উন্নয়ন সংকট নিরসনে অনন্য শেখ হাসিনা

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী | শনিবার , ৬ মে, ২০২৩ at ৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ

অতিসম্প্রতি বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে অবলোকন করেছেন; বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের উন্নয়ন সম্পর্কের মাঙ্গলিক সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন। নানামুখী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কথিত ব্যক্তিসংস্থার কদর্য চক্রান্তষড়যন্ত্রকে সংহার করে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা দৃঢ়চেতা ও নির্ভীক সাহসিকতায় দেশপ্রেমে অত্যুজ্জ্বল ব্রতকে ধারণ করে ঘোষণা দিয়েছিলেন ‘আমরাও পারি’। ধারাবাহিকতায় উত্থাপিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনি লড়াইয়ে বাংলাদেশকে অপরাজিত রাখার সংকল্পকে দৃশ্যমান করেছেন। এটি প্রামাণিত সত্য যে; কোন অশুভ শক্তির প্রতারণামূলক মিথ্যাচারের ভিত্তিতে প্রতিহিংসাপরায়ণ অভিযোগ মানসিকমানবিক যন্ত্রণাঅপরিমেয় অনর্থক হয়রানির উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সকল অপচেষ্টা দিনশেষে মুথ থুবড়ে পড়ে। এতে শিক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে; অনৈতিক আর্থিক লেনদেনতদবিরলবিং অপসংস্কৃতির মোড়কে প্রভাবিত যেকোন বিষয়ে ব্যক্তি বা রাষ্ট্রের সম্মানহানির উদ্যোগ সময়ের ব্যবধানে আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। আইনের শাসনের মুখ্য অনুষঙ্গ হচ্ছে, পবিত্র সংবিধান সম্মত বা উচ্চশিক্ষাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত আইনের যথার্থ যাচাইবাছাই এর মাধ্যমে সত্য অনুসন্ধান। ন্যায় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে গিয়ে অন্যায়ভাবে অহেতুক নিবর্তণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ শুধু ইহকালীন নয়; মহান স্রষ্টার কাছেও ঘৃণ্যসীমাহীন অপরাধ সমতুল্য।

এটি সর্বজনবিদিত যে, মুক্তির মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের অবদান অনস্বীকার্য। গত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাংক হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ উন্নয়ন সহযোগী। মূলত বিশ্বব্যাংক শিক্ষাস্বাস্থ্যজন নিরাপত্তাপরিবেশ সুরক্ষাকর্মসংস্থানরাস্তাঘাটসেতুভবনবড় অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশকে অর্থ প্রদান করে আসছে। ১৯৭২ সালে আগস্ট মাসে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সদস্য হওয়ার পর নভেম্বর মাসে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পরিবহনযোগাযোগ, কৃষিশিল্প খাতের পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং নির্মাণ ও বিদ্যুৎখাতে সহায়তার জন্য প্রথম ৫০ মিলিয়ন ডলারের জরুরি পুনরুদ্ধার ঋণ ছাড় করে। যদিও ১৯৭১ সালের পূর্বে নেওয়া বৈদেশিক ঋণের বোঝা ভাগাভাগিসমাধানসহ বেশ কিছু কারণে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশ পুনর্গঠনে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। দরিদ্র দেশের জন্য গঠিত বিশ্বব্যাংকের তহবিল ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) বাংলাদেশকে অনুদান, সুদবিহীন ঋণ ও নমনীয় ঋণ হিসেবে ৪০বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বর্তমানে সংস্থাটির ৫৬টি চলমান প্রকল্পে প্রায় ১৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ আইডিএ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।

১ মে ২০২৩ ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে আয়োজিত যুগান্তকারী বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের অংশীদারত্বের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নশীল দেশ হয়ে ওঠার পথে বাংলাদেশের মসৃণ উত্তরণ, পরবর্তীতে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং এর ডেল্টা প্ল্যান২১০০ বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রদত্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশের যখন জন্ম হয় তখন অনেক উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ এ দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান ছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে আশা সঞ্চার করেছেন, তা সঙ্গে নিয়ে আমাদের জনগণ বিশ্বকে দেখিয়েছে যে, দৃঢ় সংকল্পের কঠিনতম চ্যালেঞ্জও উত্তরণ সম্ভব। বাংলাদেশ অর্থনীতিকে রূপান্তর এবং অধিকতর অভিঘাত সহনশীল করেছে যার নিদর্শন কোভিড১৯ অতিমারির সময়ে দেখা গেছে। এ দেশের যাত্রা সবসময় সহজ ছিল না, কিন্তু আমরা কখনো সাহস হারায়নি। গত ৫০ বছরে বিশ্বব্যাংক অবিচল উন্নয়ন সহযোগী হয়ে আমাদের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করেছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনে আমরা বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে একত্রে কাজ করার আশা করছি।’

