পারিবারিক শিক্ষা’, ‘লেবার ইকোনমিঙ অ্যান্ড এঙপোর্ট প্রসেসিং জোন অ্যাক্ট’, ‘অ্যা ম্যানুয়াল ইন্ট্রাকচুয়াল প্রপার্টি ল’। বই লেখার কারণ কী? তিনি বলেন, আসলে বই লেখার মূল কারণ হচ্ছে মানুষকে বিভিন্ন বিষয়ে জানানো ও সচেতন করা।
আবদুর রহমানের দাদার বাড়ি মাদারিপুর হলেও তিনি জন্মেছেন চট্টগ্রামে। বাবার নাম আবদুর রব মিয়া। তিনি জেলা রিলিফ অফিসার ছিলেন। আর মায়ের নাম আঞ্জুমান আরা। বাবা রিটায়ার্ড করার পর যশোরে বাড়ি করেছেন। এখন স্থায়ী ঠিকানা সেখানেই।