একমাত্র এক্স-রেটি ১৫ বছর বিকল

মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চার ইসিজির মধ্যে নষ্ট দুটি

মীরসরাই প্রতিনিধি | শনিবার , ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৫:০২ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ ১৫ বছর বিকল হয়ে পড়ে আছে মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র এক্সরে মেশিনটি। কখন মেরামত হবে অথবা নতুন মেশিন সংযোজন হবে কিনা এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এছাড়া চারটি ইসিজি মেশিনের দুটিই নষ্ট। ফলে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ। জানা গেছে, মীরসরাই উপজেলার সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ১৯৯৩ সালের ১১ অক্টোবর তৎকালীন সংসদ সদস্য এম এ জিন্নাহ এক্সরে মেশিনটি উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর কয়েক মাস সচল থাকলেও তা পরে বিকল হয়ে যায়। দীর্ঘদিন মেশিনটি একটি কক্ষে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকে। পরে ২০০৭ সালের দিকে এক্সরেটি মেরামত করে চালু করা হলেও কয়েক মাস পর আবার বিকল হয়ে যায়। এরপর থেকে ১৫ বছর বিকল হয়ে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে মেশিনটি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মচারী জানান, গত ১৫ বছরে এক্সরে কক্ষটি খোলা হয়নি বললেই চলে। এছাড়া চারটি ইসিজি মেশিনের মধ্যে দুটি নষ্ট। সরেজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, এক্সরে মেশিন রাখা কক্ষটির দরজা তালাবদ্ধ। তালা খুলে ভেতরে ঢুকতেই ঘুটঘুটে অন্ধকার। রুম বন্ধ থাকায় বিদ্যুৎ সংযোগও নেই। ধুলাবালিতে মেশিনটি ঢাকা পড়ে রয়েছে। ভেতরে ঢোকার মত অবস্থাও নেই। এক্সরে কক্ষের পাশের একটি কক্ষের ছাদের পাইপের জোড়া থেকে পানি এসে এক্সরে মেশিনের কক্ষের মেঝেতে জমে আছে। ভেতরে দুর্গন্ধ। এসময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টোর কিপার মোহাম্মদ রাশেদ জানান, দীর্ঘ সময় এক্সরে মেশিন নষ্ট থাকায় কক্ষটি তেমন খোলা না হওয়ায় এটিতে পানি ও ময়লা জমে থাকলেও কারো নজরে আসে না।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, প্রতিমাসে আট হাজারের বেশি রোগী আউটডোরে চিকিৎসাসেবা নেন। দুই হাজারের বেশি রোগী ইনডোরে সেবা নেন। এছাড়া প্রতিদিন গড়ে শতাধিক রোগী জরুরি বিভাগ থেকে সেবা নেন। সরকারি এক্সরে মেশিনে কোনো রোগীর এক্সরে করা হলে তাতে রোগীর ১০০২০০ টাকা ব্যয় হয়। অন্য কোথাও এর ব্যয় কয়েক গুণ বেড়ে যায় বলে জানা গেছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামের তমা রানী বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান আগের তুলনায় কিছুটা ভালো। কিন্তু চিকিৎসার যন্ত্রগুলো সচল থাকলে বেশি সেবা পাওয়া যেত।

মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) মো. কবির হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্সরে মেশিনটি দীর্ঘদিন নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায় রেডিওগ্রাফার অন্য জায়গায় বদলি হয়ে চলে গেছেন। মেশিনটি সচল করা হলে কিংবা নতুন একটি মেশিন আনা হলে এলাকার রোগীরা সেবা পেতেন।

মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিনহাজ উদ্দিন বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্সরে মেশিনটি দীর্ঘ সময় বিকল। তা আর সচল হবে বলে মনে হয় না। উন্নতমানের একটি এক্সরে মেশিনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার লেখা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগণমিছিল থেকে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপি জোট সাপের মতো খোলস বদলায় : তথ্যমন্ত্রী