উল্লেখ্য অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের উন্নয়ন সাফল্য থেকে অনেক দেশ শিক্ষা নিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস। ২ মে ২০২৩ গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘উদ্ভাবনী পদ্ধতির মাধ্যমে রেকর্ড সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য হ্রাস, নারীর ক্ষমতায়ন, ব্যাপক বিদ্যুতায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য দেশটি অন্যদের থেকে আলাদা। বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে আমরা দেশটির আয় বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য হ্রাসের অগ্রগতিকে স্বাগত জানাই। এদেশের ব্যবসা পরিবেশের সংস্কার, করের আওতা বাড়ানো, আর্থিক খাত শক্তিশালী করা, কর্মংসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক ও জলবায়ু অভিঘাতের প্রতি সহনশীলতা বাড়াতে আমার সহায়তা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এই অংশীদারত্ব লাখ লাখ বাংলাদেশিকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করেছে এবং এ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে সহায়তা করেছে। আঞ্চলিক যোগাযোগ, বন্যাদুর্যোগ মোকাবিলা, সবুজ, অভিঘাত সহনশীল ও অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়ন, পরিবেশ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ সেক্টরে কম দূষণকারী এবং আরও জলবায়ু সহনশীল হতে সাহায্য করতে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে মোট ২২৫ কোটি ডলার সহায়তা করেছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দরিদ্রতম দেশ থেকে ২০১৫ সালে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়। দেশটি এখন দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিগুলোর অন্যতম।

বিশ্বব্যাংকবাংলাদেশ অংশীদারিত্বের ৫০ বছরের প্রতিফলন’ শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ভাষণদানকালে দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন অপরিহার্যতা বিবেচনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘চলমান বিশ্বব্যাপী একাধিক সংকট যথা মহামারী, সশস্ত্র সংঘাত এবং জলবায়ু পরিবর্তন বেশিরভাগ উন্নয়নশীল অর্থনীতিকে মারাত্মাক চাপের মধ্যে ফেলেছে। তারপরও কিছু উন্নয়ন অংশীদার তাদের মূল জায়গা থেকে সরে এসে ঋণের খরচ এবং সুদের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি বিশ্বব্যাংক এবং অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদের কাছে কার্যকর বিকল্প খুঁজে বের করার আহ্বান জানাচ্ছি যাতে আমাদের মতো অর্থনীতির উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলো আরও ভালভাবে মোকাবিলা করতে পারে।’ তিনি বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদের কাছ থেকে এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য সহজে উদ্ভাবনী অর্থায়নের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের সম্পৃক্ততায় জলবায়ু পরিবর্তন এবং অভিযোজনের মধ্যে অর্থায়নের সমান বন্টনের গুরুত্বের উপর জোর দেন। এছাড়াও ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে অবকাঠামো ও লজিস্টিকসে বাংলাদেশে অব্যাহত বিনিয়োগে বিশ্বব্যাংকের নিয়োজিত থাকার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেন।

৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ গণমাধ্যমে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০২১ অর্থবছর পর্যন্ত বাংলাদেশে বৈদেশিক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ২২৮ কোটি ৮ লাখ ডলার। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হিসাবে এই ঋণের পরিমাণ ১৭ শতাংশ। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ’র মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ৪৯০ কোটি ডলার যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আট শতাংশের বেশি। দ্বিপক্ষীয় বা বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৬৭ কোটি ডলার। বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে। সংস্থাটির কাছ থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৮১৬ কোটি ডলার। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৩২৮ কোটি ডলার। এরপর আছে যথাক্রমে জাপান, রাশিয়া ও চীন। জাপানের কাছ থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে ৯২৩ কোটি টাকা। রাশিয়া ও চীনের ঋণের পরিমাণ যথাক্রমে ৫০৯ ও ৪৭৬ কোটি ডলার এবং আইএমএফের কাছে ঋণের পরিমাণ ৯৮ কোটি ডলার। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাংলাদেশ ছোটবড় আকার মিলিয়ে আইএমএফ থেকে মোট ১০ বার ঋণ নিয়েছে। প্রথমবার নেয় ১৯৭৪ সালে। ১৯৮০৯০ সময়কালে নেওয়া হয় পাঁচবার। ১৯৯০ সালে নেওয়া ঋণের বিপরীতে আইএমএফ’র শর্ত ছিল মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) চালু করা। ২০০৩ সালে নেওয়া ঋণের শর্তগুলোর অন্যতম ছিল রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকসান কমিয়ে আনা। পরবর্তীতে নতুন ভ্যাট আইন প্রণয়ন করার শর্তে ২০১২ সালে সাত কিস্তিতে ১০০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ।

