কথা ছিল এই বর্ষায় তুমি আমার শহরে আসবে
তুমুল বৃষ্টিতে ভিজবো দু‘জনে,
তুমি বলেছিলে খুব পছন্দের একগুচ্ছ কদম হাতে
যেন দাঁড়িয়ে থাকি তোমার অপেক্ষায়!
তুমি এসেছিলে? জানা হলো না!
আমার আর তোমার জন্য দাঁড়িয়ে থাকা হলো না
আমি স্বার্থপর হয়ে শুধু তোমার আমার কথা ভাবতে পারিনি,
আমি দেশের মানুষের কথা ভেবেছি,
আমি বাকস্বাধীনতার কথা ভেবেছি,
আমি শোষণ আর অন্যায় অবিচার এর কথা ভেবেছি।
আমি আমার বুক পেতে দাঁড়িয়েছি
সকল অন্যায় অবিচার আর শোষণের বিরুদ্ধে
আমি বুক পেতে দাঁড়িয়েছি সকলের অধিকার চাইতে।
আমি বাংলাদেশ, আমি মানচিত্র,
আমি এসময়ের প্রতিবাদী তরুণ প্রজন্ম…!
আমাকে বুলেটের আঘাতে ঝাঁঝরা করেছে হিংস্র হায়েনা।
রক্তার্ত করেছে মানচিত্র। দেশমাতৃকার করেছে অপমান!
জ্বালিয়েছে টগবগে তরুণদের রক্তে আগুন
বিশ্ববাসী স্তব্ধ হয়ে দেখেছে এই নির্মমতা এই হত্যা।
হতবাক হয়ে থুথু ছিটিয়েছে আমার দেশের গায়,
নিন্দার ঝড় উঠেছে বিশ্বদরবারে।
না এ– কোনো সিনেমার দৃশ্য নয়,
দিনের আলোয় ঘটে যাওয়া চরম অন্যায়। চরম বর্বরতা।
লজ্জায় মাথা নত হয়েছে জাতির।
আরো একবার কলঙ্কিত হলো আমার ইতিহাসের পাতা।
এভাবে বারবার কতবার কলঙ্কিত হবে বাঙালি জাতির ইতিহাস?
কি জানি, উত্তর অজানা।
এখনো আমায় নিয়ে কিছু মানুষ ভাবতে চায় না,
কারণ আমি তাদের ছেলে নই,
আমি তাদের ভাই নই,
আমি তাদের বন্ধু নই।
আমায় নিয়ে তাদের ভাবার এতটা সময় কই!
তোমার প্রতিও আমার প্রচণ্ড অভিমান রেখে গেলাম,
কেন জানো? তুমি নানা অজুহাতে আমার শহরে আসোনি,
আসা হয়নি তোমার, হাঁটা হয়নি একসাথে স্বপ্নের পথে,
কবিতা লেখা হয়নি, গান গাওয়া হয়নি, একসাথে বাঁচা হয়নি।
পিছিয়েছ সময়, ততক্ষণে আমার সময় হয়েছে মিছিলে যাওয়ার।
ফিরে ফিরে চেয়েছি বারবার যদি একবার দেখা হতো শেষবার!
এখন সময় করে এসো,
একটু বসে যেও আমার কবরের পাশে,
একটু মাটি ছুঁয়ে দেখো।
যদি সময় হয় আমাকে নিয়ে একটু ভেবো
যদি ইচ্ছে হয় আমায় নিয়ে একটি কবিতা লিখো।
আমি দূর থেকে তোমার ভালোবাসা দেখে শান্তি পাবো
তবুও চাই শান্তি আসুক, আমার দেশটা ভালো থাকুক,
আমার প্রাণের বিনিময়ে গণতন্ত্র হোক পাওয়া
সকল অবিচারের শেকল ভেঙে লাগুক সুখের হাওয়া
এটাই ছিল আমার একটি মাত্র চাওয়া।