একটি সেতুর অভাবে…

রাঙামাটি প্রতিনিধি | শনিবার , ২৯ অক্টোবর, ২০২২ at ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ

রাঙামাটির লংগদু উপজেলার ৪নং বগাচতর ইউনিয়নে একটি সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে পড়েছে চার গ্রামের মানুষ। চার গ্রামের মাঝখানে বয়ে গেছে কাপ্তাই হ্রদ। কাপ্তাই হ্রদের এপারে-ওপারে রয়েছে বাজার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কোনো সেতু না থাকায় গ্রামবাসীদের একমাত্র যাতায়াতের ভরসা নৌকা।

প্রতিদিনই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয়। সেতুর অভাবে প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তাদের। বর্ষা মৌসুমে এই দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এই অবস্থায় দ্রুত সেতু নিমার্ণের দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লংগদু উপজেলার ৪নং বগাচতর ইউনিয়নের মুসলিম ব্লক, অফিসটিলা, ফজলে শিবির এবং পেডানিমাছড়া এই চার গ্রামে প্রায় ২ হাজার মানুষের বসবাস। হ্রদের দুই পাড়ে রয়েছে একটি বাজার, নুরানী মাদ্রাসা এবং উগলছড়ি মহাজনপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কোনো ব্রিজ না থাকায় তাদের পারাপারের একমাত্র ভরসা নৌকা। প্রতিদিন স্কুল এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হ্রদ পারাপার হয়। অনেক সময় নৌকা ডুবে দুর্ঘটনার শিকারও হন তারা। বছর খানেক আগে নৌকা ডুবে দুইজন শিক্ষার্থীও মারা গেছে বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসীরা।

উগলছড়ি মহাজন পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া ও আনিকা আক্তার জানান, প্রতিদিনই নৌকা করে তাদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। এতে তাদের ভয় এবং অসুবিধা হয়। একটি ব্রিজ নির্মাণ করলে তাদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সুবিধা হবে। একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. সাইফুল জানান, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে হ্রদ পারাপার হতে হয়। অনেক সময় নৌকাও ডুবে যায়। বছর খানেক আগে নৌকা ডুবে যাওয়ায় তারা তাদের দুজন সহপাঠীকে হারান। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা জানান, ছেলে মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে ভয়ে বা আতঙ্কে থাকতে হয়। প্রতিনিয়ত নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে।

৪নং বগাচতর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আবুল বশর জানান, শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই নৌকায় করে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। এতে তাদের যাতায়াতের অসুবিধা হয়। ব্রিজ নির্মাণ হলে নৌকা ডুবে দুর্ঘটনা আর হবে না। তাই তিনি এখানকার এলাকাবাসী এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের পথ সুগম করতে পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী জানান, বগাচতর ইউনিয়ন থেকে শুরু করে আরো বিভিন্ন উপজেলায় রাস্তা এবং ব্রিজের সমস্যা বিদ্যমান। জেলা পরিষদ প্রতিনিয়ত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে প্রধান্য দিয়ে থাকে। বগাচতর ইউনিয়নের দিকে তার বিশেষ সুদৃষ্টি থাকবে এবং সামনে প্রকল্প গ্রহণ করলে বগাচতর ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত এবং তাদের সমস্যা সমাধান করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবান্দরবানে ব্রিজের সাথে বাসের ধাক্কা, হেলপারের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধসিত্রাংয়ের প্রভাব বাজারে বেড়েছে সবজির দাম