একাদশে ভর্তির আবেদন আজ থেকে

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৮ জানুয়ারি, ২০২২ at ৬:৫৬ পূর্বাহ্ণ

আজ শনিবার থেকে একাদশে ভর্তিতে অনলাইন আবেদন শুরু হচ্ছে। চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। এবার কেবল অনলাইনেই (ওয়েবসাইটের মাধ্যমে) আবেদন করা যাবে। একাদশে ভর্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে (www.xiclassadmission.gov.bd) আবেদন করতে হবে শিক্ষার্থীদের। অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজের পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করা যাবে। আবেদন ফি বাবদ ১৫০ টাকা দিতে হবে প্রতি শিক্ষার্থীকে। টেলিটক এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এ ফি পরিশোধ করতে হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, ৮ জানুয়ারি থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন নেওয়া হবে। এসএসসির ফল পুনঃনিরীক্ষণে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদেরও এই সময়ে আবেদন করতে হবে। কেবল পুনঃনিরীক্ষায় ফল পরিবর্তন হওয়া শিক্ষার্থীরা নতুন করে আবেদনের সুযোগ পাবে ২২ ও ২৩ জানুয়ারি। আর প্রথম দফায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৯ জানুয়ারি। ৩০ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চায়ন করতে হবে। ভর্তি প্রক্রিয়া শেষে ২ মার্চ থেকে একাদশে ক্লাস শুরু হবে। আবেদনের সময়-সিডিউল সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য, নির্দেশিকা ও ফি প্রদানের পদ্ধতি ভর্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইটের (www.xiclassadmission.gov.bd) বাম পাশে পাওয়া যাবে।
আবেদনের ক্ষেত্রে যা বিবেচনায় নিতে হবে : আবেদনের ক্ষেত্রে কলেজের পড়ালেখার মান-পরিবেশ, বাসা থেকে দূরত্ব এবং মাসিক বেতনসহ যাবতীয় খরচের বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে কলেজের পছন্দক্রম ঠিক করার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক। দোকানের কম্পিউটার অপাটেরদের ইচ্ছে অনুযায়ী কলেজের পছন্দক্রম না দিতেও শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এছাড়াও কোটার স্বপক্ষে যথাযথ কাগজপত্র থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হলেই কেবল কোটায় আবেদন করার পরামর্শ দিয়ে কলেজ পরিদর্শক বলেন- দেখা গেল, কেউ একজন কোটায় আবেদন করেছে। আবেদন করায় কোটায় ভর্তির জন্য ওই শিক্ষার্থী মনোনীত হলেও যথাযথ কাগজপত্র দেখাতে না পারলে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভর্তি করাবে না। আবার কোটায় আবেদন করায় মেধা তালিকায়ও তার নাম আসবে না। এতে করে সংশ্ল্লিষ্ট শিক্ষার্থীর ভর্তি ঘিরে সংশয় দেখা দিবে। তাই আবেদনের ক্ষেত্রে যাবতীয় বিষয় যাচাই-বাছাই করে তবেই আবেদন করতে হবে।
পছন্দক্রমে সর্বোচ্চ দশ কলেজ রেখেই আবেদনের পরামর্শ : একাদশে ভর্তিতে অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজের পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করা যাবে। সুযোগ থাকায় সর্বোচ্চ দশটি কলেজ পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক। অনেক শিক্ষার্থী অতি আত্মবিশ্বাসের জোরে মাত্র কয়েকটি বা ৫টি কলেজ পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করে। কিন্তু দেখা গেল, তার প্রাপ্ত নম্বরে ওই ৫টি কলেজের কোনোটিতেই সে ভর্তির সুযোগ পেল না। এছাড়া পছন্দক্রমে আর কলেজ না থাকায় পরবর্তী তালিকাতেও তার আসার সুযোগ থাকে না। এতে করে জিপিএ-৫ পেয়েও কিছু শিক্ষার্থীর ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। তবে সুযোগ থাকায় সর্বোচ্চ দশটি কলেজ পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করলে ভর্তি ঘিরে এ ধরনের অনিশ্চয়তা কমে যায়। তাই সব শিক্ষার্থীরই সর্বোচ্চ দশটি কলেজে পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করার জোরালো পরামর্শ দিয়েছেন চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক।
পরিবর্তন করা যাবে পছন্দক্রম : আবেদনের নির্ধারিত সময়ের (৮-১৫ জানুয়ারি) মধ্যে আবেদনকারী শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ৫ বার আবেদনের পছন্দক্রম ও কলেজ পরিবর্তনের সুযোগ পাবে। তবে প্রাথমিক নিশ্চায়নের পর আবেদনের আর কোনো পরিবর্তন করা যাবে না।
সতর্ক হতে হবে মোবাইল নম্বর প্রদানে : আবেদনের সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে কন্টাক্ট নম্বর হিসেবে একটি মোবাইল নম্বর দিতে হবে। চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক বলছেন, আবেদনের সময় প্রদত্ত এই মোবাইল নম্বরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আবেদন পরবর্তী ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এই মোবাইল নম্বরেই পাঠানো হবে। কন্টাক্ট নম্বর হিসেবে প্রদত্ত এই মোবাইল নম্বর অবশ্যই রেজিস্ট্রেশনকৃত (বায়োমেট্রিক) হতে হবে। যাতে কোনো কারণে মোবাইল হারিয়ে গেলেও সিমটি পুনরায় উত্তোলন করা যায়। আর কন্টাক্ট নম্বর হিসেবে একই মোবাইল নম্বর কোনোভাবেই একাধিক আবেদনে ব্যবহার করা যাবে না।
মহানগরীর ৮ সরকারি কলেজে আসন : সবমিলিয়ে মহানগরীর ৮টি সরকারি কলেজে গতবার মোট আসন ছিল ৯ হাজার ৩০০টি। এর মধ্যে বিজ্ঞান শাখায় ৩ হাজার ২৮৫, মানবিক শাখায় ২ হাজার ৪৫৫ এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৩ হাজার ৫৬০ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল। তবে নগরীর ৬ সরকারি কলেজে আরো ২৩০টি আসন বাড়ানো হয়েছে এবার। এর ফলে নগরীর সরকারি কলেজগুলোতে এবার মোট আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫৩০টি। এর মধ্যে বিজ্ঞানে ৩ হাজার ৪০০, মানবিকে ২ হাজার ৫৩০ এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ৩ হাজার ৬০০ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে এবার।
এদিকে, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে শুধু জিপিএ-৫ ধারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ হাজার ৭৯১ জন। এর মধ্যে বিজ্ঞানে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ হাজার ২৯১ জন (সবচেয়ে বেশি)। মানবিকে ১৫৬ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ১ হাজার ৩৪৪ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। বিশেষ করে বিজ্ঞান শাখায় আসনের তুলনায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি। এতে করে ভালো ফল করেও ‘ভালো’ কলেজে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকেই যাচ্ছে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিক্ষার্থীদের টিকাদান উপজেলা পর্যায়ে শুরু আজ
পরবর্তী নিবন্ধসব সামাজিক, রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ বন্ধের সুপারিশ