ম্যানুয়েল ন্যুয়ের এবং সুইচি গোন্ডা। জার্মানি এবং জাপানের গোলরক্ষক। দু’জনকেই দেখা গেল একই গোল পোস্টের নীচে। গতকাল দেখা গেল এমনই অদ্ভুত দৃশ্য। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা তখন শেষ। চতুর্থ রেফারির দেওয়া ৯ মিনিটের সংযুক্ত সময়ের খেলা চলছে। ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে জাপান। খেলা শেষ হতে বাকি মিনিট দুয়েক। নিজের গোল ছেড়ে জাপানের অর্ধে উঠে গেলেন জার্মান অধিনায়ক। যদি কোনও ভাবে সমতা ফেরানো যায়। এগিয়ে থাকা জাপানের সব ফুটবলারই তখন নিজেদের অর্ধে। গোলের সামনে পায়ের জঙ্গল তৈরি করেছেন তারা। লক্ষ্য একটাই, যে কোনও মূল্যে দূর্গ রক্ষা করা। দু’দলই তখন মরিয়া।
জাপান চাইছে ব্যবধান বজায় রাখতে। আর জার্মানি চাইছে সমতা ফেরাতে। সময় যত এগোচ্ছে, তত চাপ বাড়ছে জার্মানদের উপর। হারের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা ন্যুয়ের তখন আর ব্যবধান বেড়ে যাওয়ার ভয় ভুলেছেন। দলের মান রক্ষা করতে জার্মান অধিনায়ক পৌঁছে গেলেন একদম জাপানের পোস্টের সামনে। গোল বাঁচাতে নয়। গোল করতে। বদলে ফেললেন নিজের ভূমিকা। এক দম শেষ মিনিটে কর্ণার পেল জার্মানি। বল উড়ে এল জাপানের বক্সে। হেড করার জন্য মরিয়া লাফ দিলেন ন্যুয়ের। বলে মাথা ছোঁয়াতে পারলেন না। উঁচু বলের নাগাল পেলেন না জাপানের গোলরক্ষক গোন্ডাও। শেষ মুহূর্তে বলের দিকে নজর রাখা গোন্ডা তখন দ্বিতীয় পোস্ট ছেড়েও খানিকটা বেরিয়ে এসেছেন। অরক্ষিত জাপানের গোল। সেখানে একা ন্যুয়ের। তার অর্ধেক শরীর গোল লাইন পেরিয়ে গিয়েছে। শেষ সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার হতাশা মুখে স্পষ্ট।
ধাক্কা এশিয়ার দেওয়ালের, ভাঙল ‘বার্লিন প্রাচীর’ : ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে গ্রুপের শেষ ম্যাচে এশিয়ার দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরে ছিটকে গিয়েছিল জার্মানি। আর এ বার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই এশিয়ার আর এক দেশ জাপানের কাছে হেরে গেল তারা।
গত বার বিশ্বকাপে টিকে থাকতে হলে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে জিততেই হত জার্মানিকে। অনেক চেষ্টা করেও গোলের মুখ খুলতে পারেননি থমাস মুলাররা। ৯০ মিনিটের পরে খেলার গতির বিপরীতে জার্মানির গোলে বল জড়িয়ে দেন কিম ইয়ং। পিছিয়ে পড়ে গোল শোধের মরিয়া চেষ্টায় পুরো দলটা উঠে যায় দক্ষিণ কোরিয়ার বঙে। উঠে যান গোলরক্ষক ম্যানুয়েল ন্যুয়েরও। অতিরিক্ত সময়ের শেষ মুহূর্তে প্রতি আক্রমণ থেকে ফাঁকায় গোল করে জার্মানির কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেন সন হিয়ুং মিন।
বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ায় চাকরি যায় কোচ জোয়াকিম লো-র। নতুন কোচ হয়ে আসেন হান্সি ফ্লিক। কোচ বদল হলেও ভাগ্য বদল হল না জার্মানির। আবার এক এশীয় দলের কাছে হারতে হল তাদের। এবারও এশিয়ার দেওয়ালের ধাক্কায় ভেঙে গেল ফুটবলের জার্মান প্রাচীর।
জয়ের পর স্টেডিয়াম পরিস্কার করলো জাপানের সমর্থকরা
এবারের বিশ্বকাপেও জাপানের সমর্থকরা স্টেডিয়াম পরিস্কার করা অব্যাহত রেখেছেন। উদ্বোধনী ম্যাচ থেকে শুরু করে আজ জার্মানির বিপক্ষে ম্যাচে ঐতিহাসিক জয়ের পরও স্টেডিয়াম পরিস্কার করেই মাঠ ছেড়েছে জাপানের সমর্থকরা। ২০১৮ বিশ্বকাপের সময় স্টেডিয়ামের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করে সকলের নজর কেরেছিল জাপান। সেই বিশ্বকাপে ফেয়ার প্লের পুরস্কারও জিতেছিল জাপানের সমর্থকরা। জাপানের সমর্থকরা তাদের দায়িত্ববোধ থেকে স্টেডিয়ামে মানুষের ফেলে আসা উচ্ছিষ্ট ও আবর্জনা পরিষ্কার করে কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আসছে।
প্রত্যেক জাপানিজ সমর্থককে যারা স্টেডিয়ামে নানা রকম ব্যাগ, খাবার নিয়ে এসেছিল সেগুলোর উচ্ছিষ্ট পরিষ্কার করতে দেখে গেছে। ম্যাচ শেষে সবাই যখন চলে যাচ্ছিল তখন তারা ব্যস্ত ছিল স্টেডিয়ামের আনাচে কানাচে পড়ে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করতে।
আর্জেন্টিনার ক্যাম্পে ঢুকতেই দেওয়া হল না মারাদোনার জামাইকে
মেসিদের দলে এক সময় অন্যতম স্ট্রাইকার ছিলেন আর্জেন্টিনার প্রাক্তন স্ট্রাইকার। কিন্তু তাঁকে প্রাক্তন সতীর্থদের সঙ্গে দেখাই করতে দিলেন না আর্জেন্টিনার ফুটবল আধিকারিকরা। সৌদি আরবের বিরুদ্ধে হেরে যায় আর্জেন্টিনা।