সংস্থাটি থেকে নতুন করে ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ নিচ্ছে বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে নতুন ঋণের প্রথম কিস্তি ছাড়ও করা হয়েছে। আইএমএফর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে অনুমোদিত মোট ৪৫০ কোটি ডলারের মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ), বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) ও রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) এই তিন ধরনের ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ। বৈদেশিক বাণিজ্যের ভারসাম্যহীনতায় ভোগা বা রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি করা দেশগুলোকে প্রদত্ত ইসিএফের অধীনে ঋণ পাওয়া যাবে ১০০ কোটি ডলারের বেশি যার জন্য কোনো সুদ দিতে হবে না। অভ্যন্তরীণ কাঠামোগত দুর্বলতার কারণে দীর্ঘ সময় ধরে আমদানি ব্যয় ও রপ্তানি আয়ের মধ্যে সামঞ্জস্যহীনতায় থাকা দেশসমূহে বিতরণকৃত ইএসএফ এর আওতায় পাবে ২১৫ কোটি ডলার এবং জলবায়ু পরিবর্তনকরোনাভাইরাসের মতো দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কষ্টসহিষ্ণু নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশকে দেওয়া আরএসএফ থেকে পাবে ১৩০ কোটি ডলার। তিন পর্যায়ের গড় ঋণের সুদ হার হবে ২ দশমিক ৩৫ শতাংশের মতো। প্রথম এশীয় দেশ হিসেবে আরএসএফ তহবিল থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্ত ঋণ পরিশোধে ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ সময় পাবে ২০ বছর এবং ইসিএফ ও ইএফএফের ঋণ আলাদা আলাদা গ্রেস পিরিয়ডে পরিশোধ করতে পারবে ১০ বছরে। আইএমএফ’র বিশ্লেষণ অনুযায়ী বাংলাদেশের ঋণ এখনো ঝুঁকিমুক্ত সীমার মধ্যে রয়েছে।

রাশিয়াইউক্রেন যুদ্ধ, চলমান বৈশ্বিক লন্ডভন্ড দৃশ্যপটে জ্বালানিখাদ্যশস্যদ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিপানি সংকটসহ আর্থসামাজিক চরম অস্থিরতার মধ্যেও বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। বৈদেশিক রিজার্ভ সংশ্লিষ্ট আমদানিরপ্তানি এবং অন্যান্য ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও সংকট নিরসনউত্তরণে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের ঐক্যবদ্ধতায় বাংলাদেশ অপরাজিত দৃষ্টান্তরূপে সুপ্রতিষ্ঠিত। দৃশ্যমান অদম্য উন্নয়ন অগ্রগতির অর্জনসমূহের কারণে কতিপয় দেশবিধ্বংসী ব্যক্তি বা দলের গাত্রদাহ হলেও বিশ্বব্যাংকসহ সকল উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্রসংস্থার পক্ষ থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নকে বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের জন্য অনুকরণীয় হিসেবে বিবেচ্য দাবি করছেন। মোদ্দাকথা লালসবুজ পতাকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনসার্বভৌম বাংলাদেশ সময়ের আবর্তনে নিরন্তর জয়মুকুটে বর্ণিল পালক শুধু গেঁথেই চলেছে। অসত্যঅন্যায়জঙ্গিবাদসাম্প্রদায়িকতাঅমানবিকতার মত অন্ধকারের দুর্ভেদ্য প্রাচীরসমূহ গুড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশ মহান স্রষ্টার অপার কৃপায় এগিয়ে যাবেই। নিঃসঙ্কোচে জনগণের একজন হিসেবে গভীর আস্থায় আমাদের পথচলা কন্ঠকমুক্ত থাকুকএটুকুই নিবিড় প্রত্যাশা।

লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

পূর্ববর্তী নিবন্ধহল্যান্ড থেকে
পরবর্তী নিবন্ধরাফি স্মৃতি জুনিয়র ক্রিকেট লিগের দুটি সেমিফাইনাল আজ