‘এই অভ্যুত্থান চাই না’

আন্দোলন জোরদার হচ্ছে মিয়ানমারে চিকিৎসদের পর এবার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

| শনিবার , ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

‘এই সামরিক অভ্যুত্থান চাই না’, ‘সু চি মা জিন্দাবাদ’ স্লোগানে ছাত্র-শিক্ষকদের অংশগ্রহণে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন জোরদার হচ্ছে মিয়ানমারে। দেশটির সেনাবাহিনী গত সোমবার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নেত্রী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলের পরপরই প্রথম প্রতিবাদ এসেছিল চিকিৎসাকর্মীদের কাছ থেকে। এরপর থেকে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ক্রমেই বেড়েছে। একে একে আন্দোলনে যোগ দিয়েছে শিক্ষার্থীরাসহ বিভিন্ন যুবদল, সরকারি ও বেসরকারি খাতের বহু কর্মী। গতকাল শুক্রবার সর্বশেষ আন্দোলনে সামিল হয়েছে শিক্ষকরাও। কয়েকজন প্রভাষক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করা কিংবা সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
লাল রিবন পরে, প্রতিবাদের প্রতীক হাতে নিয়ে শিক্ষক, প্রভাষকরা ইয়াঙ্গুন ইউনিভার্সিটি অব এডুকেশন ক্যাম্পাস ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছেন। প্রতীকীভাবে তারা প্রদর্শন করেন তিন আঙুলের স্যালুট। প্রতিবাদী কণ্ঠে তাদের একজন বলেন, আমদের নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে বেআইনিভাবে ক্ষমতা দখল করে নেওয়া এই সামরিক অভ্যুত্থান আমরা চাই না। আমরা আর তাদের সঙ্গে কাজ করব না। আমরা চাই এই সামরিক অভ্যুত্থান ব্যর্থ হোক। গতকাল শুক্রবার বিকালে ইয়াঙ্গুনের ড্যাগন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেও জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছেন শত শত শিক্ষক-শিক্ষার্থী। লাল রিবন পরে তিন আঙুল স্যালুট প্রদর্শন ছাড়াও কারান্তরীণ নেত্রী সু চির সমর্থনে ‘সু চি মা জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেন তারা। আমরা আমাদের প্রজন্মকে এই ধরনের সামরিক স্বৈরাচারের যাঁতাকলে ভুগতে দেব না, বলেন এক বিক্ষোভকারী।
মিয়ানমারজুড়ে বহু জায়গাতেই বিক্ষোভ হয়েছে। ইয়াঙ্গুনসহ কয়েকটি নগরীর অধিবাসীরা তাদের বাড়িতে থেকে রাতেও বিক্ষোভ করেছে। মঙ্গলবার রাতে ইয়াঙ্গনে প্রথম বড় ধরনের প্রতিবাদ হয়। বিক্ষোভকারীরা ‘অমঙ্গল দূর হবে’ শ্লোগান দিয়ে রীতি অনুযায়ী হাঁড়ি-পাতিল বাজিয়ে বিক্ষোভ করেন। স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, শিক্ষক এবং সরকারি চাকরিজীবীদের অনেকে হয় ছোটখাট বিক্ষোভ আয়োজন করছেন, নয়ত ধর্মঘটে নামছেন। আবার অনেকে প্রতিবাদের প্রতীকী লাল রিবন পরে কাজ করে যাচ্ছেন।শুক্রবার কয়েক ডজন অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভকারী দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় দাওয়েই শহরে পদযাত্রা করেছে। মোটরবাইকে করে তাদের সঙ্গে সামিল হয়েছে আরও বহু মানুষ। আমরা আজ এখানে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই শুরুর ঘোষণা দিচ্ছি। আমরা জনগণকে আমাদের সঙ্গে যোগ দেওয়া এবং আমাদের পাশে থাকার ডাক দিচ্ছি, বলেন এক বিক্ষোভকারী। মিয়ানমারে ১৯৬২ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে সেনাবাহিনী প্রায় ৫০ বছর ধরে সরাসরি দেশ শাসন করেছে এবং বছরের পর বছর ধরে গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলন কঠোরহাতে দমন করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২১ ফেব্রুয়ারির স্বীকৃতি চেয়ে জাস্টিন ট্রুডোকে এমপি ডলির চিঠি
পরবর্তী নিবন্ধচন্দনাইশ উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়িতে দুর্বৃত্তের হানা